Migrant Workers: ভোটের আগে ফিরুন অনুরোধ পরিযায়ীদের – tmc bjp and cpim takes initiative to bring back migrant workers from other states before 6th phase of lok sabha elections


সমীর মণ্ডল ■ মেদিনীপুর
কাজের সূত্রে তাঁরা ভিনরাজ্যে থাকলেও ভোটের বাজারে তাঁদের দর বেড়েছে। বাড়বেই বা না কেন? পরিযায়ী শ্রমিকরাই যে জয়-পরাজয়ের বড় ফ্যাক্টর ঘাটালে। ২৫ মে ষষ্ঠ দফার ভোটের আগে ভিনরাজ্য থেকে তাঁদের ফেরাতে উঠেপড়ে লেগেছেন বিজেপি-তৃণমূল নেতৃত্ব। পিছিয়ে নেই সিপিএমও। ভিনরাজ্যে থাকা যুবকদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তৈরি করা হয়েছে বিশেষ টিম।তৃতীয় দফায় মালদা ও মুর্শিদাবাদের ভোটে পরিযায়ী শ্রমিকদের বেশিরভাগ ভোট দিতে আসেননি। ফলে, এ বার আর কোনও রিস্ক না নিয়ে প্রায় এক মাস আগে থেকে এলাকা ধরে তালিকা ও ফোন নম্বর তৈরি করে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তিন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা।

ঘাটাল লোকসভা এলাকার প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ কাজের সূত্রে ভিনরাজ্যে থাকেন। অধিকাংশই স্বর্ণশিল্পী। দিল্লি, মুম্বই, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু ও গুজরাটে থাকেন তাঁরা। কাঠমিস্ত্রি, রং মিস্ত্রি, মার্বেল মিস্ত্রি-সহ নানা পেশার লোকজনও থাকেন অন্য রাজ্যে। অনেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। অনেকে ফিরবেন ভোটের একদিন আগে। বাড়ি ফেরানোর জন্য ফোন করার সঙ্গে একপ্রস্থ দলের প্রচারও সেরে নেওয়ার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন নেতারা।

কাজ ছেড়ে ভোট দিতে আসায় অনেকের অনীহা থাকলেও ৮০ শতাংশ ভোটার গ্রামে ফিরবেন বলে মনে করছেন তাঁরা। ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা বিজেপির নেতা তপন দত্ত বলেন, ‘শুধু ঘাটাল মহকুমা এলাকার তিনটি ব্লক থেকেই প্রায় দু’লক্ষ মানুষ ভিনরাজ্যে থাকেন। অধিকাংশই স্বর্ণশিল্পের সঙ্গে যুক্ত। ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে এই পরিযায়ী শ্রমিক এবং তাঁদের পরিবারের ভোট একটা বড় ফ্যাক্টর। ইতিমধ্যেই আমরা এলাকা ভিত্তিক পরিযায়ী শ্রমিকদের তালিকা তৈরি করে যোগাযোগ করেছি। আলাদা কমিটি করে দায়িত্ব দেওয়া আছে। তাঁরা প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করছেন।’

দাসপুরের সাগরপুর এলাকার বাসিন্দা পেশায় স্বর্ণশিল্পী সুস্মিত সামন্ত ২০ বছর ধরে থাকেন দিল্লির করলবাগে। তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর এপ্রিল-মে মাস নাগাদ একবার গ্রামের বাড়িতে আসি। এ বার ভোট আছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা ভোট দিতে আসার জন্য ফোন করেছিলেন। তাই দু’দিন আগে বাড়ি ফিরেছি। ভোটও দেওয়া হবে। বাড়িতে ঘোরাও হবে।’
ভোটেও ঘরে ফেরেননি পরিযায়ীরা, ক্ষোভ পরিবারে
কী ভাবে ভিনরাজ্যে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন? খোলসা করতে চাননি ঘাটালের সিপিএম নেতা সমর মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘এটা পার্টির নিজস্ব ব্যাপার। সংবাদ মাধ্যমের কাছে প্রকাশ করার বিষয় নয়। করোনার সময়ে বিভিন্ন রাজ্যে থাকা আমাদের কমরেডরা পরিযায়ীদের কী ভাবে সাহায্য করেছেন, তা তাঁরা জানেন। ফলে নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকেই আমাদের পক্ষে এবার তাঁরা ভোট দেবেন।’

দাসপুরের গোপীগঞ্জের রবীন্দ্রনাথ জানাও ভোট দিতে চলে এসেছেন তামিলনাড়ু থেকে। রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘নেতাদের ফোন পেয়ে চলে এলাম। একটা ভোটের অনেক মূল্য।’ ঘাটালের রথিপুরের প্রসেনজিৎ মণ্ডল স্বর্ণশিল্পী। থাকেন নেপালে। পরিচিত নেতারা তাঁকে ফোন করলেও এবার আর ভোট দিতে আসবেন না। প্রসেনজিৎ বলেন, ‘কাজের প্রচুর চাপ। ভোট দিতে গেলে দশ-বারো দিন নষ্ট হবে।’

ঘাটালের তৃণমূল নেতা দিলীপ মাজি বলেন, ‘এই মহকুমার বহু মানুষ কাজের সুবাদে বিভিন্ন রাজ্যে থাকেন। রাজ্য সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য কী কী সুযোগ-সুবিধা চালু করেছে তা তাঁদের বোঝানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে দাসপুরে ‘গোল্ড হাব’ গড়ে উঠছে। এতে উপকৃত হবেন স্বর্ণশিল্পে যুক্ত লোকজন। তাঁদের আর বাইরে যেতে হবে না।’ বিজেপি নেতা তপন দত্ত বলেন, ‘আমাদের এলাকার যুবকরা বিজেপি শাসিত অনেক রাজ্যে কাজ করেন। তাঁরা নিজেদের চোখে উন্নয়নের সুফল দেখেছেন। ফলে আমাদেরই ভোট দেবেন।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *