২০২৩ সাল, ডিসেম্বর মাস। হালকা শীতের আমেজে সল্টলেকে বয়েছিল ‘অন্য হাওয়া’! কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি পদে আসীন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়ির দরজায় হাজির হয়েছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। এক চাকরিপ্রার্থীর আবেগমেশানো মন্তব্য ছিল- ‘আমরা ভগবান দর্শনে এসেছি’। মাত্র ছয় মাসের ব্যবধান। তাতেই প্রেক্ষাপটে আমূল বদল!
বিচারপতি হিসেবে পদত্যাগ করেছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আপাতত তিনি ‘ফুল টাইম’ রাজনীতিক, তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী। ২৫ মে ভোটের দিন তাঁকে দেখেই উঠল ‘চাকরি চোর’ স্লোগান। ছয় মাসে কী ভাবে ‘৬০০ গুণ’ বদলাল প্রেক্ষাপট? তা এখন রাজনীতির কারবারিদের অন্যতম আলোচনার বিষয়।
শনিবার হলদিয়ার একটি বুথে গিয়েছিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁকে দেখে প্রথমে ‘চোর’ স্লোগান ওঠে। পরবর্তীতে ‘চাকরি চোর’ শব্দটি ভেসে আসে ভিড়ের মধ্য থেকেই।
এই ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে গেরুয়া শিবির। বিষয়টি নিয়ে তমলুক সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ ভ্যুঁইয়া বলেন, ‘এটাই তৃণমূলের সংস্কৃতি। আমাদের পোলিং এজেন্টদের ওই জায়গাগুলিতে বার করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, মানুষের উপর ভরসা রয়েছে।’
পালটা তমলুক সাংগঠনিক জেলার তৃণমূলের যুব সভাপতি আজগর আলি বলেন, ‘বিচারপতির আসনে বসে রাজনৈতিক দলের তাঁবেদারি করেছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এখন স্বাভাবিকভাবেই মানুষ তাঁর থেকে জবাব চাইছে। এই বিক্ষোভ স্বতঃস্ফূর্ত।’
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একাধিক নির্দেশ নিয়ে বিভিন্ন সময় অসন্তোষের সুর শোনা গিয়েছে রাজ্যের শাসক দলের নেতাদের কণ্ঠে। অনেক সময় বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁরা। লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে তিনি বিচারপতি হিসেবে ইস্তফা দেন এবং বিজেপিতে যোগদান করেন। তাঁকে তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী করা হয়। এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য এবং বাম প্রার্থী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়।