বরানগরে বচসা-ধস্তাধস্তিতে ভোট কাটালেন সজল, তন্ময়! ‘কুল মুডে’ মাঠে সায়ন্তিকা – baranagar assembly by election full day of sajal ghosh sayantika banerjee and tanmoy bhattacharya


কখনও বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে হামলা, কখনও আবার বাম প্রার্থীর সঙ্গে তৃণমূল কাউন্সিলরের ধাক্কাধাক্কি-ধস্তাধস্তি। বিক্ষিপ্ত অশান্তির মধ্যে দিয়েই দিনভর চলল বরানগর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। এদিন বরানগর পুরসভার ১০২ নম্বর বুথে এজেন্ট বসানোকে কেন্দ্র করে ছড়ায় উত্তেজনা। বরানগর পুরসভার অন্তর্গত ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে ২৫ এবং ২৬ নম্বর বুথে বিজেপির এজেন্টকে বসতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সকালে বসলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এজেন্টদের বুথের ভিতর থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এছাড়াও বিভিন্ন জায়গা থেকে ইভিএম খারাপের অভিযোগও ওঠে।এই বিষয়ে বরানগরের বিজেপি প্রার্থী সজল ঘোষ অভিযোগ করেন, ‘বিভিন্ন দিক থেকে ইভিএম খারাপের অভিযোগ আসছে। দীর্ঘদিন ভোট করছি, এত মেশিন খারাপের অভিযোগ কোনওদিন শুনিনি। আমি নিশ্চিত এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র আছে।’ এক্ষেত্রে অধৈর্য্য হয়ে চলে না গিয়ে, মানুষকে একটু কষ্ট করে হলেও নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেই বাড়ি ফেরার আবেদন জানান সজল। যদিও ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন ইভিএম-এর ক্ষেত্রে যান্ত্রিক গোলযোগ হতেই পারে। যেখানে যেখানে হচ্ছে, সেক্টর অফিসারদের জানালে, তা ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে।

পাশাপাশি এদিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গেও বচসায় জড়াতে দেখা যায় সজলকে। এই বিষয়ে পালটা সজলকে কটাক্ষ করেন ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। সায়ন্তিকা বলেন, ‘তিনি (সজল ঘোষ) এখন অনেক কিছুই বলবেন। তিনি বুঝে গিয়েছেন, তাঁর ২ বছর সময় চাওয়াতে মানুষ রাজি হয়নি। মানুষ তাঁকে ২ বছর দিতে চায় না। তাই তিনি বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। আশা করব, কেন্দ্রীয় বাহিনী সিন ক্রিয়েট করা থেকে তাঁকে আটাকাবে।’

অন্যদিকে এদিন বরানগর পুরসভার একটি বুথ থেকে পাকড়াও হয় ‘ভুয়ো ভোটার’। বিজেপি প্রার্থী সজল ঘোষ যখন বুথে পৌঁছান, তখন উত্তেজনা চরমে উঠে। এই বিষয়ে সজল ঘোষ বলেন, ‘অনেকক্ষণ ধরে ভুয়ো ভোটারের অভিযোগ পাচ্ছিলাম। দু’টোকে ধরে ফেলেছি। তারপরেই পালিয়ে গিয়েছে।’ এদিকে এদিনই বরানগরে বিজেপির পার্টি অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় এক বিজেপি কর্মীর। ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।

এই বিষয়ে বরানগর পুরসভার কাউন্সিলর তথা নির্বাচন অবজারভার অঞ্জন পাল বলেন, ‘বরানগরের ভোট শান্তিপূর্ণ। সজল ঘোষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এক গাড়ি সিআরপিএফ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বুথ জ্যাম করছেন। ফলে ভোটারদের অসুবিধা হচ্ছে। নিজেও তৃণমূলের লোকেদের উত্যাক্ত করছে, অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করছে। আমাদের আশা সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয় ঘোষণা শুধু সময়ের অপেক্ষা।’ তাঁদের প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সকাল থেকে বিভিন্ন বুথে ঘুরেছেন বলেও জানান এই তৃণমূল কাউন্সিলর।

এদিকে এদিন অশান্তিতে জড়ালেন ওই কেন্দ্রের বাম প্রার্থীও। এদিন ব্রহ্মানন্দ কেশবচন্দ্র কলেজের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে যান সিপিএম প্রার্থী তন্ময় ভট্টাচার্য। সেই সময় সেখানেই উপস্থিত ছিলেন বরানগর পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শান্তনু মজুমদার। তন্ময়ের অভিযোগ, তাঁকে দেখে ‘চোর’ স্লোগান দেওয়া হয়। যদিও পালটা তৃণমূলের অভিযোগ ভোটারদের প্রভাবিত করছিলেন তন্ময়। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের মাঝেই কার্যত ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন বাম প্রার্থী ও তৃণমূল কাউন্সিলর। যদিও সঙ্গে দু’জনকে নিরস্ত করতে ছুটে আসেন দু’পক্ষের লোকজন। প্রসঙ্গত, তাপস রায় এই কেন্দ্রের বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় উপনির্বাচন হচ্ছে বরানগরে। এবার দেখার, পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কাকে বেছে নেয় বরানগরবাসী।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *