লেখা ছিল ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান, আঁকা ছিল হনুমানের ছবিও। ওই অবস্থাতেই ভোট হয়েছে সেখানে। সে সব নিয়ে নির্বাচন কমিশন কেন মাথা ঘামায়নি, সে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। যদিও জোড়াফুল শিবিরকে নিশানা করার অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বা ইসিআই, কোনও তরফেই স্বীকার করা হয়নি।
আসলে দিন দুয়েক আগে কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে একটি লম্বা ব্যানার লাগায় টিএমসিপি। সেখানে মমতা ও অভিষেকের ছবি ছিল। ছিল তৃণমূলের প্রতীকও। নীচে লেখা – ‘দাদার গর্জন’। প্রচারক সংগঠনের (টিএমসিপি সিইউ ইউনিট) নেতা রনি ঘোষের দাবি, ‘মঙ্গলবার ব্যানারটি দেখে নীচে নেমে আসেন ভিসি। বলেন, ওটা সরিয়ে ফেলতে হবে।
আমরা বলি, তা হলে বাকিদেরও পোস্টার ব্যানার সরাতে হবে! কিন্তু তিনি কর্ণপাত করেননি।’ এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সরিয়ে ফেলা হয় ওই ব্যানার। বুধবার নির্বাচন কমিশনও বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিদর্শনে যায়। টিএমসিপি-র তরফে কমিশনকে ইমেলে অভিযোগ জানিয়ে বলা হয়েছে – ক্যাম্পাস থেকে বেছে বেছে শুধু তাদের ব্যানার-পোস্টারই সরানো হয়েছে। বাকি দলের পোস্টারে হাত পড়েনি।
রাজ্যপাল নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত ভিসি শান্তা দত্ত পাল্টা বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আমি ভোট প্রচারে ব্যবহার করতে দিতে পারি না। এটা পড়াশোনার জায়গা। কেউ যদি আমাকে অন্য সংগঠনের এ ধরনের ব্যানার-পোস্টার দেখাতে পারে, তা হলে সেটাও সরানো হবে। এখানে পোলিং বুথ হয়। কমিশনের আধিকারিকরাও ক্যাম্পাসে এসে এ নিয়ে আপত্তি করেছেন।’
রনির পাল্টা বক্তব্য, ‘ক্যাম্পাসে পোস্টার মেরেছে এসএফআই-ও। সেটা ভিসি দেখতে পাননি! আসলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি রাজনৈতিক বিরোধিতা থেকেই এই কাজ করেছেন কর্তৃপক্ষ।’ ভিসি জানাচ্ছেন, তাঁর নির্দেশেই রেজিস্ট্রারের তরফে ব্যানার খোলা হয়। আর এসএফআই-নেতা মাল্যবান গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘পোস্টারে আমরা লিখেছি, ক্যাম্পাসের সব ভোট দিনবদলের পক্ষে হোক। এতে কোনও নির্বাচনী প্রতীক বা নেতার ছবি ব্যবহার করা হয়নি।’
এই পরিস্থিতিতে শিক্ষামহলেরও একাংশ আইআইইএসটি-র প্রসঙ্গ তুলছে। হাওড়া কেন্দ্রের দু’টি পোলিং বুথ হয় সেখানে। ওই ক্যাম্পাসে গেরুয়া ব্রিগেডের দাপাদাপি নিয়ে কমিশন কেন কিছু করল না, টিএমসিপি-র বাইরেও কেউ কেউ সে প্রশ্ন তুলছেন। যদিও কমিশন জানিয়েছে, এ নিয়ে অভিযোগ মিললে খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত হবে। শিবপুরের ক্ষেত্রে এমন কোনও অভিযোগ তারা পায়নি। বুথের ২০০ মিটারের মধ্যে রাজনৈতিক দলের পোস্টার-ব্যানার যাতে না থাকে, সে ব্যাপারে কমিশন ও প্রশাসন নজর রাখছে।