এই ইডি অভিযানের পিছনে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইন্ধন ছিল বলেও অভিযোগ করেছিলেন তাপস। যদিও মমতার সাফ কথা, ‘একদিন ইডি গিয়েছে, এত ভয় পেয়ে গেল যে সঙ্গে সঙ্গে বিজেপিতে চলে গেল? এক বছর আগে থেকেই যোগাযোগ ছিল, এই খবর আমাদের কাছে আছে। সম্পর্কও ছিল। বিজেপি এভাবে ইডি, সিবিআই, ইনকাম ট্যাক্সের ভয় দেখিয়ে দলে নেয়। আমাদের অনেক নেতা আছে। তাই এমন নেতার দরকার নেই।’
১৯৯৮ সালে তৃণমূল তৈরি হওয়ার পর তাপস দ্রুত কংগ্রেস ছেড়ে জোড়াফুলে যোগ দিলেও অতীতে কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ সমীকরণে তিনি প্রয়াত সোমেন মিত্রর ঘনিষ্ঠ নেতা হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। তাই তাপস সেই অর্থে ‘মমতার শিবিরে’ ছিলেন না বলে তৃণমূল নেতাদের দাবি। মমতা নিজেও এ দিন বলেন, ‘ছাত্র-যুব রাজনীতি কখনও ওঁর সঙ্গে করিনি। আমি অশোক দেবের সঙ্গে করেছি। অতীন (ঘোষ), পরেশ (পাল), ববি (ফিরহাদ হাকিম) ছিল। কিন্তু এঁদের (তাপস) সঙ্গে করিনি। কংগ্রেসে এঁদের আলাদা গ্রুপ ছিল। সোমেন মিত্রর গ্রুপে ছিল। আমাদের সঙ্গে কোনওদিন ছিল না।’
তাপস বরাহনগর থেকে একাধিকবার জয়ী হলেও জনতা ব্যক্তি তাপস নয়, জোড়াফুল প্রতীকে দাঁড়ানো তৃণমূল প্রার্থীকেই ভোট দিয়েছে বলে মনে করছেন মমতা। যদিও মমতার আক্রমণের মুখে তাপস বলেন, ‘আগামী রবিবার বউবাজারের ওই জায়গায় সভা করে আমি ওঁর সব কথার উত্তর দেবো। ওঁর প্রতিটি অভিযোগেরও জবাব দেবো।’
বউবাজারে মমতার সভায় সুদীপ ছাড়াও ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র, পরেশ পালরা ছিলেন। এঁদের অনেকেই ইডি-সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সির তলবের মুখে পড়েছেন। কিন্তু তাঁরা দল বদল করেননি। তাপসের নাম না-করে মমতার প্রশ্ন, ‘কেন পালিয়ে গেলেন? আমাকেও তো বিজেপির লোকেরা প্রতিদিন ধমকায়, চমকায়। আমি তো পালিয়ে যাইনি। আমার পরিবারকে কম হেনস্থা করেনি। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই দেড় বছর জেলে ছিলেন। কিন্তু উনি তো দল ছেড়ে যাননি। মদন মিত্রকেও জেলে ভরে দিয়েছিল। আমাদের অনেক নেতাকে এখনও জেলে ভরে রেখেছে।’
তাপস যে ভাবে সুদীপকে বিভিন্ন সময়ে আক্রমণ করেছেন, তা যে তিনি সমর্থন করতেন না, সেটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা। তৃণমূলনেত্রী এ দিন সুদীপের উদ্দেশে বলেন, ‘কেন আপনি চিন্তা করছেন? কিছু লোক আছে, কেউ তো কিছু বলবে, বলে যাক, যার যা ইচ্ছা বলে যাক, আপনার যা ইচ্ছা আপনি সেটা করে যান।’