Cyclone In Sundarban,উত্তর-পূর্বের পালটা হাওয়া ত্রাতা হয়ে উঠল বাদাবনের, রক্ষা পেল বাঁধ – north easterly wind become the savior of sundarban from cyclone remal


এই সময়: একে ঘূর্ণিঝড়, তার উপর ভরা কটাল! এর ফল যে কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, তিন বছর আগে সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া গিয়েছিল ‘ইয়াস’ ঝড়ে। এ বার একই আশঙ্কা ছিল ‘রিমেল’-এর ক্ষেত্রেও। ভরা কটালের মধ্যে এই ঝড়েও প্রবল জলোচ্ছ্বাসের আতঙ্ক জাঁকিয়ে বসেছিল সুন্দরবন এলাকায়।ইয়াসে যেমন বাদাবনের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছিল নদীর বাঁধ ভেঙে, এ বারও তেমনটা হবে ধরে নিয়েই প্রস্তুতি নিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু যে প্রকৃতির রোষের কারণে এত দুশ্চিন্তা, ত্রাতা হয়ে দাঁড়াল সেই প্রকৃতিই! বিষয়টা বিস্ময়কর মনে হলেও সত্যি। এ বার সুন্দরবনকে বাঁচিয়ে দিল উত্তর-পূর্বের পাল্টা হাওয়া!

ঝড়ে জলোচ্ছ্বাস হয় সাধারণত পুবালি হাওয়াতেই। এ বার সেটাই হতে দিলো না পাল্টা উত্তর-পূর্বের হাওয়া। অল্প কিছু জায়গা ছাড়া আর কোথাও বাঁধ ভাঙেনি। এমনকী, বাঁধ ছাপিয়ে প্লাবিতও হয়নি তেমন বড় এলাকা। বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই বক্তব্য, হাওয়ার এই দিক পরিবর্তন অভূতপূর্ব। সে জন্যই বড় ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো গিয়েছে।

রিমেল এবং ভরা কটালের সাঁড়াশি আক্রমণের কথা মাথায় রেখেই আগেভাগে সতর্কবার্তা জারি করেছিল প্রশাসন। সেই সতর্কবাণী যে ভুল নয়, তার প্রমাণ মিলেছিল রবিবার দুপুর থেকেই। গঙ্গাতেই দেখা যাচ্ছিল সাগরের মতো ঢেউ। তার ফলে কপালে ভাঁজ পড়েছিল সুন্দরবনের বাসিন্দাদের। সেই মতো প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল।

গত কয়েক দশক ধরে কাকদ্বীপের বাসিন্দা, সুন্দরবন মৎস্যজীবী সমিতির সম্পাদক সতীনাথ পাত্র বলছেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে জলোচ্ছ্বাসে বাড়িতে জল ঢুকেছিল ইয়াসের সময়ে। এ বারও পরিস্থিতি তেমনই ছিল। সেই মতো আমরা ব্যবস্থা নিয়েছিলাম।’ তিনি জানান, সব ট্রলার-নৌকা এখন বন্দরে। সেগুলো যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না-হয়, সে জন্য শনি-রবিবার হারবারে নোঙর করে থাকা সব ট্রলারকে দড়ি দিয়ে শক্ত করে বেঁধে রাখা হয়েছিল।

কারণ, ইয়াসের সময়ে জলোচ্ছ্বাসের কারণে ট্রলার-নৌকা একটার উপর অন্যটা উঠে ভেঙেচুরে, দুমড়ে গিয়ে প্রচুর ক্ষতি হয়েছিল। সতীনাথের কথায়, এ বার অদ্ভুত ভাবে তেমন কিছু ঘটেনি।’ একই বক্তব্য সাগরদ্বীপের কৃষ্ণনগর এলাকার বাসিন্দা শুকদেব নাথের।

এলাকার কৃষিজীবীদের নিয়ে কাজ করা শুকদেব বলেন, ‘এ বারের ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি নিশ্চয়ই কিছু হয়েছে। তবে আগের ঘূর্ণিঝড়গুলোয় সব চেয়ে বেশি ক্ষতি করেছিল জলোচ্ছ্বাস। এ বার তা হয়নি। দু’-একটি জায়গায় বাঁধ ভেঙেছে। সেগুলো এমনিতেই দুর্বল ছিল। বেশি জায়গায় বাঁধ ভাঙলে কিংবা বাঁধ উপচে গিয়ে এলাকায় নোনা জল ঢুকলে ফসল ও মাছ চাষে প্রচুর ক্ষতি হতো। এ বার সেটা হয়নি।’
Cyclone Storm Remal : এ পার বাংলার কান ঘেঁষে মাঝরাতেই ওপারের মংলায় হানা রিমেলের

এর কারণ কী?
সতীনাথ এবং স্থানীয় অন্য বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে সাধারণত পুবালি বাতাস ঠেলা দেয়। তার ফলে সাগর ও নদীর জল ফুলেফেঁপে ওঠে। একই ঘটনা ঘটে ভরা কটালের সময়ে। তার সঙ্গে পুবের হাওয়া যোগ হলে তা কয়েক ফুট উচ্চতায় উঠে জলোচ্ছ্বাস ঘটে।

এবার উত্তর-পূর্ব দিক, বিশেষ করে অসমের দিক থেকে আসা হাওয়া পাল্টা ঠেলা মেরেছে। তাতে রিমেলের গতিকে কিছুটা রোধ করা গিয়েছে। ফলে, কটালের জলোচ্ছ্বাসকেও ঠেকিয়ে দিয়েছে ওই হাওয়া। তাতেই এড়ানো গিয়েছে ক্ষতি ও বিপত্তি।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *