স্থানীয় এবং পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ছাত্রী স্থানীয় সারদা শিশুবিহার স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। তাঁর বাবা সুদীপ মিশ্র একটি বেসরকারি সংস্থার ডেলিভারি বয়ের কাজ করেন। কয়েকদিন আগে কাজ থেকে বাড়ি ফিরে তিনি ডেলিভারির টাকার হিসেব নিয়ে বসেছিলেন। ছোট মেয়েও বাবার সঙ্গে হিসেবে হাত লাগিয়েছিল। পরে মেয়ে চলে গেলে হিসাব মেলানোর শেষে সুদীপ দেখেন দেড় হাজার টাকা মত গড়মিল। এরপরই সুদীপ মেয়েকে টাকা ফেরত দিতে বলে বকুনি দেওয়ার সময় কথাকাটাকটিতে ‘চোর’ বলে ফেলেন।
বাবার থেকে একথা শুনেই নাবালিকার মনে আঘাত লাগে। কিন্তু সেই সময় বিষয়টি বাড়ির অন্যান্যদের বুঝতে না দিয়ে, পরের দিনই একটি চিরকুট লিখে প্রাইভেট টিউশন এর নাম করে সুরঞ্জনা বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হলেও, বোন বাড়িতে না আসায় চিন্তিত হয়ে পড়েন দিদি। প্রাইভেট টিউটরকে ফোন করে জানতে পারেন বোন পড়তে যায় নি। এরপরই, চারিদিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন পরিবারের লোকজন।
তারই মাঝে, ঘরের সোফায় মেয়ের লেখা একটা চিরকুট উদ্ধার করেন পরিবারের লোকজন। চিরকুটে লেখা ছিল, ‘বাবার কথাটা আমি মন থেকে মেনে নিতে পারি নি। তাই বাড়ি থেকে চলে যাচ্ছি। নিজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরই ফিরে আসব।’ এরপরই মেয়েকে ফিরে পেতে বারাসাত থানার দ্বারস্থ হয় পরিবার। তারপরই খোঁজখবর শুরু করে প্রশাসন। অবশেষে, পাটনা থেকে উদ্ধার করা হল ছাত্রীকে।
যদিও উদ্ধার হওয়ার পর ওই ছাত্রী জানান, নানাভাবে বাবা ধার বাকির কারণে টাকা সরিয়ে অপবাদ দিত তার উপর। তা কোনভাবেই মেনে নিতে না পেরেই এমন সিদ্ধান্ত। পাশাপাশি বাবা মার মধ্যেও চলত অশান্তি, তার প্রভাবও পড়তো মেয়ের উপর। তাই বাধ্য হয়েই একপ্রকার ঘর ছাড়ে ওই ছাত্রী। যদিও মেয়ের উদ্ধারের খবর পেতেই স্বস্তি নেমেছে ওই পরিবারে। পুলিশের তরফ থেকে জানা গিয়েছে, সুস্থভাবেই পাটনা থেকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে বারাসাতের ওই ছাত্রীকে।