কলকাতা হাইকোর্টের ১ নম্বর এজলাসে এ দিন দুপুর সাড়ে ৩টেয় বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাশের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং অন্য বিচারপতিরা। সেখানে আইনজীবী সংগঠনগুলোর নেতৃত্ব ও সদস্যরাও ছিলেন। বিদায়ী ভাষণে দেশের বিচার ব্যবস্থায় কলকাতা হাইকোর্টের ভূমিকার প্রশংসা করেন বিচারপতি দাশ।
তিনি স্বীকার করেন, ওডিশা থেকে ২০২২-এর জুনে কলকাতা হাইকোর্টে কাজে যোগ দেওয়ার সময়ে তাঁর এই হাইকোর্ট সম্পর্কে ভীতি ছিল। কিন্তু এখানে আসার পর বিচারপতি দাশ দেখলেন, বাঘা বাঘা আইনজীবীরা তাঁদের লব্ধ জ্ঞানের শিক্ষা থেকেই বিচার ব্যবস্থার কাছে নতমস্তক হতে জানেন। কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী থেকে বিচারপতিদের ইংরেজি ভাষার জ্ঞান ও দক্ষতা যে তাঁকে মুগ্ধ করেছে, তা-ও গোপন করেননি তিনি।
বিদায়ী ভাষণের একেবারে শেষ দিকে বিচারপতি দাশ বলেন, ‘আমার বলতে কোনও দ্বিধা নেই যে, ছোটবেলা থেকে আমি একটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। সেই সংগঠন আমাকে সাহসী পদক্ষেপ করতে শিখিয়েছে। সেই সংগঠন সবাইকে সমান চোখে দেখতে, সহমর্মিতা এবং দেশাত্মবোধ শিখিয়েছে। সেই আরএসএস থেকে আমি ৩৭ বছর দূরত্ব রেখেছিলাম।’
বিচারপতি দাশের সংযোজন, ‘ওই সংগঠনকে আমি কিন্তু কখনও ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করিনি। এমন দৃষ্টিভঙ্গির বিরোধী ওই সংগঠন।’ বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাশের কথায়, ‘তৃণমূল, বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম কাউকে আমি আলাদা করে দেখিনি। এতদিন যাঁরা আমাকে দেখেছেন, তাঁরা অন্তত এটা বুঝেছেন। আমার বলতে কোনও বাধা নেই, আজ থেকে আমি মুক্ত। যদি ওই সংগঠন আমাকে তাদের কোনও কাজে ডাকে, তা হলে আমি আবার সেখানে যেতে চাই।’
এ দিন সন্ধ্যায় ফোনে আলাপচারিতাতেও সদ্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দাশ বলেন, ‘কোনও হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি থেকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হওয়ার যোগ্যতা আমার ছিল। তবে সেটা হয়নি। অবশ্য সে জন্য আমার কোনও আক্ষেপ নেই। কারণ, আরএসএস আমাকে নির্মোহ হয়ে বাঁচতে শিখিয়েছে। আমার কোনও অভিযোগ নেই। হতাশাও নেই।’