নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, এ বার জঙ্গিপুর কেন্দ্রে মহিলাদের ভোট পড়েছে ৭ লক্ষ ৩৪ হাজার ৯২৭ (৮২.৭৫%)। সেখানে পুরুষদের ভোট পড়েছে ৬ লক্ষ ৩২ হাজার ৮৩ ( ৬৮.৯১%)। মালদা দক্ষিণে মহিলাদের ভোটদানের হার ছিল ৮২.১৫%, পুরুষদের ৭১.২২%। মালদা উত্তরে মহিলাদের ভোটদানের হার ছিল ৮১.০১%, আর পুরুষদের ৭১.২২। আবার পঞ্চম দফায় ভোট হয়েছে আরামবাগে। এই লোকসভার খানাকুল বিধানসভা কেন্দ্রের বহু মানুষ সোনার বা হিরের কাজ করতে মুম্বই, গুজরাটে থাকেন। আরামবাগে এ বার পুরুষদের ভোটদানের হার ছিল মাত্র ৭০.৮১%। মহিলাদের ৭৯.৫৫%। আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রেও মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের ভোটের হার ছিল অনেক কম।
উত্তর দিনাজপুরের এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘ইটাহারে এ বার প্রায় ২৮ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ভোট দিতে বাড়ি ফেরেননি। এঁদের অনুপস্থিতি কিছুটা হলেও ভোটে প্রভাব ফেলবে। গত লোকসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থী এই বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট পেয়েছিলেন ৮৭ হাজার ৫০৬টি। বিজেপি পেয়েছিল ৫৯ হাজার ৭২৯ ভোট।’ এ বার এই ব্যবধান কমার আশঙ্কা করছে শাসকদল।
বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা মূলত তিনটি ক্ষেত্রে কাজে যুক্ত। মুম্বইয়ে সোনার কাজ। হুগলি, মেদিনীপুর, হাওড়ার ছেলেমেয়েরা এই কাজ করেন। আর এক দল গুজরাট ও দক্ষিণ ভারতের রাজ্যে হিরে ও অন্য নানা রকম রত্নের কাজে যুক্ত। অনেকে দলিত। মুর্শিদাবাদ, মালদা, দিনাজপুরের পরিযায়ী শ্রমিকরা মূলত নির্মাণশিল্পে যুক্ত। সংখ্যালঘু মানুষ। এ ছাড়াও এঁদের একটা অংশ হিমাচল ও কাশ্মীরে আপেল বাগিচাতেও কাজ করেন। হোটেলেও বহু ছেলে কাজ করেন। নির্মাণশিল্পের সঙ্গে যুক্ত যাঁরা, তাঁরা বছরে দু’বার বাড়িতে আসেন। এক বার রমজানে। ঈদের পরে ফেরেন। দ্বিতীয় বার অল্প সময়ের জন্যে আসেন ভোট-সহ পরিবারিক কোনও কাজে। এ বার ঈদ ছিল ১১ এপ্রিল। কিন্তু প্রথম দফার ভোট ছিল ১৯ এপ্রিল। মালদা ও মুর্শিদাবাদ জেলার ভোট হয়েছে তৃতীয় দফায় ৭ মে। তাই রমজানে এসে এত দীর্ঘ সময় বাড়িতে থাকার ছুটি তাঁদের ছিল না। বাধ্য হয়েছেন ভোট না দিয়েই কাজে ফিরে যেতে। যাঁরা ঠিকাদারের কাছে অন্য কাজ করেন, ভোটের ছুটি সব সময় তাঁরা পানও না। এ ছাড়াও লকডাউনের আর্থিক ধাক্কা সামলাতে পরিযায়ী শ্রমিকরা বেশি ছুটি নেওয়ার ঝুঁকিও নিতে চাইছেন না।