এই কেন্দ্র থেকে একদা জিতে এসেছিলেন সিপিএম সাংসদ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত এটি আলিপুর কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল। ৭৭ থেকে ৮৪ পর্যন্ত এই কেন্দ্রের সাংসদ ছিলেন সোমনাথ। ৮৪ সালে প্রথম ধাক্কা খান তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। সংসদীয় রাজনীতিতে এই কেন্দ্র থেকেই উত্থান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
একদা বামদূর্গ যাদবপুর
একদা ‘বামদুর্গ’ হিসাবে পরিচিত ছিল এই কেন্দ্র। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর ১৯৯৮-এ তৃণমূলের প্রথম ভোটে এখানে জিতেছিলেন কৃষ্ণা বসু। ২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এই কেন্দ্র যায় সিপিএমের হাতে। সাংসদ হন সুজন চক্রবর্তী। এরপর টানা তিন বার তৃণমূলের তিন প্রার্থী কবীর সুমন, সুগত বসু এবং মিমি চক্রবর্তী জয়ী হয়েছেন।
‘ডাকাবুকো’ সায়নীর লড়াই
বিধানসভা নির্বাচনে আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্রে পরাজিত হওয়ার পর দলের যুব সংগঠনের দায়িত্ব পান সায়নী ঘোষ। এরপর সোজা যাদবপুর কেন্দ্রের টিকিট। ‘ডাকাবুকো’ সায়নী লড়ছেন একদা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়ে আসা কেন্দ্রে। মান রক্ষার লড়াই তাঁর। বিধানসভায় হারের শিক্ষা থেকেই হিসাব কষে পা ফেলছেন এবার। অভিনেত্রীকে দেখতে আসা মানেই ভোট পাওয়া নয়, বুঝেছেন হাড়ে হাড়ে। দলীয় শক্ত সংগঠনই অনেকটা এগিয়ে রাখছে তাঁকে।
নজরকাড়া সৃজন
অন্যদিকে, রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তে তৃণমূল-বিজেপির যুযুধান লড়াই হলেও শুরু থেকেই বিরোধী প্রার্থী হিসেবে নজর কেড়েছেন সিপিএমের তরুণ প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য। তিনিও ছাত্র সংগঠন সামলে আসা প্রার্থী। প্রচারে খামতি রাখেননি কোনও অংশেই। শাসক বিরোধী প্রচার যেন ভোটবাক্সে পড়ে এবার তারই অপেক্ষায়।
বিজেপির ‘বুদ্ধিজীবী’ প্রার্থী
বিজেপি এবার এই কেন্দ্র থেকে দাঁড় করিয়েছে তথাকথিত ‘বুদ্ধিজীবী’ প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়কে। তবে, অনেকের মতে বিরোধী প্রার্থী হিসেবে প্রচারে সৃজনকে টেক্কা দিতে পারেননি তিনি। গত লোকসভায় যদিও বিজেপি এই কেন্দ্রে দ্বিতীয় স্থানে ছিল। এবার কি লড়াইটা দ্বিতীয় স্থান ধরে রাখার?
ফ্যাক্টর ভাঙড়?
এই লোকসভার অন্তর্গত ভাঙড় থেকে জেতেন সংযুক্ত মোর্চার এক মাত্র মুখ আইএসএফ প্রার্থী নওশাদ সিদ্দিকি। ফলত, ISF ভোট কাটাকাটির মূল্য দিতে হবে সৃজনকে। বাকি ছ’টি আসন বারুইপুর পূর্ব, বারুইপুর পশ্চিম, সোনারপুর দক্ষিণ, সোনারপুর উত্তর, যাদবপুর এবং টালিগঞ্জে গত বিধানসভায় জেতে তৃণমূল। আইএসএফের মেঘনাদ হালদার ভোট পাবেন ভাঙড় কিংবা তার সংলগ্ন এলাকা থেকে। যদিও সেটাও জেতার পক্ষে যথেষ্ট নয়।
গতবার লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে মিমি চক্রবর্তী জিতেছিলেন তিন লাখের কাছাকাছি ব্যবধানে। সেই ব্যবধান কি এবার ধরে রাখতে পারবেন সায়নী? অপেক্ষার ৪ জুন।