Drinking Water Crisis Siliguri : পানীয় জল নিয়ে জলঘোলা শিলিগুড়িতে! কারণ কী? কবে-কোন পথে সমাধান? – drinking water crisis at siliguri municipal corporation know the reason details


জলকষ্টে অতিষ্ট শিলিগুড়ি। গত কয়েকদিনে পানীয় জল নিয়ে হাহাকার গোটা পুরসভা অঞ্চল জুড়ে। সকাল থেকেই নিত্য নৈমিত্তিক কাজকর্ম ছেড়ে বাসিন্দারা লাইন দিচ্ছেন পুরসভার পাঠানো জলের ট্যাঙ্কের সামনে। জল নিয়ে রাজনৈতিক জলঘোলাও নেহাত কম হয়নি। গোটা পুরসভা জুড়ে পানীয় জলের এই সমস্যার সূত্রপাত কোথায়? আসুন, ঘেঁটে দেখা যাক।তিস্তায় হড়পা বান
শিলিগুড়ি পুরসভা অঞ্চলে তিস্তা নদীর জল পরিশ্রুত করে সরবরাহ করা হয়। তবে, বিপত্তি ঘটে গত অক্টোবর মাসে হড়পা বান আসায়। গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়ে বিপর্যয় নেমে আসে। গজলডোবায় তিস্তার নদীবাঁধ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই বাঁধ সংস্কার করতে ১৫ থেকে ২০ দিন তিস্তার জল সরবরাহ বন্ধ রাখা প্রয়োজন। পুরসভা এলাকায় এই কয়দিন তিস্তার জল সরবরাহ বন্ধ রাখতে হয়।

জল ‘দূষণে’র রিপোর্ট
এরপরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মহানন্দার জল পরিশ্রুত করে সরবরাহ করা হবে। মহানন্দার জলে বিওডি-র (বায়োকেমিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড) মাত্রা অত্যন্ত বেশি। গত বুধবার এই জল সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট আসে পুরসভার কাছে। এরপরেই শিলিগুড়ি পুরসভা জুড়ে মহানন্দার সরবরাহ করা জল পান না করার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করে দেওয়া হয়।

মহানন্দার জলে কী সমস্যা?
মহানন্দা নদীর জলকে বিকল্প হিসেবে বাম আমলেও চালানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু, মহানন্দা নদীর গভীরতা কম। ফলে ওই জল তিস্তার মতো শুদ্ধ নয়। ফলত, মহানন্দার জলকে পরিশ্রুত করে সরবরাহ করার প্রক্রিয়া এর আগেও ব্যর্থ হয়েছে। পুরসভা সূত্রে খবর, মহানন্দার জলে বিওডি-র পরিমাণ অতিরিক্ত থাকার কারণে এই জল পান করলেন ডায়েরিয়া, ত্বকের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জলের বিওডি মাত্রা ঠিক থাকায় প্রথম দিকে এই জল সরবরাহ করা হচ্ছিল। পরে রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় জল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। জলের নমুনা সংগ্রহ করে কলকাতায় পাঠানো হয়েছে। মহানন্দা নদীর জল পানীয় যোগ্য করার জন্য মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যান্টও করার কথা ভাবা হয়েছিল। যদিও, সেই প্রকল্প পরবর্তীকালে আর এগোয়নি।

Siliguri Drinking Water Crisis : জলের জন্য হাহাকার শিলিগুড়িতে, জল কিনতে লম্বা লাইন

সমাধান কোন পথে?
পানীয় জল সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে পুরসভা এলাকায় একাধিক জলের ট্যাঙ্ক ও পাউচ পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। জল সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ভিন জেলা থেকেও জল আনার ব্যবস্থা করা হয়। জলপাইগুড়ি, মিরিক থেকে পানীয় জলের ট্যাঙ্ক নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়। যদিও, জল সংকট দেখা দিতেই অনেক জায়গায় প্যাকেটজাত জল নিয়ে কালোবাজারি শুরু করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগে। অনেকেই, সময়মতো পুরসভার পাঠানো ট্যাঙ্কের জল না পেয়ে জল কিনে খাওয়া শুরু করেন। এছাড়া একটি এমটিউই গাড়িকে শিলিগুড়ি পাঠানো হয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের তরফে। শিলিগুড়ি স্থানীয় পুকুরের জল পরিশ্রুত করে পানের যোগ্য করে পাউচ করা বিলি করা হচ্ছে। একটি এমটিইউ গাড়ি থেকে প্রতি দিন দেড় লাখ পাউচ জল উৎপাদন করতে সক্ষম। তিস্তা ব্যারেজ থেকে রবিবার বিকেলেই জল ছাড়ার কথা রয়েছে। ফলত, রবিবার থেকেই জল সমস্যা মিটে যেতে পারে বলেই আশা পুরসভার। জল বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্ত বলেন, ‘তিস্তা ব্যারেজ মেরামত করার কারণেই তিস্তার জল সরবরাহ করা যাচ্ছিল না। সোমবার থেকে তিস্তার জল পাওয়া যাবে। তবে, রবিবারও ট্যাঙ্কের মাধ্যমে ও জলের পাউচ বিলি করা হচ্ছে। খবু শীঘ্রই পানীয় জলের সমস্যা মিটে যাবে।’

Siliguri Drinking Water Supply : আজ বিকেল থেকেই জল সরবরাহ স্বাভাবিক, জানাল শিলিগুড়ি পুরসভা
রাজনৈতিক বাদানুবাদ
পানীয় জল সংকট নিয়ে রাজনৈতিক বাদানুবাদে তপ্ত হয়ে ওঠে শিলিগুড়ি। বিজেপির তরফে পুরসভার সামনে লাগাতার বিক্ষোভ দেখানো হয়। শিলিগুড়ি বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘প্রথমত ২০ দিন ধরে শিলিগুড়ির মানুষ খেলেন। এরপর জল সরবরাহ বন্ধ করার যে ঘোষণা করলেন, তার আগে যে প্রস্তুতি নেওয়া দরকার, সেটা নিতে ব্যর্থ হল পুরসভা। সেই কারণেই আজকে জলের হাহাকার এবং জলের কালোবাজারি শুরু হয়েছে।’ শিলিগুড়ি পুরসভার টনক না নড়া পর্যন্ত সমাধান নেই বলে দাবি বিজেপির। অন্যদিকে, মেয়র গৌতম দেব আগেই দাবি করেছেন, জলের বিওডি লেভেল বেশি থাকার রিপোর্ট আসতেই আমরা তৎক্ষণাৎ জল সরবরাহ বন্ধ করেছি। পুরনিগমের নিজস্ব জলের ট্যাঙ্ক, পাউচের বন্দোবস্ত করে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। রবিবারের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *