তার পর ঠিক করেন, রাজনীতিতে আসবেন। প্রচার শুরু করার পর তাঁকে নিয়ে মাত্রাছাড়া ট্রোলিং শুরু হয়। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া যতই মিমে ভরে যাক, হুগলিতে গেলে বোঝা যাচ্ছিল, মহিলাদের মধ্যে কী পরিমাণ জনপ্রিয় ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’-এর সঞ্চালক। মঙ্গলবার সকাল ১১টা। ফোনের ওপারে রচনার গলায় উচ্ছ্বাস।
দু’মাস রাজনীতিতে এসেই পোক্ত রাজনীতিক লকেট চট্টোপাধ্যায়কে হারিয়ে দিচ্ছেন- কতটা উচ্ছ্বসিত?
‘আমার উচ্ছ্বাস নিজের জেতার জন্য নয়। তৃণমূল কংগ্রেস এত ভালো ফল করেছে বলে আমি অসম্ভব খুশি’, বললেন রচনা। জিতলে হুগলির মানুষের জন্য বিভিন্ন কাজ করতে চান, এমন দাবি করেছিলেন রচনা।
কী-কী কাজ করবেন, সেটা ভাবলেন?
রচনার উত্তর, ‘আমি কী-কী করতে চাই কিছুটা ভেবে রেখেছি। তবে এই নিয়ে দিদির সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। উনি যেরকম বলবেন, সেই অনুযায়ী কাজ এগিয়ে নিয়ে যাব’, বলছেন অভিনেত্রী।
এত ট্রোলড হওয়ার পর জয় ছিনিয়ে আনলেন, সেটা নিয়ে ভাবনা কী?
‘যাঁরা ট্রোল করেছেন, সকলের জন্য রুমাল পাঠাব। যাতে চোখের জল মুছতে পারেন! ওঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ট্রোল করতে ছাড়েন না। আমাকে ট্রোল করবেন, সেটাই স্বাভাবিক। তবে আগেই বলেছি, লোকে ট্রোল করুন বা মিম বানান, তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমি কর্মফলে বিশ্বাস করি। নিজের ১০০ শতাংশ দিয়ে কাজ করেছি শেষ দু’ মাস। বাকিটা কপালের উপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। ‘
এর পর রচনা যোগ করলেন, ‘আমি জীবনের এই ৬০ দিন চিরকাল মনে রাখব। এত পরিশ্রম জীবনে কখনও করতে হয়নি। আমি জিতেছি। মানুষের জন্য কাজ করতে পারব। কিন্তু যদি হারতাম, তা হলেও এটা চোখের সামনে দেখেছি, কী পরিমাণ ভালোবাসেন আমাকে হুগলির মানুষ। সেই ভালোবাসা, উন্মাদনা কখনও মিথ্যে হতে পারে না।’
এক সময়ের বন্ধু লকেট চট্টোপাধ্যায়কে হারালেন। তাঁকে কী বলতে চান?
‘লকেট এখনও আমার বন্ধু। দু’জনের কথা হয়নি বহু দিন, সেটা ঠিক। তা বলে একজন অন্যজনের শত্রু হয়ে যাব এরকম নয়। ওঁর জন্য আমার শুভেচ্ছা রইল’, বলছেন রচনা। হুগলিতে জয় ছিনিয়ে আনা কঠিন ছিল, স্বীকার করলেন অভিনেত্রী। ‘এমন একটা সিট, সেখানে উল্টোদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি লড়ছেন, সেখানে আমার জন্য কাজটা কত কঠিন ছিল, তা জলের মতো পরিষ্কার’, বলতে-বলতে গলা ধরে আসে রচনার।
‘দিদি নাম্বার ওয়ান’-এ সময় দিতে পারবেন?
‘প্রচারপর্বের সময়ে ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’-এর শুটিং বন্ধ করতে পারিনি। ওটা আমার প্রায়োরিটি। ওটা ছেড়ে দিলে মানুষ আমার উপর রেগে যাবেন’, বলছেন রচনা। সিনেমার দুনিয়া থেকে আসা কিছু প্রার্থী জিতে যাওয়ার পর এলাকায় কাজ করেননি, এমন অভিযোগ উঠেছে অতীতে।
আপনি হুগলির মানুষের পাশে থাকবেন তো?
‘আমি বিভিন্ন দিক ব্যালান্স করে চলতে পারি। ইচ্ছা থাকলে সেটা করা যায়। যাঁরা আমাকে ভোট দিয়ে জেতালেন, তাঁদের টেকেন ফর গ্রান্টেড করতে পারি না। হুগলির মানুষের জন্য কাজ করতেই হবে। আমার কাজের চাপ বাড়বে। বেড়াতে যাওয়া কমাতে হবে’, বললেন অভিনেত্রী।
সামনে কোথায় বেড়াতে যাবেন
‘এখনই হবে না। তবে ছেলের সঙ্গে একটা ভেকেশনের প্ল্যান করতে হবে’, বক্তব্য তাঁর।
এই জয়ের সেলিব্রেশনে কী মেনু থাকবে? রচনা বলছেন, ‘আমার শাশুড়ি সম্প্রতি মারা গিয়েছেন। আজকে সিদ্ধভাত খেয়ে আছি। অশৌচ মিটলে একদিন বিরিয়ানি খেতে পারি। একটা দিন চাইনিজ় খাওয়ার প্ল্যান আছে। কাছের বন্ধুদের নিয়ে সেলিব্রেট করব।’