Lakshmir Bhandar,মায়ের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকায় মোবাইল রিচার্জ করে পড়াশোনা, ডাক্তারিতে চান্স বীরভূমের রাহুলের – birbhum nalhati poor student get chance in medical studies good news


দিনে বাবার চায়ের দোকানের কাজ সেরে বাকি সময়ে পড়াশোনা। এমনকী পড়াশোনার জন্য রাতের পর রাত জাগতে হয়েছে তাঁকে। আর সেই কঠোর পরিশ্রমের ফলস্বরূপ প্রথমবার ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়েই ৭২০ নম্বরের পরীক্ষায় ৬৭৩ পেলেন বীরভূমের নলহাটির কয়থার বাসিন্দা মেহফুজ আলম ওরফে রাহুল। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ১২ হাজারের কাছাকাছি রয়েছে তাঁর র‍্যাঙ্ক। আর এই সাফল্যের নেপথ্যে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের। স্বাভাবিকভাবেই খুশির হাওয়া তাঁর পরিবার ও প্রতিবেশীদের মধ্যে।ফোন থেকেই পড়াশোনা
এই প্রসঙ্গে রাহুলের পরিবার জানাচ্ছে, কয়থা উচ্চ বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় গরুর দুধ বিক্রি করে একটি ফোন কিনেছিলেন রাহুল। সেটির মাধ্যমেই ইন্টারনেটে পড়াশোনা করে তাঁর এই সাফল্য। করোনাকালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসা হয়নি। তবে রেজাল্টে এসেছিল ৯২ শতাংশ নম্বর। পরবর্তীতে উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন রাহুল। যদিও প্রথমে অবশ্য ডাক্তারি নিয়ে পড়াশোনা করার ইচ্ছা ছিল না তাঁর। বরং ইচ্ছা ছিল সরকারি চাকরি করার। কিন্তু সেই পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি। পরবর্তীতে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনার করার ইচ্ছা হয়। যদিও ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার খরচ তাঁর বাবা চালাতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ ছিল। অবশেষে ডাক্তারি পড়ারই সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

রাহুলের কথায়, ‘প্রথম ইচ্ছা ছিল নেভিতে যাওয়ার। মাঠের পরীক্ষায় পাশ করতে পারিনি। পরে ডাক্তার হওয়ার কথা ভাবি। মোবাইলে বিভিন্ন কোচিং-এর ক্লাস শুনতাম। বাড়িতে কম্পিউটার নেই। একটা টিভি ছিল, সেটিও খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। বাবার চায়ের দোকান চালাতে গিয়ে অনেক কিছুই আমাকে ছাড়তে হয়েছে। তবে আমি খুশি।’

কাজে লেগেছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার
এই বিষয়ে রাহুলের বলেন, ‘কয়থা বাসস্ট্যান্ডের হাসপাতাল মোড়ের দোকানটি আমার বাবা আমাকে দিয়ে গিয়েছিলেন। এখন আমি আর ছেলে দু’জনে মিলে এই দোকান চালাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাড়িতে একটি দুধেল গাই আছে। ১০ কেজি করে দুধ দেয়। সেই দুধ বিক্রি করেই ছেলের বই কেনা হয়েছে।’ অন্যদিকে রাহুলের মা বলেন, ‘আমি লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পাই। সেই টাকা থেকে ছেলেকে ইন্টারনেট রিচার্জ করে দিই। সেই ফোন দিয়েই ও পড়াশোনা করেছে।’

আগামীদিনে পড়াশোনার খরচ কী ভাবে চালাবেন, সেই বিষয়েও এখন থেকেই মোটামুটি পরিকল্পনা সেরে ফেলেছেন রাহুল। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে শিক্ষা ঋণ নেওয়ার কথা ভেবেছেন তিনি। রাহুলের এই সাফল্য রীতিমতো চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে গোটা এলাকায়।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *