এক্সিট পোলের প্রেডিকশন থেকে বিরোধীদের নানা কটাক্ষ, ফুৎকারে উড়িয়ে জয়জয়কার তৃণমূলের। ভোটবাক্সে যে জনগণ আশীর্বাদে ভরিয়ে দিয়েছে, তা বলাই যায়। ঘাটালে দেব, হুগলির রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, যাদবপুরে সায়নী ঘোষ, মেদিনীপুরে জুন মালিয়া, আসানসোলে শত্রুঘ্ন সিনহা থেকে বীরভূমে শতাব্দী রায়- টলিপাড়া দাপিয়ে বেড়ানো তারকাদের চোখ ধাঁধানো পারফরম্যান্স রাজনৈতিক মঞ্চেও।
দীর্ঘদিন রাজনীতির মঞ্চে থাকা বিজেপির তারকা প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালকে হারিয়ে জয়ী জুন মালিয়া। চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির সহকর্মী হয়েও, রাজনীতিতে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বীতা। ঘাটালের মাটি থেকে দেবকে উৎখাত করতে চাওয়া হিরণের পরাজয়ে স্পষ্ট, ‘বাংলা নিজের ‘খোকাবাবু’কেই চায়।’ আবার একটা সময় একসঙ্গে পর্দায় ঝড় তুলেছিলেন বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই লকেটের জেতা আসনেও বড় ব্যবধানে জয় রচনার। রাজনীতিতেও নিজেকে নং ওয়ান হিসেবেই ধরে রাখলেন রচনা।
যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে খানিক তরুণ মুখের লড়াই। গত বিধানসভা নির্বাচনে আসানসোল থেকে পরাজয় সায়নীর। তবু থেমে থাকেননি তিনি। রাজনীতির মাটি আঁকড়ে পড়ে থেকেছেন। সময়ের সঙ্গে হয়েছেন আরও পরিণত। যাদবপুর বরাবরই বদলের ইতিহাস রচনায় সাক্ষী থেকেছে। যুবনেত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়ের মাধ্যমে উত্থান হয়েছিল এই কেন্দ্র থেকেই। সায়নীরও সেই ধারা অব্যাহত।
একটা সময় সিনেমার পর্দা দাপিয়ে বেড়িয়েছেন শতাব্দী। তাপস-প্রসেনজিৎ জুটিতে দর্শকদের উপহার দিয়েছেন সুপার-ডুপার হিট ছবি। পরবর্তীকালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে যোগ্য যোদ্ধা হয়ে উঠেছেন তিনি। টানা চারবারের সাংসদ শতাব্দী। অনুব্রতহীন বীরভূমে দাপটের সঙ্গে নির্বাচন জয় নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বলা চলে। আবার বিজেপির সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়াকে হারিয়ে আসানসোলে বলিউড কাঁপানো শক্রঘ্ন সিনহার জয়ও নজরকাড়া বলা চলে।
সিনেমা-টেলিভিশন থেকে রাজনীতির মঞ্চ, তারকা প্রার্থীরা যে দলনেত্রীর ভরসা রাখতে সক্ষম হয়েছেন, তা বলাই যায়। অন্যদিকে, ফুলটাইম রাজনীতিতে থেকেও যে আদতে জয়ের হাসি ফুটল না বিরোধীদের, তা লকেট চট্টোপাধ্যায়, অগ্নিমিত্রা পাল, হিরণ চট্টোপাধ্যায় থেকে বামনেতা দেবদূত ঘোষ-এর ভোটফলেই প্রমাণিত।