এক সময়ে অভিনয় জগতে তাঁরই সহকর্মী ও বিদায়ী সাংসদ বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায়কে ৭৬,২২৭ ভোটের বেশি ব্যবধানে হারিয়ে রচনা আসনটি পুনরুদ্ধার করে তাঁর ‘দিদি’ তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দিয়েছেন। তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় ছিলেন আসানসোলে বলিউডের প্রবীণ অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা, ঘাটালের দীপক অধিকারী (দেব), বীরভূমে শতাব্দী রায়, যাদবপুরে সায়নী ঘোষ এবং মেদিনীপুরে জুন মালিয়ারাও।
তারকা হিসাবে তাঁরা সবাই লোকসভা ভোটে জয়ী হয়েছেন। একই সঙ্গে বরাহনগর বিধানসভার উপনির্বাচনেও রাজ্যের শাসক দলের প্রার্থী হয়েছিলেন অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিও নিকটতম বিজেপি প্রার্থী সজল ঘোষকে আট হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত করেছেন। উল্টোদিকে ভোটে হেরেছেন ঘাটালে বিজেপির প্রার্থী তথা অভিনেতা হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায় (হিরণ)।
লোকসভার ভোট ঘোষণার আগেই ১০ মার্চ তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বহরমপুরে প্রার্থী হিসাবে ইউসুফের নাম ঘোষণার পরই গুজরাতের ভদোদরার বাসিন্দার নাম শুনে বিস্ময় তৈরি হয়েছিল রাজনৈতিক মহলে। লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতাকে পরাস্ত করার পর ইউসুফ এদিন বলেন, ‘শিশুদের জন্য স্পোর্টস অ্যাকাডেমি বানাব। জেলায় বন্ধ হওয়া কারখানা চালুর চেষ্টা করা হবে। প্রচুর মানুষের চাকরি হবে।’
তাঁর সংযোজন, ‘বহরমপুরের মানুষ আমাকে ভালোবাসা দিয়েছে। ভাই ও বন্ধু হয়ে ওদের কাজ করব।’ প্রচারের প্রথম দিন হুগলিতে ‘শিল্পের ধোঁয়া’ দেখেছিলেন রচনা। দই খেয়ে সিঙ্গুরের গোরুরও প্রশংসা করেছেন। তা নিয়ে সমাজমাধ্যমে ‘মিম’-এর বন্যা বয়ে গিয়েছিল। বিজেপি প্রার্থীকে হারিয়ে রচনা এদিন বলেন, ‘বলতে পারব না, এখন কে ধোঁয়া দেখছেন। পরের বার এক প্লেট দই নিয়েই বসে কথা বলব।’
ঘাটালে তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে দেবকে নিয়ে শাসকের অন্দরে কম টানাপড়েন হয়নি। এমনকী ভোটের ক’দিন আগেও তাঁকে লক্ষ্য করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী গোরু পাচার মামলা নিয়ে খোঁচা দিয়েছিলেন। এদিন দেব বলেন, ‘ভারতের যে রেজাল্ট এসেছে, তাতে বোঝাই যাচ্ছে, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান হওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা। কাল রাতেও শুভেন্দু অনেক কিছু বলেছেন। আমি কোনওদিনই জবাব দিইনি, আজ সবাই আমার হয়ে ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্র জবাব দিয়েছে।’ সোশ্যাল মিডিয়ায় স্টেটাসে লেখেন, ‘গ্র্যাটিটিউড।’ যার বাংলা অর্থ ‘কৃতজ্ঞতা’।