KMC: মৃতদেহের সঙ্গে চুল্লিতে আর নয় কম্বল-বালিশ,দূষণ ঠেকাতে সিদ্ধান্ত পুরসভার – kmc introduce new guideline for cremation


বাঁশ-বাখারির সঙ্গে লেপ, তোষক, বালিশ, কম্বলের মতো জিনিসও চুল্লিতে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে মৃতদেহের সঙ্গে। শহরের অনেকে শ্মশানেই এই ঘটনা নজরে এসেছে প্রশাসনের। এর ফলে বাতাসে বাড়ছে দূষণের মাত্রা। শ্মশান-সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যেও প্রভাব পড়ছে। অনেকে এ নিয়ে অভিযোগও জানিয়েছিলেন। তা ছাড়া মৃতদেহের সঙ্গে নানা সামগ্রী ঢোকার ফলে মাঝেমধ্যে খারাপ হয়ে যাচ্ছে চুল্লি। এমন ঘটনা বন্ধে নির্দেশিকা জারি করলেন কলকাতার পুর-কমিশনার ধবল জৈন।ওই নির্দেশিকায় শহরের প্রতিটি শ্মশানঘাটের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের বলা হয়েছে, মৃতদেহের সঙ্গে কোনও ভাবেই কাঠ বা বাঁশের কাঠামো চুল্লিতে ঢোকানো যাবে না। লেপ, তোষক-সহ মোটা কাপড়ও চুল্লিতে ঢোকানো আটকাতে হবে। মৃতদেহ শ্মশানে ঢোকার পর যাবতীয় জিনিস যাতে পৃথক করা হয়, সে দিকে নজর রাখতে হবে শশ্মানের সাব-রেজিস্টারকে। পরনের পোশাক ছাড়া বড়জোর গায়ের একটা পাতলা চাদর ঢোকানো যেতে পারে। এর বেশি কিছু চুল্লিতে ঢোকানো কঠোর ভাবে বন্ধ করতে হবে। লেপ, তোষক, বালিশ, কম্বল আলাদা ভাবেও পোড়ানো যাবে না শ্মশান-চত্বরে। নয়া নির্দেশ মানা হচ্ছে কিনা, তার উপর কড়া নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের।

তবে শুধু বৈদ্যুতিক চুল্লির ক্ষেত্রে এই নিয়ম জারি করা হলে বাতাস দূষণমুক্ত করা সম্ভব নয় বলেই মনে করেন পরিবেশবিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘এখনও অনেকেই বৈদ্যুতিক চুল্লিতে দেহ সৎকার করেন না। কাঠের চুল্লি ব্যবহার করেন। কাঠের চুল্লিতে মৃতদেহ দাহ করার ফলে বাতাসে বিপুল পরিমাণ কার্বন মনোক্সাইড-সহ দূষিত গ্যাস মেশে।’ এ কারণে শ্মশান লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের ফুসফুসের সমস্যা, হাঁপানির সমস্যা বাড়ে বলে জানাচ্ছেন ওই পরিবেশবিজ্ঞানী।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞানের অধ্যাপক তড়িৎ রায়চৌধুরীর বক্তব্য, ‘বাতাসে যে দূষণ-কণা থাকে তার মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিকর যেগুলির ব্যাস আড়াই মাইক্রন বা তারও কম। এদের বলা হয় পার্টিকুলেট ম্যাটার বা ( পিএম ২.৫)। বালিশ, তোষক চুল্লিতে পুড়ে এই পিএম ২.৫ তৈরি হচ্ছে। ফলে এ সব পোড়ানো আটকানো গেলে পরিবেশের পক্ষে মঙ্গল।’

Siriti Burning Ghat : সিরিটি শ্মশানে গঙ্গাজল রাখার ব্যবস্থা পুরসভার
পুরসভার কর্তাদের বক্তব্য, ধর্মীয় ভাবাবেগের কারণে অনেকেই প্রিয়জনকে বৈদ্যুতিক চুল্লিত ঢোকাতে চান না। কাঠেই পোড়াতে চান। ফলে সেটা বন্ধ করাও সম্ভব হচ্ছে না। তবে আগের তুলনায় কাঠে দাহের প্রবণতা কমেছে। বৈদ্যুতিক চুল্লির সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। কেন কাঠের চুল্লিতে পোড়ানো ক্ষতিকর–তা নিয়ে প্রচারও চলছে। ফলে আগামী দিনে কাঠের চুল্লিতে দাহ করার প্রবণতা আর সে ভাবে থাকবে না বলেই আশাবাদী পুরকর্তারা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *