বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র,সপ্তম দফায় নজরে বসিরহাট, হাড্ডাহাড্ডি লড়াই রেখা-হাজি নুরুলের, ভোট বাক্সে কোন ‘সন্দেশ’? – basirhat lok sabha election main fight between haji nurul islam and rekha patra


রেশন বণ্টন দুর্নীতি তদন্তে গিয়ে আক্রান্ত ইডি, পরবর্তীতে জমি দখল ও নারী নির্যাতনের অভিযোগ, আবার তারও পরে ভাইরাল ভিডিয়োকে কেন্দ্র করে বারেবারেই সরগরম হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের সন্দেশখালি। আর সপ্তম তথা শেষ দফার লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হতে চলেছে সেই বসিরহাটেই। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একের পর এক ঘটনার কারণে খুব স্বাভাবিকভাবেই এবার নির্বাচন পর্বের প্রথম থেকেই বিশেষ নজরে থেকেছে বসিরহাট কেন্দ্রটি। ওই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আবার অন্যান্য কেন্দ্রের মতো বসিরহাট কেন্দ্রেও দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে প্রচার সেরেছেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী বসিরহাটে তৃণমূলের প্রার্থী জেতার পর, তাঁর প্রথম ‘ভিজিট’ সন্দেশখালিতে হবে বলেও জানিয়েছেন মমতা।

লড়াইতে কারা?

সন্দেশখালি ইস্যুর পর বসিরহাটের প্রার্থী কারা হবেন, তা নিয়ে প্রথম থেকেই যথেষ্ট চর্চা ছিল রাজনৈতিকমহলে। প্রার্থী তালিকা ঘোষণার সময় দেখা যায় বসিরহাট কেন্দ্রে হাজি নুরুল ইসলামকে লড়াইতে নামিয়েছে তৃণমূল। অন্যদিকে সন্দেশখালি আন্দোলনের অন্যতম মুখ রেখা পাত্রকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। এদিকে বামেদের তরফ থেকে প্রার্থী করা হয়েছে সন্দেশখালির প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দারকে।

বিগত পরিসংখ্যান

গত ২০০৯ সাল থেকে তৃণমূলের দখলে রয়েছে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে অভিনেত্রী নুসরত জাহানকে ওই কেন্দ্র থেকে টিকিট দেয় তৃণমূল। ভোটে ৭ লাখ ৮২ হাজার ৭৮ ভোট পেয়ে জয়ী হন নুসরত। আর শুধু লোকসভা ভোটেই নয়, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও বসিরহাটের অন্তর্গত সবক’টি আসনে জয় পায় ঘাসফুল শিবির।

ভোটের ইস্যু

রাজনৈতিকমহলের একাংশ মনে করছে, পরিসংখ্যানের দিক থেকে বসিরহাট কেন্দ্রে তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও, সম্প্রতি সন্দেশখালিতে ঘটে যাওয়া একের পর এক ঘটনা এবারের নির্বাচনের ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান ইস্যু হয়ে উঠতে পারে। সেক্ষেত্রে যেমন জমি দখল করে ভেরি তৈরি বা নারী নির্যাতনের অভিযোগ হয়ে উঠতে পারে ভোটের ইস্যু, আবার পালটা টাকা দিয়ে ধর্ষণের মিথ্যে অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলে যে দাবি করা হচ্ছে, সেটিও প্রভাব ফেলতে পারে ভোটবাক্সে। এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ বা ১০০ দিনের কাজের টাকা ও আবাসের বাড়ির মতো বিষয়গুলিও এবারের ভোটে বসিরহাটে অন্যতম ইস্যু হয়ে উঠেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

শেখ শাহজহান ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে ঝুড়ি ঝুড়ি অভিযোগ থাকলেও এই আসন নিয়ে যথেষ্টই আশাবাদী তৃণমূল। এক্ষেত্রে এলাকার তৃণমূল নেতা তথা কাউন্সিলর প্রদ্যুৎ দাস জানান, তাঁরা জয় নিয়ে ১০০ শতাংশ আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে উপস্থিত থেকেছেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও এসেছেন। একইসঙ্গে কৃতজ্ঞ সুজিত বসুর কাছেও। তিনি যে ভাবে নেতৃত্ব দিয়ে ভোটটাকে করছেন, তাতে তাঁর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে।’ প্রদ্যুৎ আরও জানান, প্রতিটি বুথে গিয়ে মানুষের সামনে একদিকে যেমন কেন্দ্রীয় বঞ্চনা তুলে ধরা হয়েছে, তেমনই তুলে ধরা হয়েছে রাজ্য সরকারের উন্নয়নের খতিয়ানও।

অন্যদিকে বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস ঘোষ বলেন, ‘আমাদের প্রার্থীর দারুণ ক্রেজ। ৮৭টি অঞ্চলের মধ্যে প্রায় ৬৫টি অঞ্চলে নিজে গিয়েছেন। তারপরেও মানুষের প্রচুর ডিমান্ড। প্রার্থী যে ভাবে মানুষের সমর্থন পেয়েছেন, তার উপরে আর কোনও প্রচার আছে বলে মনে হয় না। আমরা অনেক জনসভা করেও জনগণের কাছে পৌঁছতে পেরেছি। বসিরহাট এখন চর্চিত বিষয়।’

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদেরও অনেকেই মনে করছেন বাস্তবেই এখন আলোচনার বিষয় বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র। শেষ দফার নির্বাচনে রাজ্যের যে সমস্ত কেন্দ্রে ভোট হবে তার মধ্যে বিশেষভাবে নজর থাকবে এই কেন্দ্রের দিকে। এখন দেখার ভোটবাক্সে বসিরহাটের মানুষ কোন ‘সন্দেশ’ দেন।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *