এই সূত্রে ফিরে দেখা যাক বিবেকানন্দর মৃত্যুর দিকে। সে দিন একটি ব্যবসায়িক কাজ সেরে গাড়ি করে আরও কয়েকজনের সঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। আঁধারনয়নের কাছে গাড়ির সামনে চলে আসে একটি ছাগল। চালকের পাশেই বসেছিলেন বিবেকানন্দ। ছাগলটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও ড্রাইভার সেটা করতে পারেননি। এতে আশপাশের উত্তেজিত জনতা ইট-পাথর ছুড়তে থাকে গাড়ি লক্ষ করে।
একটি ইট লাগে চালকের মাথায়। গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন তিনি। পাশ থেকে স্টিয়ারিং ধরে গাড়িটিকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন বিবেকানন্দ। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। গাড়ি উল্টে গুরুতর ভাবে জখম হন তিনি এবং চালক। হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় তাঁদের। এ দিকে, জখম বিবেকানন্দের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়। কিন্তু ব্লাড ব্যাঙ্কে তখন ওই গ্রুপের রক্ত নেই! যমে-মানুষে টানাটানির পর মারাই যান রক্ত আন্দোলনের ওই কর্মী।
যিনি কি না গুরুতর অসুস্থ কারও প্রয়োজন হলেই ব্লাড জোগাড়ে ব্রতী হতেন। নিয়মিত রক্তদান শিবিরের আয়োজনও করতেন। তাঁর সেই স্বভাবের ভিতর দিয়েই যেন স্বামীকে বাঁচিয়ে রাখতে চান চন্দনা। বলেন, ‘আমার স্বামী নিজে রক্তদান আন্দোলনের কর্মী ছিলেন। অথচ সময়মতো না পাওয়ায় তাঁর মৃত্যু হয়। তার পরেই শপথ নিই, যতদিন বাঁচব, ততদিন স্বামীর মৃত্যুদিবসে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করব। এ ভাবেই স্বামীকে স্মরণ করতে চাই।’
বাবার মৃত্যুর সময়ে বিবেকানন্দর মেয়ে সোমদত্তার বয়স ছিল মাত্র আড়াই বছর। এখন তিনি কলেজ-ছাত্রী। ২০২২ থেকে তিনিও রক্ত দিচ্ছেন। এমনকী, এখন শিবির পরিচালনার কাজ অনেকখানিই করেন সোমদত্তা। বলেন, ‘বাবাকে অনুসরণ করে, তাঁর মৃত্যু-দিনে মানুষের জন্য রক্তদান শিবিরের আয়োজন করছি। আমিও যতদিন পারব, এই শিবির চালিয়ে যাব।’ বুধবার শিবিরে ৪৫ জন রক্তদান করেন।