এ বারের লোকসভা ভোটে ভাঙড় বিধানসভায় ৪২ হাজার লিড দিয়েছে তৃণমূল। সেই লিডের অন্যতম কাণ্ডারি হিসেবে ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা ভাঙড়ে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত শওকত মোল্লার নাম উঠে আসছে। ভোট মিটতে সেই শওকতই এ দিন বৈঠক ডেকে পঞ্চায়েত সমিতির জটিলতা কাটাতে উদ্যোগী হন বলে তৃণমূল সূত্রে বলা হচ্ছে।
২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে লাগামছাড়া হিংসার সাক্ষী ছিল ভাঙড়। সে বার ভাঙড়ে সাত জন মানুষের প্রাণ গিয়েছিল। সেই ভোটে জিতে ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হন আরাবুল ইসলাম। গত বছর ১২ অগস্ট সভাপতি পদে তিনি শপথ নেন। সব ঠিকঠাক চললেও ৮ ফেব্রুয়ারি, পঞ্চায়েত ভোটে বিজয়গঞ্জ বাজারে আইএসএফ কর্মী খুনের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় আরাবুল ইসলামকে।
তারপর থেকে টানা চার মাস তিনি জেলবন্দি। ফলে পঞ্চায়েতের কাজে তাঁকে আর পাওয়া যাচ্ছে না। যদিও লোকসভা ভোটের কারণে গত তিন মাস উন্নয়নমূলক কাজকর্ম সব বন্ধই ছিল। তবে ভোট মিটতেই সব কাজ শুরু হবে বলে খবর প্রশাসন সূত্রে। এই পরিস্থিতিতে আরাবুলের গরহাজিরায় পঞ্চায়েত সমিতির স্বাভাবিক কাজকর্মে যাতে বিঘ্ন না ঘটে তাই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর তৃণমূল সূত্রে।
তবে আরাবুল অনুগামীদের আশঙ্কা, আরাবুল জামিন পেয়ে এলাকায় ফিরলেও হয়তো তাঁকে আর সভাপতির পদে রাখা হবে না। কারণ পঞ্চায়েত ভোটে বিজয়গঞ্জ বাজারে আইএসএফ কর্মী খুনের ঘটনায় একাধিক তৃণমূল নেতার নাম এফআইআরে থাকলেও সবাইকে ছেড়ে কেবল আরাবুলকেঅ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগে ভাঙড় ২ ব্লক তৃণমূলের আহ্বায়ক পদ থেকেও সরানো হয়েছিল আরাবুলকে। তাঁর অনুগামীদের বক্তব্য, এ বার ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির পদ থেকে সরানোরও প্রক্রিয়া শুরু হলো।
ও দিকে, যত দিন যাচ্ছে ভাঙড়ে আইএসএফের ভাঙ্গন তত প্রকট হচ্ছে। ইতি মধ্যেই চার জন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য এবং কয়েকশো কর্মী তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। সূত্রের খবর, এ বার পঞ্চায়েত সমিতিতে নির্বাচিত আইএসএফের কয়েকজন সদস্যও তৃণমূলের যোগদান করতে চলেছেন। আগামী মঙ্গলবার বিজয়গঞ্জ বাজারে সায়নী ঘোষ, শওকত মোল্লারা বিজয় উৎসব পালন করবেন। সেই মঞ্চেই আইএসএফের তাবড় নেতৃত্ব ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা তৃণমূলের যোগদান করবেন বলে জানা গিয়েছে।