কী ভাবে ওই সেপটিক ট্যাঙ্কের খোঁজ পেলেন গোয়েন্দারা?
বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশিদ ‘এই সময়’-কে বলেন, ‘খুনের ঘটনায় আখতারুজ্জামান শাহিনের বান্ধবী শিলাস্তি রহমানকে গ্রেপ্তার করার পরে এ বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়। জেরায় শিলাস্তি জানান, ঘটনার সময়ে তিনি ফ্ল্যাটের ত্রিতল ফ্ল্যাটের (ট্রিপলে) তৃতীয় ধাপে ছিলেন। সেখান থেকে টানা বেশ ক’বার শৌচালয়ের কমোড ফ্লাশ করার আওয়াজ পান। সাধারণত অত অল্প সময়ের মধ্যে অতবার কমোড ব্যবহার হওয়ার কথা নয়। অভিযুক্তের সেই সন্দেহ অনুযায়ী আমরা সিআইডি-র গোয়েন্দাদের ফ্ল্যাটটির সুয়ারেজ লাইন এবং সেপটিক ট্যাঙ্ক পরীক্ষার কথা বলি। আর তাতেই মাংসের টুকরো পাওয়া যায়।’
সিআইডি-তদন্তকারীদের দাবি, ‘কমোডে মাংসের কিমাগুলো ঢেলে ফ্লাশ করায় তা পাইপ দিয়ে সোজা সেপটিক ট্যাঙ্কে গিয়ে জমা হয়। আর যেহেতু ওই ট্যাঙ্ক পার্কিং এরিয়ার মধ্যে, তাই আলাদা করে কারও নাকে দুর্গন্ধ পৌঁছয়নি।’ এ দিকে, সাংসদ খুনের ঘটনায় বাংলাদেশে তাঁর মেয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে একটি অপহরণের মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অন্য দিকে, বরাহনগর থানায় আনোয়ারুলের বন্ধু গোপাল বিশ্বাস নিখোঁজ ডায়েরি করলেও পরে সেই অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি। প্রশ্ন উঠেছে, সাংসদ খুনের বিচার তা হলে কোন দেশে শুরু হবে? দুই দেশের পুলিশকর্তারাই জানিয়েছেন, নিয়ম মেনে দু’দেশই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেবে। তবে তার আগে আমেরিকায় লুকিয়ে থাকা আখতারুজ্জামান এবং নেপালে পালিয়ে যাওয়া সিয়ামকে গ্রেপ্তার করতে উদ্যোগী তাঁরা।
বাংলাদেশের মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাবিবুর রহমান বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে এই মুহূর্তে আমেরিকার বন্দি বিনিময় চুক্তি নেই। তবে একজন সাংসদ খুনের ঘটনায় অভিযুক্তকে ধরতে কূটনৈতিক স্তরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে যাওয়া হবে। কারণ, মূল অভিযুক্তকে ধরতে না পারলে খুনের মোটিভ সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু জানা যাবে না।’
বাংলাদেশ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাংসদ সদস্য আনোয়ারুল আনারকে খুনের মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত শিমুল ভুঁইয়া ওরফে আমানুল্লার সঙ্গী সাইফুল আলমকে মঙ্গলবার রাতে যশোরের গোয়েন্দা পুলিশ চাঁচড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে। গত ১৯ মে কলকাতা থেকে তিনি যশোরে ফিরেছিলেন। সাইফুলের কাছ থেকে একটি ভারতীয় সিম বাজেয়াপ্ত করেছেন গোয়েন্দারা।
তবে সঞ্জীবা গার্ডেন আবাসনের সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে দেহাংশ মেলার কথা বলা হলেও আরও তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছেন সিআইডি-র আধিকারিকরা। এ দিনও তাঁরা বাগজোলা খালের বিভিন্ন অংশে অনুসন্ধান চালানোর জন্য ডিএমজি টিম নামান। যদিও সেখান থেকে নতুন করে কিছু পাওয়া যায়নি।