পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমে তারাপীঠ মন্দির জগৎ বিখ্যাত। এটি তন্ত্র সাধনার প্রাচীন পীঠস্থান হিসাবে স্বীকৃত। মন্দিরের পাশের শ্মশান বহু তন্ত্র সাধনার পীঠ এবং বহু অঘোরীদের ঘর। সাধক বামাক্ষ্যাপার সময় থেকে এই শ্মশান তান্ত্রিক অভ্যাস এবং সাধনার ক্ষেত্রে। তখন থেকেই অঘোরী সাধুরা এখানে আসেন।
তারাপীঠের ওই অঘোরী সাধুর নাম সমীরনাথ অঘোরী। তাঁর পূর্বাশ্রম কলকাতার শিয়ালদায়। চল্লিশের কাছাকাছি তাঁর বযস। ২০০৯ সাল নাগাদ যোগীবাবা রবীন্দ্র কাছে তাঁর দীক্ষাগ্রহণ। এই সময় কলকাতার ভূতনাথ মন্দির লাগোয়া শ্মশানে তিনি ১২ টা থেকে ৩ পর্যন্ত সাধনা করতেন। গত ১২ বছর হল তারাপীঠ মহা শ্মশানে পাকাপাকি ভাবে বসবাস করেন তিনি। সেখানে বাবার একটি কুঠুরি আছে।
তবে বাবার নাকি কোনও চাহিদা নেই। বাবার কথায়, ‘লাথি খেলেই ব্যাথা কমে যাবে।’ ‘কাঞ্চন মূল্যেই’ আমি সন্তুষ্ট। বাবা এটা কি অঘোরী বিদ্যার ফলে সম্ভব হচ্ছে? উত্তরে বাবা বলেন, ‘১২ বছর সাধনা করে মা-এর ইঙ্গিত পেয়েছি। তাতেই কাজ হচ্ছে।’ তিনি জানান, যখন তিনি জন্মেছিলেন, তখন মাতৃগর্ভ থেকে পা আগে বেরিয়েছিল। সেই কারণে বাবার পায়ের এত গুণ।
বিষয়টিকে কোনওভাবেই ‘যুক্তিযুক্ত’ বলে মেনে নিচ্ছেন না চিকিৎসকরা। রামপুরহাট জেলা স্বাস্থ্য মুখ্য আধিকারিক শোভন দে বলেন, ‘এটার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এভাবে কারও কোমরে লাথি মারলে ব্যাথা সারতে পারে না। তবে, কিছু বিশ্বাস বা ভক্তি থেকে মানুষ তাঁর শরণাপন্ন হতে পারেন। সেটাকে নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।’ অন্যদিকে, বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য হিমাদ্রি শুক্লা বলেন, ‘লাথি মেরে কারও ব্যাথা ঠিক করা যায় না। অসুখের জন্য চিকিৎসকের কাছে যেতে হয়। নির্দিষ্ট চিকিৎসার মাধ্যমেই রোগ নিরাময় হয়। যাঁরা অর্থাভাবে ভালো চিকিৎসকের কাছে যেতে পারেন না, তাঁদেরই সুবিধা হয় এইসব বুজরুকির মধ্যে ফেলার।’
