Mamata Banerjee,স্ট্রাইক রেটে নরেন্দ্র মোদী, রাহুল গান্ধীকে পিছনে ফেলে দিদি-ই নাম্বার-১! – lok sabha election results 2024 cm mamata banerjee strike rate increasing than pm narendra modi in five years


দেশজুড়ে ব্র্যান্ড-মোদী যে আর কাজ করছে না, গত ৪ জুন লোকসভার ফলাফলেই তা স্পষ্ট হয়েছে। বিজেপি ২৭২ আসনের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার ফিনিশিং লাইনের অনেক আগেই থেমে গিয়েছে। লোকসভা ভোটের ফল নিয়ে ময়নাতদন্ত শুরু হতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে মোদীর জনমোহিনী ক্ষমতা-ও অস্তমিত হওয়ার পথে। অথচ শুরুটা হয়েছিল বেশ চমক দিয়ে। চারশো আসনের টার্গেট বেঁধে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই। যা নিয়ে দেশভর আলোচনা শুরু হয়ে যায়।নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষিত হওয়ার পরে গত মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত সারা ভারত ঘুরে নরেন্দ্র মোদী প্রচারের ঝড় তোলার চেষ্টা করেছেন। এই দীর্ঘ সময়ে মোদী ১৫১ টি লোকসভা কেন্দ্রে প্রচার করলেও পরিসংখ্যান বলছে, এরমধ্যে ৮৫টি আসনে বিজেপি জয়ী হতে পেরেছে। অর্থাৎ, মোদীর সাফল্যের হার ৫৬ শতাংশ।

সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গে ৪২টি লোকসভা কেন্দ্র ছাড়াও অসমে একটি আসনে প্রচার করেছিলেন। তৃণমূলনেত্রী যতগুলি লোকসভা কেন্দ্রে প্রচার করেছেন তার মধ্যে জোড়াফুল ২৯টি আসনে জয়ী হয়েছে। এক্ষেত্রে মমতা-র স্ট্রাইক রেট ৬৯ শতাংশ। ঠিক পাঁচ বছর আগে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলনেত্রীর স্ট্রাইক রেট ছিল ৫২ শতাংশ। পাঁচ বছরের ব্যবধানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর স্ট্রাইক রেট আরও বৃদ্ধি করলেও মোদীর সাফল্যের হার ২৯ শতাংশ কমে গিয়েছে।

অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ৬৬টি লোকসভা কেন্দ্রে প্রচার করে ইন্ডিয়া জোটকে ৩২ আসনে জয়ী করেছেন। সাফল্যের নিরিখে তাঁর স্ট্রাইক রেট ৪৮ শতাংশ। মোদী মিথের এই বিপর্যয় দেখে বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা, তথা দমদমের সাংসদ সৌগত রায়ের কটাক্ষ, ‘উত্তরপ্রদেশের ফলাফল দেখিয়ে দিয়েছে মোদীর জনপ্রিয়তার গ্রাফ নিম্নমুখী। যে রামমন্দির ছিল বিজেপির উত্থানের হাতিয়ার, সেই রামমন্দিরের উদ্বোধন করেও মোদী উত্তরপ্রদেশে ব্যর্থ। জনপ্রিয়তা কমছে বুঝেই ওঁকে এত সভা করতে হয়েছে। আগামী দিনে ওর সাফল্যের হার আরও কমবে।’

মোদীর জনপ্রিয়তায় ভাঁটার টান শুরু হলেও মমতা-ম্যাজিক অব্যহত থাকার নেপথ্যে তৃণমূলনেত্রীর বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্প, কেন্দ্রীয় বঞ্চনাই মূল কারণ বলে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো সাংসদরা মনে করছেন। ২০১৯ সালে পুলওয়ামা-বালাকোটের ঘটনাবলির পরে মোদী নির্বাচনী প্রচারে নেমে দেশে ১০৩ টি লোকসভায় সভা করেছিলেন। এরমধ্যে এনডিএ মাত্র ১৭ টি আসনে পরাজিত হয়েছিল। সাফল্যের রিপোর্ট কার্ডে ৮৫ শতাংশ স্ট্রাইক রেটে ছিল মোদীর।

পশ্চিমবঙ্গে এবার মোদী ২৪টি জনসভা-রোড’শো করে রাজ্যের ৪২টি আসন ছুঁয়েছেন। কৃষ্ণনগর ও বারাসত লোকসভায় এবার দু’বার সভা করেছেন তিনি। ২০১৯ সালে এর অর্ধেকের কম জনসভা করেও বিজেপির ঝুলিতে ১৮ টি আসন গিয়েছিল। সেখানে এবার ১২টি আসনে বিজেপি জয়ী হয়েছে।

উত্তরপ্রদেশেও মোদী দু’ডজনের বেশি জনসভা করেছেন। কিন্তু রাহুল ও অখিলেশ যাদবের জোড়াফলার সামনে গেরুয়া শিবির পিছু হঠেছে। বিজেপি দক্ষিণে বড় ব্রেক-থ্রু’র আশা করলেও তামিলনাড়ুতে খাতাই খুলতে পারেনি। কেবল কেরালায় এই প্রথম একটি আসনে পদ্ম ফুটেছে। সার্বিক ভাবে দেখতে গেলে দাক্ষিণাত্যে মোদীর স্ট্রাইক রেট আরও খারাপ।

অথচ, গত ১০ বছরে এই মিথ তৈরি হয়েছিল যে, লোকসভা নির্বাচনে মোদী প্রচারে গেলে, সেখানে গেরুয়া শিবির লড়াইয়ের ক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়ে যায়। সেই মিথ এবার অবশ্য ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। মোদী ম্যাজিক দেশের গ্রামাঞ্চলেও আর দাগ কাটছে না বলে মনে করছেন সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি। নির্বাচনী ফলাফলের পরিসংখ্যান তুলে ধরে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক দেখিয়েছেন, দেশের ৩৪৪টি গ্রামীণ লোকসভার মধ্যে ১৫৯ টি আসনে বিজেপি এবার পরাজিত হয়েছে। ২০১৯ সালে এই আসনগুলি গেরুয়া ব্রিগেড দখল করেছিল।

Election Result Highlights: সংখ্যালঘু, তফসিলি ভোটের সিংহভাগই জোড়াফুলের ঘরে

পরিসংখ্যান তুলে ধরে সীতারামের বক্তব্য, ‘নোটবন্দি, অপরিকল্পিত লক-ডাউন পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা বৃদ্ধি করেছিল। একশো দিনের কাজে বরাদ্দ কাটছাঁট করে, মজুরি বৃদ্ধি না করে গ্রামীণ অর্থনীতিকে পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছে। দেশের গ্রামীণ জনতা মোদীর চারশো পারের স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে দিয়েছে।’

যদিও মোদী ম্যাজিক অস্তগামী বলে মানতে নারাজ বিজেপি। দলের রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘নরেন্দ্র মোদীর জনপ্রিয়তা অটুট। মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট সহ বহু রাজ্যের ফলাফল তার প্রমাণ দেয়। প্রধানমন্ত্রী এসে সভা করলেই দল জিতে যাবে এমন ভাবনা অতি সরলীকরণ। নেতৃত্বের প্রচারের সঙ্গে কার্যকর্তাদের কাজ জয়-পরাজয় নির্ধারণ করে দেয়।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *