Loksabha Election 2024: বাংলায় ভোটের হার কমার মূলে পরিযায়ী শ্রমিকদের গরহাজিরা – voter turnout dropped due to migrant workers absence in lok sabha election


পাঁচ দফা ভোট আগেই হয়ে গিয়েছিল। ষষ্ঠ দফার ভোটও মিটে গেল শনিবার। বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের বড় অংশই এ বার আর ভোট দিতে বাড়ি ফিরলেন না। ভোটের হার নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্যেই এই চিত্র পরিষ্কার। পরিযায়ী শ্রমিকদের অনুপস্থিতি রাজ্যে ভোট কম পড়ার প্রধান কারণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও। বিশেষত আলিপুরদুয়ার, বালুরঘাট, রায়গঞ্জ, মালদা উত্তর এবং দক্ষিণ, মুর্শিদাবাদ, জঙ্গিপুর, বহরমপুর, হুগলি, আরামবাগের মতো লোকসভা কেন্দ্রে ভোটারদের বড় অংশই পরিযায়ী শ্রমিক।রজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যাটা ঠিক কত, তা নিয়ে অবশ্য সুনির্দিষ্ট সরকারি তথ্য নেই। রাজ্য সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্যে যে কর্মসাথী প্রকল্প চালু করেছিল, তাতে গত বছর পর্যন্ত ১৮ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকের নাম নথিভুক্ত হয়েছে। তবে বেসরকারি হিসেবে রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিক অন্তত ৭০ লক্ষ। যাঁরা মূলত কাজ করছেন মুম্বই, গুজরাট, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, কাশ্মীরে। এ বার ভোটে তাঁরা বাড়ি আসতে পারেননি। ঈদের ছুটিতে অনেকে ফিরলেও ভোটের দিন দেরিতে থাকায় ফিরে গিয়েছেন কর্মস্থলে। পরিযায়ী শ্রমিকদের বড় অংশ ভোটে অংশ নিতে পারেননি বলে বিভিন্ন জেলায় শাসক তৃণমূলের নেতাদেরও দাবি।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, এ বার জঙ্গিপুর কেন্দ্রে মহিলাদের ভোট পড়েছে ৭ লক্ষ ৩৪ হাজার ৯২৭ (৮২.৭৫%)। সেখানে পুরুষদের ভোট পড়েছে ৬ লক্ষ ৩২ হাজার ৮৩ ( ৬৮.৯১%)। মালদা দক্ষিণে মহিলাদের ভোটদানের হার ছিল ৮২.১৫%, পুরুষদের ৭১.২২%। মালদা উত্তরে মহিলাদের ভোটদানের হার ছিল ৮১.০১%, আর পুরুষদের ৭১.২২। আবার পঞ্চম দফায় ভোট হয়েছে আরামবাগে। এই লোকসভার খানাকুল বিধানসভা কেন্দ্রের বহু মানুষ সোনার বা হিরের কাজ করতে মুম্বই, গুজরাটে থাকেন। আরামবাগে এ বার পুরুষদের ভোটদানের হার ছিল মাত্র ৭০.৮১%। মহিলাদের ৭৯.৫৫%। আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রেও মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের ভোটের হার ছিল অনেক কম।

উত্তর দিনাজপুরের এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘ইটাহারে এ বার প্রায় ২৮ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ভোট দিতে বাড়ি ফেরেননি। এঁদের অনুপস্থিতি কিছুটা হলেও ভোটে প্রভাব ফেলবে। গত লোকসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থী এই বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট পেয়েছিলেন ৮৭ হাজার ৫০৬টি। বিজেপি পেয়েছিল ৫৯ হাজার ৭২৯ ভোট।’ এ বার এই ব্যবধান কমার আশঙ্কা করছে শাসকদল।

Migrant Workers: ভোটের আগে ফিরুন অনুরোধ পরিযায়ীদের
বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা মূলত তিনটি ক্ষেত্রে কাজে যুক্ত। মুম্বইয়ে সোনার কাজ। হুগলি, মেদিনীপুর, হাওড়ার ছেলেমেয়েরা এই কাজ করেন। আর এক দল গুজরাট ও দক্ষিণ ভারতের রাজ্যে হিরে ও অন্য নানা রকম রত্নের কাজে যুক্ত। অনেকে দলিত। মুর্শিদাবাদ, মালদা, দিনাজপুরের পরিযায়ী শ্রমিকরা মূলত নির্মাণশিল্পে যুক্ত। সংখ্যালঘু মানুষ। এ ছাড়াও এঁদের একটা অংশ হিমাচল ও কাশ্মীরে আপেল বাগিচাতেও কাজ করেন। হোটেলেও বহু ছেলে কাজ করেন। নির্মাণশিল্পের সঙ্গে যুক্ত যাঁরা, তাঁরা বছরে দু’বার বাড়িতে আসেন। এক বার রমজানে। ঈদের পরে ফেরেন। দ্বিতীয় বার অল্প সময়ের জন্যে আসেন ভোট-সহ পরিবারিক কোনও কাজে। এ বার ঈদ ছিল ১১ এপ্রিল। কিন্তু প্রথম দফার ভোট ছিল ১৯ এপ্রিল। মালদা ও মুর্শিদাবাদ জেলার ভোট হয়েছে তৃতীয় দফায় ৭ মে। তাই রমজানে এসে এত দীর্ঘ সময় বাড়িতে থাকার ছুটি তাঁদের ছিল না। বাধ্য হয়েছেন ভোট না দিয়েই কাজে ফিরে যেতে। যাঁরা ঠিকাদারের কাছে অন্য কাজ করেন, ভোটের ছুটি সব সময় তাঁরা পানও না। এ ছাড়াও লকডাউনের আর্থিক ধাক্কা সামলাতে পরিযায়ী শ্রমিকরা বেশি ছুটি নেওয়ার ঝুঁকিও নিতে চাইছেন না।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *