Bharatiya Janata Party : দায় কার? নেতৃত্বের ভার নেবেন কে, জল্পনা বঙ্গ বিজেপিতে – lok sabha election results 2024 who will take leadership bharatiya janata party from of west bengal speculation


মণিপুস্পক সেনগুপ্ত, এই সময়
ছিল ১৮। হয়ে গেল ১২। এই দায় কার? মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে প্রশ্নটা খুব জোরালোভাবেই উঠতে শুরু করেছে বঙ্গ-বিজেপিতে। সঙ্গে জুড়েছে আরও একটা প্রশ্ন, বাংলায় বিজেপির ‘মুখ’রা তো সবাই মুখ থুবড়ে পড়েছেন। তা হলে এ বার নতুন মুখ কে পদ্মে? তৃণমূলের সাফল্যের কারণ অনুসন্ধান করার থেকেও এই প্রশ্নগুলির সদুত্তর খোঁজাই এখন বেশি জরুরি গেরুয়া শিবিরের।খাতায়-কলমে সুকান্ত মজুমদার বিজেপির রাজ্য সভাপতি হলেও দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এ বারের লোকসভা ভোটে বাজি ধরেছিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর উপর। তাঁকে কার্যত ‘ফ্রি-হ্যান্ড’ দিয়ে রেখেছিলেন অমিত শাহরা। বাংলায় দলের রণকৌশল কী হবে, কাকে কোন আসনে টিকিট দেওয়া হবে, এ বিষয়ে শুভেন্দুর মতামতকেই নির্বাচনী পর্বে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে দিল্লি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ভরসা পেয়ে শুভেন্দুও নিজের মতো করে এ রাজ্যে লোকসভা ভোটের ঘুঁটি সাজিয়েছেন।

সূত্রের খবর, দিলীপ ঘোষকে মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে বর্ধমান-দুর্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল শুভেন্দুর পরিকল্পনাতেই। রাজ্য বিজেপির এক পদাধিকারীর কথায়, ‘দিলীপদা চাননি। তবুও মেদিনীপুর ছাড়তে হয়েছিল তাঁকে। গত লোকসভায় এই কেন্দ্রে ৮৯ হাজারের বেশি ভোটে জিতেছিলেন দিলীপ ঘোষ। দলের অন্দরে শুভেন্দুবাবুর যুক্তি ছিল, মেদিনীপুর থেকে দিলীপ ঘোষ লড়লে কুড়মি সম্প্রদায়ের ভোট বিজেপি পাবে না। তাই মেদিনীপুরে অগ্নিমিত্রাকে প্রার্থী করার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন তিনি।’

বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের আক্ষেপ, ‘মেদিনীপুর থেকে দিলীপ ঘোষ লড়লে হয়তো ফলাফল অন্যরকম হতে পারত। অগ্নিমিত্রা আর দিলীপ, দু’জনেই দুই অচেনা কেন্দ্রে গিয়ে ঘর গোছাতে পারলেন না।’ শুভেন্দুর ‘পছন্দ’ হিসেবে বেশ কয়েকজন বিধায়ককেও এ বার টিকিট দিয়েছে বিজেপি। এঁরা হলেন, অসীম সরকার, অগ্নিমিত্রা পল, হিরণয় চট্টোপাধ্যায়, স্বপন মজুমদার ও গৌরীশঙ্কর ঘোষ।

এদিন ফল প্রকাশের পর দেখা গেল, বিধানসভার বিরোধী দলনেতার পছন্দের বিধায়করা সবাই হেরেছেন। মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা লড়েছিলেন আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্র থেকে। তিনি জিতেছেন। কিন্তু বিজেপির অন্দরের গোষ্ঠী সমীকরণের ক্ষেত্রে তাতে শুভেন্দুর কোনও লাভ হবে না। কারণ, মনোজের ঘোর-বিরোধীরাও বলতে পারবেন না, তিনি শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ।

নিজের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের দু’টি লোকসভা কেন্দ্রে অবশ্য হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর জিতে গিয়েছেন শুভেন্দুর পছন্দের প্রার্থীরা। নন্দীগ্রাম বিধানসভাও লিড দিয়েছে বিজেপিকে। এদিন সন্ধ্যায় কাঁথিতে সাংবাদিক বৈঠক করে শুভেন্দু তাঁর এই ‘সাফল্য’টুকুর উপরই আলো ফেলার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, ‘আমার জেলার দু’টি আসনই বিজেপির দখলে এসেছে। নন্দীগ্রাম আমাদের লিড দিয়েছে। এর পর আর কেউ বলতে পারবেন না, অনৈতিকভাবে আমি নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়েছিলাম।’

যদিও বাংলার এক বিজেপি নেতার টিপ্পনি, ‘শুভেন্দুদা বড় নেতা। তাই তো তাঁকে পূর্ব মেদিনীপুরের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে নরেন্দ্র মোদীরা গোটা বাংলার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। ফলে শুভেন্দুদার মূল্যায়ন শুধু পূর্ব মেদিনীপুর নয়, গোটা রাজ্যে বিজেপির ফলাফলের নিরিখে করতে হবে।’

Election Result 2024 Lok Sabha : হাফ টার্গেটই অমিল! ঘাসফুল ঝড়ে ধরাশায়ী BJP-র কোন হেভিওয়েটরা?

সুকান্ত মজুমদার বিজেপির রাজ্য সভাপতি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বালুরঘাট থেকে লড়ে তিনি কোনওমতে জিতেছেন ঠিকই, কিন্তু বাংলায় বিজেপির ১৮ থেকে কমে ১২ হয়ে যাওয়ার দায় তিনিও এড়াতে পারবেন না। যদিও দলের তাঁর ঘনিষ্ঠদের যুক্তি, এ বারের ভোটটা শুভেন্দু একা হাতেই সামলেছেন। ফলে সুকান্ত মজুমদারের কোনও দায়ভার নেই।

পড়ে রইলেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর জমানাতেই বাংলায় বিজেপির উত্থান হয়েছিল। দিলীপের নেতৃত্বেই ২০১৯-এ রাজ্য থেকে ১৮টি আসন জিতেছিল বিজেপি। কিন্তু কেন্দ্র বদলে তিনিও এ বার হেরে বসে আছেন। ফলে তাঁকে আবার বাংলার রাজ্যপাট সামলানোর দায়িত্ব দিল্লি থেকে দেওয়া হবে, সে সম্ভাবনা কম বলেই অভিমত রাজনৈতিক মহলের। তা হলে কে হবেন বঙ্গ-বিজেপির নতুন মুখ? উত্তর নেই পদ্মে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *