Basmati Pulao Rice And Chicken,বিমান সংস্থার প্রাক্তন ইঞ্জিনিয়র, চাকরি হারিয়ে পোলাও-মাংস বিক্রি, ভাইরাল মধ্যমগ্রামের সন্দীপ – sandip dasgupta selling basmati pulao and chicken at madhyamgram become trending in social media


সৌমেন রায়চৌধুরী | এই সময় ডিজিটাল
কম খরচে পোলাও-মাংস বা পোলাও-আলুরদম। আর তাতেই ভাইরাল মধ্যমগ্রামের সন্দীপ দাসগুপ্ত। অনেকেই তাঁর ডেইলি কাস্টমার। এছাড়া ফুড ব্লগারদের আনাগোনাও লেগে রয়েছে। এখন তিনি ভাইরাল হলেও, এর নেপথ্যে রয়েছে এক কঠিন লড়াই ও হার না মানা মনোভাব। সেই কাহিনিই তুলে ধরলেন এই সময় ডিজিটালের প্রতিনিধি।

হঠাৎই চলে যায় চাকরি

সালটা ২০১৯, হঠাৎই বন্ধ হয়ে গেল নাম করা এক বিমান সংস্থা। তিনি সেই বেসরকারি সংস্থায় অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার (এয়ারক্র্যাফট মেইনটেন্যান্স টেকনিশিয়ন) ছিলেন। সংস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সকলের মতো তাঁর চাকরিও চলে যায় আচমকাই। তখন তিনি কলকাতায় কর্মরত ছিলেন। ২০১৩-২০১৪ সালে যখন চেন্নাইতে সন্দীপ দাশগুপ্তর পোস্টিং ছিল, তখন বাবার কঠিন মারণ রোগ বোনম্যারো ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। সেই খবর শোনার পরই কলকাতায় ট্রান্সফার নেন সন্দীপ। তবে বাবাকে বাঁচাতে পরেননি। বাবা চলে যাওয়ার পর মা-কেও আর বেশিদিন ধরে রাখতে পারেননি তিনি। বাবার শোকে মাও চলে যান না ফেরার দেশে। এরপরই কালবৈশাখীর মতো তাঁর জীবিনে আসে প্রবল ঝড়। বন্ধ হল বেসরকারি এই বিমান সংস্থা। রাতারাতি আকাশ ভেঙে পড়ল তাঁর মাথায়। অনেক চেষ্টার পর সৌদি আরবে মিলল এক চুক্তিভিত্তিক কাজ। পেটের দায়ে স্ত্রী সন্তান ছেড়ে সৌদিতেই কাজে যোগ দেন সৌদিতে। তবে বাড়িতে কিছু সমস্যার কারণে দেশে ফিরে আসেন।

৮ প্যাকেট দিয়ে শুরু

বাড়ি তো ফিরে এলেন, কিন্তু কী ভাবে সংসার চালাবেন, তা নিয়ে কিছুই মাথায় আসছিল না। দেখতে দেখতে চলে এল ২০২৩। তাঁর স্ত্রীর হাতে তৈরি ৮ প্যাকেট বাসন্তি পোলাও ঘরোয়া স্বাদের চিকেন নিয়ে এসে দাঁড়ালেন রাস্তায়। শুরু হল নতুন এক জীবন। আসতে আসতে প্যাকেট বাড়ল। পোলাওয়ের গামলার মাপও বড় হল। চিকেনের সঙ্গে এল মটন, আর নিরামিষ হিসেবে রাখা হল আলুর দম। বর্তমানে প্রতিদিন ১০ কেজির পোলাও বানাচ্ছেন তিনি। আর শুধু পসরা সাজিয়ে বসতে দেরি, চোখের নিমেষে কার্যত বিক্রি হয়ে যাচ্ছে সেই খাবার। সন্দীপ দাশগুপ্তর এই বাসন্তী পোলাও ও মাংসর যুগলবন্দী প্যাকেজ কম খরছে যেমন সকলের মন জয় করে নিয়েছ, তেমনই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আগে একা হাতেই সব করতেন। এখন একজন কর্মচারীও রেখেছেন। তবে এই ব্যবসায় সাফল্যর জন্য সবচেয়ে বেশি কৃতিত্ব নিজের স্ত্রীকেই দিচ্ছেন সন্দীপ। শুধু দৈনিক বিক্রিবাটাই নয়, অর্ডার নিয়ে সাপ্লাইও শুরু করেছেন।

সাফল্য এলেও সমস্যাও রয়েছে। রাস্তায় বড় ছাতার নীচে চলে বেচাকেনা। তাই আচমকা ঝড়বৃষ্টি চলে এলে তৈরি হয় ব্যাপক সমস্যা। তখন পসরা নিয়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিতে হয়। তাই এই মুহূর্তে নিজের একটা পাকাপাকি দোকানের চেষ্টায় রয়েছেন তিনি। যদিও তার জন্য দরকার অর্থের। তাই আরও বেশি করে অর্ডার পাওয়ার চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছেন সন্দীপ। তবে এখনও পর্যন্ত যতটুকু করতে পেরেছেন, তার জন্য এলাকার সমস্ত মানুষ ও ক্রেতাদের ধন্যবাদ জানাতেও ভোলেননি তিনি।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *