জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কেন মিচেল স্টার্কের (Mitchell Starc) জন্য় ২৪ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা খরচ করেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স (Kolkata Knight Riders)! নাইটদের জার্সিতে আইপিএলের শুরুর দিকে স্টার্ক ছিলেন একদমই নিস্তেজ! নামের ও দামের সুবিচার করতে না পারায়, সমালোচনার সুনামির মুখে পড়তে হয়েছিল। তবে যত দিন গিয়েছে স্টার্ক বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, বিশ্বের সেরা বোলারদের নাম উচ্চারিত হলে, তাঁর নামটিও একদম প্রথমের দিকেই রাখতে হবে।
মঙ্গল সন্ধ্য়ায় আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে যাবতীয় বিদ্রুপকারীদের মুখে ঝামা ঘষে দিলেন অজি বিশ্বকাপ জয়ী। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে কোয়ালিফায়ারে হাইভোল্টেজ ম্য়াচের শুরুতেই পাওয়ার-কাট করে দেন স্টার্ক ! আর স্টার্কের আগুনেই পুড়ে ছারখার হয়ে গেল কমলা সেনা। বুক ফুলিয়ে কেকেআর চলে গেল ফের ফাইনালে।
এদিন প্রথমে ব্য়াট করে সানরাইজার্স কোনওরকমে ১৫৯ রান অতি কষ্টে তুলতে সমর্থ হয়েছিল। হায়দরাবাদ ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই স্টার্কের বলে ক্লিন বোল্ড হয়ে যান তাঁর জাতীয় দলের সতীর্থ ও আইপিএল প্রতিপক্ষ ট্র্যাভিস হেড। হেড বলের কোনও দিশাই পাননি। চলতি মরসুমে হেডের ‘পার্টনার ইন ক্রাইম’ হিসেবে আগুনে পারফর্ম করেছেন অভিষেক শর্মা। ওপেনিংয়ে ভারত-অজি যুগলবন্দিই প্রতিপক্ষের বোলারদের প্রায় প্রতি ম্য়াচেই ক্লাব স্তরে নামিয়ে এনেছে। সেই অভিষেককে দ্বিতীয় ওভারে ফিরিয়ে দেন বৈভব অরোরা। ৪ বলে মাত্র তিন রান করে ফেরেন তিনি।
দুই ওপেনারকে দ্রুত ফিরিয়েই কেকেআর কাজের কাজটা শুধু করেনি। পঞ্চম ওভারে শেষ দুই বলে স্টার্ক তাঁর কামাল দেখান। ব্য়াক-টু-ব্য়াক নীতীশ কুমার রেড্ডি (৯) ও শাহবাজ আহমেদকে (০) ফিরিয়ে দেন ডাগআউটে। পাঁচ ওভারের মধ্য়ে মাত্র ৩৯ রান তুলতে গিয়ে চার উইকেট চলে যায় সানরাইজার্সের। তিনে নেমে রাহুল ত্রিপাঠী (৩৫ বলে ৫৫) যদি ফিফটি প্লাস ইনিংস খেলতে না পারতেন, তাহলে কাব্য়র কপালে চিন্তার ভাঁজ আরও চওড়া হত। এরপর ছয়ে ও সাতে নামা হেনরিখ ক্লাসেন (২১ বলে ৩৩) ও অধিনায়ক প্য়াট কামিন্সের (২৪ বলে ৩০) ব্য়াটে কিছুটা অক্সিজেন পায় সানরাইজার্স। এদিন বরুণ চক্রবর্তী দুই উইকেট নিয়েছেন। বৈভব, হর্ষিত রানা, সুনীল নারিন ও আন্দ্রে রাসেল পেয়েছেন এক উইকেট করে।
ইনিংস ব্রেকে স্টার্ক সম্প্রচারকারী চ্য়ানেলে বলেন, ‘দেখুন আমি জীবনে মোটামুটি ক্রিকেটটা খেলেছি। কিছু বড় ম্যাচ খেলারও সৌভাগ্য হয়েছে আমার। তাই দলের জন্য় এদিন ভালো শুরু করতে পেরে ভালোলাগে। পাওয়ারপ্লে-তে উইকেট নেওয়াটা দারুণ ছিল। এই মরসুমে হেড এবং অভিষেক অসাধারণ ফর্মে রয়েছে। ওরা তাড়াতাড়ি আউট হয়ে যাওয়ায় ভালোই হয়েছে। এখন মাঠে নিশ্চিত ভাবে শিশির আছে। ইনিংসের মাঝখানে শিশির পড়া শুরু হয়েছিল। পিচে কিন্তু বল অনেক বেশি স্কিড করছে।’
রান তাড়া করতে নেমে কেকেআরকে ভুগিয়েছে ওপেনার ফিল সল্টের অভাব। ১৩ ম্য়াচে ৪৩৫ রান করা ব্রিটিশ ব্য়াটার এই মরসুমে ছিলেন আগুনে ফর্মে। নারিনের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে কলকাতার জয়ের মঞ্চ গড়ে দিয়েছেন বলে বলে। কিন্তু ইংল্য়ান্ডের বাকি ক্রিকেটারদের মতোই সল্টকেও আইপিএল ফেলে ফিরতে হয়েছে দেশে। কারণ টি-২০ বিশ্বকাপের আগে জস বাটলাররা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চার ম্য়াচের টি-২০ সিরিজ খেলবে। জাতীয় কর্তব্য় পালন করতেই সল্ট এখন ইংল্য়ান্ডে।
অন্য়দিকে চলতি মরসুমে ১৪ ম্য়াচ রিজার্ভে ছিলেন আফগান ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ। সল্টের জন্য়ই তাঁর খেলা হয়নি। এবার প্রথম রহমানুল্লাহ নাইটদের জার্সিতে নামলেন সপ্তদশ আইপিএলে। গতবছর এই গুরবাজই ছিলেন ওপেনার। কেকেআরের হয়ে ১১ ম্য়াচে করেছিলেন ২২৭ রান। এদিন উইকেটকিপিং করার পর তিনি নারিনের সঙ্গে জুড়েছিলেন ওপেনিংয়ে। রহমানুল্লাহ ১৪ বলে মাত্র ২৩ রান করেই আউট হয়ে যান এদিন। তাঁর দেখাদেখি সুনীলও ১৬ বলে ২১ রান করে। ৭ ওভারের মধ্য়ে কেকেআর ৬৭ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলে। এরপর দুই আইয়ার- ভেঙ্কটেশ ও শ্রেয়স মিলে নাইটদের জয়ের মঞ্চটা গড়ে দেওয়ার কাজটা শুরু করেন।
(আরও বিশদে আসছে…)