Blood Donation Camp : রক্ত যোদ্ধার মৃত্যু-দিনে ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্প – blood donation camp organised by a daughter for the purpose of father memory in paschim medinipur


এই সময়, মেদিনীপুর: তাঁর পেশা ছিল ব্যবসা। আর নেশা বলতে সমাজসেবা। আরও নির্দিষ্ট ভাবে বলতে গেলে, রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনার বাঁকা গ্রামের বাসিন্দা বিবেকানন্দ করণ। অথচ এক দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ এবং সময়মতো রক্ত দিতে না পারায় মৃত্যু হয় তাঁর। সেটা ২০০৫ সালের ২৯ মে।তার পরের বছর, ২০০৬ থেকে প্রতি বছর এই দিনটায় টানা রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেন বিবেকানন্দের স্ত্রী চন্দনা। বুধবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বাড়ির লোকজন, আত্মীয় পরিজন তো বটেই, আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকেও রক্ত দিতে এগিয়ে আসেন বেশ কিছু মানুষ। উদ্যোগের প্রশংসা করেন সকলে, তাঁদের মধ্যে রক্তদান আন্দোলনের কর্মীরাও রয়েছেন।

এই সূত্রে ফিরে দেখা যাক বিবেকানন্দর মৃত্যুর দিকে। সে দিন একটি ব্যবসায়িক কাজ সেরে গাড়ি করে আরও কয়েকজনের সঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। আঁধারনয়নের কাছে গাড়ির সামনে চলে আসে একটি ছাগল। চালকের পাশেই বসেছিলেন বিবেকানন্দ। ছাগলটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও ড্রাইভার সেটা করতে পারেননি। এতে আশপাশের উত্তেজিত জনতা ইট-পাথর ছুড়তে থাকে গাড়ি লক্ষ করে।

একটি ইট লাগে চালকের মাথায়। গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন তিনি। পাশ থেকে স্টিয়ারিং ধরে গাড়িটিকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন বিবেকানন্দ। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। গাড়ি উল্টে গুরুতর ভাবে জখম হন তিনি এবং চালক। হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় তাঁদের। এ দিকে, জখম বিবেকানন্দের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়। কিন্তু ব্লাড ব্যাঙ্কে তখন ওই গ্রুপের রক্ত নেই! যমে-মানুষে টানাটানির পর মারাই যান রক্ত আন্দোলনের ওই কর্মী।

যিনি কি না গুরুতর অসুস্থ কারও প্রয়োজন হলেই ব্লাড জোগাড়ে ব্রতী হতেন। নিয়মিত রক্তদান শিবিরের আয়োজনও করতেন। তাঁর সেই স্বভাবের ভিতর দিয়েই যেন স্বামীকে বাঁচিয়ে রাখতে চান চন্দনা। বলেন, ‘আমার স্বামী নিজে রক্তদান আন্দোলনের কর্মী ছিলেন। অথচ সময়মতো না পাওয়ায় তাঁর মৃত্যু হয়। তার পরেই শপথ নিই, যতদিন বাঁচব, ততদিন স্বামীর মৃত্যুদিবসে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করব। এ ভাবেই স্বামীকে স্মরণ করতে চাই।’

বাবার স্মৃতির উদ্দেশ্যে রক্তদান শিবিরের আয়োজন কন্যার
বাবার মৃত্যুর সময়ে বিবেকানন্দর মেয়ে সোমদত্তার বয়স ছিল মাত্র আড়াই বছর। এখন তিনি কলেজ-ছাত্রী। ২০২২ থেকে তিনিও রক্ত দিচ্ছেন। এমনকী, এখন শিবির পরিচালনার কাজ অনেকখানিই করেন সোমদত্তা। বলেন, ‘বাবাকে অনুসরণ করে, তাঁর মৃত্যু-দিনে মানুষের জন্য রক্তদান শিবিরের আয়োজন করছি। আমিও যতদিন পারব, এই শিবির চালিয়ে যাব।’ বুধবার শিবিরে ৪৫ জন রক্তদান করেন।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *