দূরপাল্লার ট্রেনে শৌচাগারের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখতে এবার ‘গন্ধভেদ’ ডিভাইস আনছে পূর্ব রেল। ওই বিশেষ ডিভাইসকে রিয়েল টাইম হাইজিন মনিটরিং সিস্টেম বলে জানাচ্ছে রেল। হাওড়া, শিয়ালদহ ও মালদা ডিভিশনের সঙ্গে আসানসোল ডিভিশনের দু’টি দূরপাল্লার ট্রেনে এই ডিভাইস ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র।ট্রেনে টয়লেটের দুর্গন্ধ নিয়ে যাত্রীদের নিত্য অভিযোগ রয়েছে। অপরিচ্ছন্নতা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্য বহু যাত্রী ট্রেনের টয়লেট নিয়ে ‘আতঙ্কে’ থাকেন। বিশেষ করে টয়লেট লাগোয়া বার্থগুলোর যাত্রীদের অভিজ্ঞতা বেশ করুণ। বিষয়টি জানানো হলেও খুব একটা লাভ হয় না বলেই অভিযোগ।
যাত্রীদের নিরন্তর অভিযোগ ভাবিয়েছিল রেল কতৃপক্ষকে। এর পরেই ট্রেনের টয়লেটগুলোর জন্য পূর্ব রেল নিয়ে আসছে ‘গন্ধভেদ’ নামে একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস। রেলের তরফে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে মধ্য রেলের মুম্বই জোনের কয়েকটি স্টেশন ও ট্রেনের টয়লেটে নতুন এই ডিভাইস ব্যবহার করে সাফল্য মিলেছে। তার পরেই রেল বোর্ডের পরামর্শে পূর্ব রেলের ১০টি ট্রেনে পরীক্ষামূলক ভাবে এই ডিভাইস লাগানো হবে।
কৌশিক মিত্র বলেন, ‘আসানসোল ডিভিশনে আসানসোল-চেন্নাই ও আসানসোল-বেঙ্গালুরুগামী দু’টি ট্রেনের টয়লেটে ১৮১টি এই ধরনের ডিভাইস লাগানো হবে। এছাড়া হাওড়া ও শিয়ালদহ ডিভিশনে ৩টি করে ও মালদা ডিভিশনের ২টি ট্রেনে ‘গন্ধভেদ’ ডিভাইস বসানো হবে।’
কী ভাবে কাজ করবে এই ডিভাইস? মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বলেন, ‘ডিভাইসটি টয়লেটের ভিতরে লাগানো থাকবে। শৌচাগারের স্বাস্থ্যবিধির অবনতি ঘটলেই ডিভাইসটি সঙ্কেত পাঠাবে। সেই সঙ্কেত চলে যাবে কামরায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির মোবাইলে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ট্রেনের হাউজ়কিপিং স্টাফদের নিয়ে নির্দিষ্ট টয়লেটে গিয়ে সাফাইয়ের কাজ করবেন।’
জানা গিয়েছে, ‘গন্ধভেদ’ ডিভাইস টয়লেটের তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, দুর্গন্ধ চিহ্নিত করবে। একইসঙ্গে ডিভাইসের সেন্সর চিহ্নিত করবে অ্যামোনিয়া, হাইড্রোজেন সালফাইড, মিথেন, ট্রাইমিথাইলেমিন, মিথাইল মারকাপ্টান, ইথানলের পরিমাণ। পাশাপাশি জীবাণুনাশক বা এয়ার ফ্রেশনারের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিকের উপস্থিতি থাকলেও তা চিহ্নিত করবে ওই সেন্সর। রেলের আশা, এই ডিভাইসের ব্যবহারে যাত্রীদের দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান করা যাবে। ‘স্বাস্থ্যকর’ হয়ে উঠবে যাত্রীদের দূরপাল্লার ভ্রমণ।