বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্র,পাঠান ঝড়ে প্যাভিলিয়নে অধীর চৌধুরী, বহরমপুরে এন্ট্রি তৃণমূলের – adhir chowdhury defeated at baharampur lok sabha election by yusuf pathan


একটানা ২৫ বছরের সাংসদ, বহরমপুরে ‘রবিনহুড’ তিনি। এলাকার প্রায় প্রতিটা মানুষের কাছে তিনি ‘ঘরের মানুষ’। কিন্তু তারপরেও নিজের ঘর বাঁচাতে পারলেন না বহরমপুরের অধীররঞ্জন চৌধুরী। তৃণমূলের প্রার্থী তথা ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানের ঝোড়ো ইনিংসে একেবারে ধরাশায়ী অধীর। তবে পাঁচবারের সাংসদ তথা এমন একজন দাপুটে রাজনীতিবিদকে এভাবে কেন হারতে হল, হল সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিকমহলে। পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করেছে, অধীরের সমর্থনে থাকা হিন্দু ভোটের একটা বড় অংশ চলে গিয়েছে বিজেপির দিকে। অন্যদিকে অধীরের সমর্থনে থাকা মুসলিম ভোটেরও কিছুটা এবার সমর্থন দিয়েছে তৃণমূলের তারকা প্রার্থীকে। আর তার জেরেই ভোটবাক্সে এই হাল হল অধীর চৌধুরীর।নিজের পরাজয় অবশ্য মেনে নিয়েছেন অধীর চৌধুরী। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘আমরা হার স্বীকার করলাম। বাংলার রাজনীতিতে আপাতত আমরা অপ্রাসঙ্গিক হতে চলেছি। খারাপ লাগলেও কিছু করার নেই। আমার ইচ্ছা অনিচ্ছায় কিছু যায় আসে না। হেরেছি, হার নিয়েই খুশি থাকব।’ উল্লেখ্য রাজ্য রাজনীতিতে তৃণমূলের কট্টর বিরোধী বলেই পরিচিত অধীর। প্রাথমিক পর্যায়ে ইন্ডিয়া জোট নিয়ে যখন পর্যালোচনা চলছিল সেই সময় সনিয়া গান্ধী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাছাকাছি আসতে দেখা গেলেও, অধীর কোনওদিনই তৃণমূলকে গুরুত্ব দিতে চাননি। এমনকী রাজ্যে যখন রাহুল গান্ধীর ভারত জোড় ন্যায় যাত্রা চলছিল, সেই সময় কংগ্রেসের জাতীয় নেতা জয়রাম রমেশ বারেবারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়কে সেখানে আমন্ত্রণ জানালেও, সেই বিষয়ে বিশেষ কিছু বলতে শোনা যায়নি অধীরকে। তাহলে কি তৃণমূলের সঙ্গে হাত না মেলানোর খেসারই দিতে হল তাঁকে?

এই প্রশ্নের উত্তরে অধীর বলেন, ‘যা করেছি সচেতনভাবে করেছি। আমরা মনে করেছিলাম, বাংলার মানুষের স্বার্থে একটা ধর্ম নিরপেক্ষ শক্তির উত্থান দরকার। আমরা কোনও ভুল করিনি। আমরা ভেবেছিলাম মুর্শিদাবাদে ৩-৩ পাব। তেমনটাই ভাবনা ছিল। কিন্তু ভোট চলতে চলতেও মানুষের ভাবনাচিন্তা বদলায়। তেমনটাই হয়ত হয়েছে। জোট থাকবে কি না সেটা পরে দেখা যাবে।’

এদিকে জয়ের পরেই ইউসুফকে নিয়ে উল্লাস শুরু করে দিয়েছেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা। এদিন নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনারও একটা ইঙ্গিত দিয়েছেন ইউসুফ। তিনি বলেন, ‘বহরমপুর আমার নতুন বাড়ি। আমার পরিবার ভদোদরায় থাকে। আমি তাদের সঙ্গে থাকব। যখন কাজ থাকবে দিল্লিতে যাব। আর সময় পেলেই বহমপুরে চলে আসব।’ এই ফলাফলের পর দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর কথাও হয়েছে বলে জানান ইউসুফ। এদিকে অধীরের পরাজয় সম্পর্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘তিনি (অধীর চৌধুরী) বিজেপির লোক। মানুষ ঔদ্ধত্যকে প্রত্যাখ্যান করেছে। আমি পাঠানকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’

এককথায় বলতে গেলে খেলার মাঠের মতো, রাজনীতির ময়দানেও ঝোড়ে ব্যাটিংয়ে কার্যত বিপক্ষকে উড়িয়ে দিলেন ইউসুফ। আর এই ফলাফলের সঙ্গেই বহরমপুরের রাজনীতিতে শুরু হল নতুন এক অধ্যায়।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *