আজ, সোমবার দেশে পঞ্চম দফার ভোটগ্রহণ। তারপরে বাকি থাকবে আরও দু’দফা। কিন্তু ‘ইন্ডিয়া’ জোটের তূণে আর কোনও মোক্ষম তির নেই বলেই বাংলায় এসে দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর ব্যাখ্যা, দিল্লির ঠান্ডা ঘরে বসে যাঁরা ভোট শতাংশের হিসেব করছেন, তাঁদের পক্ষে ভোটের হাওয়া বোঝা সম্ভব নয়।রবিবার পুরুলিয়া, বিষ্ণুপুর এবং খড়্গপুরে জনসভা করেন মোদী। পুরুলিয়ার প্রথম সভা থেকে তিনি বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোটকে খোঁচা দিয়ে বলেন, ‘আমি যখন পুরুলিয়ায় হেলিকপ্টার থেকে নামলাম, চারদিকে শুধু মানুষ আর মানুষ। এটা দিল্লিতে এয়ার কন্ডিশনড ঘরে বসে যাঁরা হিসেব করছেন, এক শতাংশ এদিকে গেলে কী হবে, এক শতাংশ ভোট ওদিকে গেলে কী হবে—তাঁরা এ দৃশ্য দেখলে বুঝতেন পারতেন, যে অকারণে সময় নষ্ট করছেন।’ কটাক্ষের সুরে তাঁর সংযোজন, ‘ইন্ডি জোটের কাছে যতগুলি তির ছিল, সব তারা খরচ করে ফেলেছে। মানুষের সুরক্ষা কবচ আছে মোদীর। ইন্ডির তির কিছুই করতে পারেনি।’
মোদী যেমন তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রশ্নে একশো শতাংশ নিশ্চিত, তেমনই বিরোধীরাও ভরপুর আত্মবিশ্বাসী—এবার আর কোনওভাবেই ক্ষমতাই আসছে না বিজেপি, কেন্দ্রে সরকার গড়বে ‘ইন্ডিয়া’ই। কেশপুরে ভোট-প্রচারে গিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও এদিন জোর গলায় দাবি করেন, ‘কেন্দ্রে ইন্ডিয়ার সরকার তৈরি হচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তাঁর পাল্টা খোঁচা, ‘যে দিন থেকে বিরোধী জোটের নাম ইন্ডিয়া হয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী আর দেশের নাম ইন্ডিয়া বলেন না। উনি দেশের নাম পাল্টে দিতে চাইছেন! উনি কখনও স্টেশনের নাম পাল্টেছেন, কখনও শহরের নাম পাল্টেছেন, কখনও নোট পাল্টেছেন। এবার আপনারা লাইনে দাঁড়িয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী পাল্টাবেন!’
বিজেপি যে ক্ষমতায় ফিরছেই, সে বার্তা এদিন বাংলার তিনটি জনসভা থেকে বারবার দিয়েছেন মোদী। তাঁর দাবিকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে ৪ জুন রেজ়াল্ট প্রকাশের পর তৃণমূলের দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। এদিন পুরুলিয়ার সভা থেকে মোদী বলেন, ‘এখানে তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের কাছ থেকে টাকার পাহাড় উদ্ধার হচ্ছে। এরা নিজেরা দুর্নীতি করছে, আর গালাগাল মোদীকে দিচ্ছে! ২০১৯-এ আমি বলেছিলাম, দুর্নীতিগ্রস্তদের এক এক করে ধরব। কথা রেখেছি।’
এরপরই দুর্নীতি ঠেকাতে তাঁর গ্যারান্টির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতিগ্রস্তদের জেলের বাইরে থাকতে দেবো না। আমি আপনাদের গ্যারান্টি দিচ্ছি, ৪ জুন নতুন সরকার তৈরি হওয়ার পরই দুর্নীতির বিরুদ্ধে অ্যাকশন আরও তীব্র হবে।’