এই সময়, সাগর ও ক্যানিং: বেলা তখন সাড়ে দশটা। রোদ ঝলমলে আকাশ। সাগরদ্বীপের রুদ্রনগরের মাঠে মথুরাপুরের তৃণমূল প্রার্থী বাপি হালদারের সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভায় ধীরে ধীরে দলের কর্মী সমর্থকরা আসতে শুরু করেছেন। সময় যত এগিয়েছে বাড়ির মহিলাদের অধিকাংশই রান্নাবাড়া ফেলে রেখে ছেলেমেয়েদের সঙ্গে নিয়েই সভাস্থলে হাজির হন। সভায় উপস্থিত গৃহবধূদের অনেকেই বলেন, ‘যখন মাথা ফেটে দিদি জখম হয়েছিলেন সেই ছবি দেখে ভীষণ কষ্ট হয়েছিল।’দশটা বেজে পঞ্চাশ মিনিটে মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার এসে পৌঁছতেই মহিলারা উলু দিয়ে, শাঁখ বাজিয়ে বরণ করে নেন তাঁকে। মুখ্যমন্ত্রীও এক মুহূর্তে সাগরের মা, বৌ, মেয়েদের কাছে বাড়ির মেয়ে হয়ে ওঠেন। মঞ্চের সামনে বসে মহিলাদের নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে শোনা যায়, ‘সকলের জন্য ভাবতে ভাবতে আগের চাইতে দিদির শরীর অনেকটাই খারাপ হয়ে গিয়েছে।’ এ দিন সুন্দরবন লাগোয়া এলাকায় তিনটি জনসভা থেকেই সুন্দরবন নিয়ে আলাদা মাস্টার প্ল্যান তৈরি করার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, কুড়ি কোটি ম্যানগ্রোভ বসানো হয়েছে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী বাঁধ এলাকায়। সাগরের সভায় বক্তব্যের শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেক বছর গঙ্গাসাগর মেলার আগে আমি এই পুণ্যভূমিতে আসি। এখানকার উন্নয়নের খুঁটিনাটি বিষয়ে আমি খোঁজ রাখি। গঙ্গাসাগরে বিদ্যুৎ আনার পাশাপাশি আজ যা কিছু উন্নয়ন হয়েছে সমস্তটাই মা মাটি মানুষের সরকারের হাত ধরে।’
২০২৬ সালের মধ্যে সুন্দরবন সহ মথুরাপুরের ঘরে ঘরে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দেন মমতা। তিনি বলেন, ‘সাগরে যাতায়াতের একমাত্র পথ মুড়িগঙ্গা নদীর উপর ব্রিজ তৈরির জন্য ডিপিআর তৈরি হয়ে গেছে। দেড় হাজার কোটি টাকা লাগবে। দু-তিন বছরের মধ্যে করে দেওয়ার চেষ্টা করব। কাগজপত্র রেডি হয়ে গেছে, সমীক্ষা হয়ে গেছে। আমরা ব্রিজ তৈরির জন্য অনেকটা ধাপ এগিয়ে গিয়েছি।’ ক্যানিংয়ে বিকেলে মিটিং হওয়ার কথা ছিল। আবহাওয়া ভালো নয় বলে দুপুরেই সভা করেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পরিকল্পনা করেই হজের সময় এই নির্বাচনটা করা হচ্ছে। এখন তো অনেকেই হজ করতে যান। তাই একটা বড় অংশের মানুষ ভোট দিতে পারবেন না।’