বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই দু’টি কেন্দ্রে একাধিক ফ্যাক্টর কাজ করেছে। ইশা খানের রাজনৈতিক লড়াই-ভোট যুদ্ধ কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের কথা মনে করিয়ে দেয়। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে সুজাপুর কেন্দ্রে নিজের কাকা, তৃণমূল প্রার্থী আবু নাসের খান চৌধুরীকে হারান তিনি। ২০১৯-এ লোকসভা ভোটে পিসতুতো বোন মৌসম বেনজির নুরের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াই হয় মালদা উত্তরে।
সেবারে দু’জনেই হেরে যান বিজেপির খগেন মুর্মুর কাছে। এবারে ইশার প্লাস পয়েন্ট বলতে পাশে ছিল জোটসঙ্গী সিপিএম। কিন্তু সারা রাজ্যে যখন সংখ্যালঘু ভোটে ঝুলি ভরেছে তৃণমূলের, সেখানে এই কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোটের একটা বড় অংশ গিয়েছে ইশার খাতায়।রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, এর পিছনে রয়েছে স্থানীয় আবেগ। কোতোয়ালির গণি পরিবারের কোনও প্রতিনিধি সংসদে থাকবে না—এই প্রচার স্থানীয় ভোটারদের মনে বড় ছাপ ফেলেছিল।
এর পরে যেটা পড়ে রইল, তা হলো তৃণমূলের নিজেদের কোন্দল। পুরোনো এই রোগ বরাবরই ভুগিয়েছে শাসক দলকে। সেই রোগই যুদ্ধক্ষেত্রে মোক্ষম সময়ে তৃণমূলের রথের চাকা বসিয়ে দিল বলে মনে করছেন ভোট বিশেষজ্ঞেরা। শেষ পর্যন্ত ইশা জিতলেন ১ লক্ষ ১৫ হাজার ভোটে।
গত বছর কোতোয়ালির চৌধুরী বাড়ির দুই সদস্যের ভোট কাটাকাটিতে জিতে গিয়েছিলেন বিজেপির খগেন মুর্মু। এবার আর সেই ফ্যাক্টর ছিল না। তার পরেও মালদা উত্তর কেন্দ্র দখল করতে পারল না তৃণমূল। আইপিএস অফিসার প্রসূন দীর্ঘদিন মালদার দায়িত্বে ছিলেন। ফলে এই জেলা তাঁর হাতের তালুর মতো চেনা। রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গেও তাঁর কানেকশন তর্কাতীত। তার পরেও ভাগ্যে শিকে ছিঁড়ল না তাঁর।
ভোট বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এখানে হিন্দু ভোটের পুরোটাই গিয়েছে বিজেপির বাক্সে। তার থেকেও বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩ লক্ষ মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক। যার প্রায় পুরোটাই খগেন পেয়েছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।