রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যায়, অর্জুনের দলবদলু তকমা ভোটাররা ভালোভাবে নেননি। এটা যেমন একটা কারণ হতে পারে, তেমনই এখানকার বেশির ভাগ মানুষ গরিব হওয়ায়, তাঁদের একটা বড় অংশের ভোট গিয়েছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের পক্ষে। ফলে অর্জুন সিংয়ের ব্যবধান সেই যুক্তিতেও কমে থাকতে পারে।
উল্লেখ্য, এ বার ভোটের ঠিক আগে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পাঁচশো থেকে বাড়িয়ে হাজার করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত লোকসভার তুলনায় ভাটপাড়ায় এ বার অর্জুনে ভোট কমেছে ১২ হাজার। সেটা যে অর্জুনকে চিন্তায় রাখছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে তাঁর সান্ত্বনা একটাই— ভাটপাড়ায় ভোট কমলেও মার্জিন অর্জুনের পক্ষেই রয়েছে। কিন্তু ভাটপাড়া বাদে ব্যারাকপুর লোকসভার বাকি ছয় বিধানসভাতেই অর্জুন সিং একেবারে ধরাশায়ী হয়েছেন।
তৃণমূলের পার্থ ভৌমিক সর্বোচ্চ লিড নিয়েছেন আমডাঙা থেকে। যে আমডাঙা নিয়ে গণনার দিন পর্যন্ত আত্মবিশ্বাসী ছিলেন অর্জুন সিং। সেখানে ৩৫ হাজার ২৭৩ ভোটে লিড নিয়েছে তৃণমূল। পার্থ ভৌমিক তাঁর নিজের বিধানসভা নৈহাটি থেকে ১৫ হাজার ৫১৮ ভোটের লিড নিয়েছেন। তৃতীয় স্থানে নোয়াপাড়া। যেখানে ২০১৯ সালে অর্জুন সিং মাত্র ৫২৬ ভোটে পিছিয়ে ছিলেন, সেখানে এবার তৃণমূলের ব্যবধান বেড়ে হয়েছে ১১ হাজার ৮৫৯।
এ ছাড়া বীজপুর থেকে ৯ হাজার ৬৭১, জগদ্দল থেকে ৫ হাজার ৯৮৪ এবং ব্যারাকপুর থেকে ৩ হাজার ৪৬০ ভোটে লিড রয়েছে তৃণমূলের। যে অর্জুন সিং ২০১৯ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়ে প্রায় ১৪ হাজার ভোটে জিতেছিলেন, সেই অর্জুন এবার ফের তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এসে পার্থ ভৌমিকের কাছে ৬৪ হাজার ৪৩৮ ভোটে হারলেন।
জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম বলেন, ‘দলনেত্রীর নির্দেশে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করেছি। সেই লড়াইয়ে জয় এসেছে আমাদের। গড় কারও হয় না। আগামী দিনে ভাটপাড়া থেকে তৃণমূলের জয়ের মার্জিন আরও বাড়ানো আমাদের লক্ষ্য।’
এ দিনই ভাটপাড়ায় দলের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন পার্থ ভৌমিক। পরে পার্থ বলেন, ‘২০২৬-এ ভাটপাড়া জিতে দলনেত্রীর হাতে তুলে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।’