মন্ত্রিত্বের আশা ছাড়ছেন না বাংলার বিজেপি সাংসদরা। এনডিএ শরিকদের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের দর-কষাকষির মধ্যেই দিল্লির দরবারে হাজির বঙ্গ-বিজেপি। তাদেরও দাবি, বাংলার জন্য দু’-একটি মন্ত্রক চাই-ই। বাংলার বিজেপি নেতাদের আর্জি মোদীরা রাখতে পারবেন কি না, সেটা নির্ভর করছে নানারকম পারিপার্শ্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর।তবে বাংলা থেকে সম্ভাব্য কয়েকজন মন্ত্রীর নাম দলের শীর্ষ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পকেটে গুঁজে দিয়েছেন সুকান্ত মজুমদাররা। সূত্রের খবর, সেই তালিকায় তমলুকের সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম যেমন আছেন, তেমনই আছে বনগাঁর শান্তনু ঠাকুর, মালদা উত্তরের খগেন মুর্মু এবং আলিপুরদুয়ারের মনোজ টিগ্গার নামও। কেন তাঁদেরকে বঙ্গ-বিজেপি নেতৃত্ব মন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাইছেন, সেটাও দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে বঙ্গ-বিজেপির তরফে।
বাংলার নির্বাচনী ফলাফল পর্যালোচনা করলেই স্পষ্ট, মতুয়াদের সমর্থন হারায়নি বিজেপি। কারণ, মতুয়া অধ্যুষিত বনগাঁ এবং রানাঘাটে জয় মিলেছে বিজেপি প্রার্থীদেরই। এরপরও মতুয়া সমাজের কাউকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী না করলে ভুল বার্তা যেতে পারে বলে মনে করছে বঙ্গ-বিজেপির একাংশ। শুধু বাংলায় নয়, গোটা দেশেই আদিবাসী ও তফসিলি ভোটে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি।
তাই ওই দুই সম্প্রদায়ের ভরসা ফেরাতে মনোজ টিগ্গা ও খগেন মুর্মুর নামও দিল্লিতে রাজ্য বিজেপি-র তরফে পাঠানো হয়েছে। গেরুয়া শিবিরের একাংশের দাবি, জিতলে তাঁকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করা হতে পারে, এমন ইঙ্গিত নাকি ভোটের আগেই দেওয়া হয়েছিল অভিজিতকে। সেই নিরিখে তাঁর নামও দিল্লিতে পাঠানো তালিকায় রাখা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
বঙ্গ-বিজেপির পছন্দের তালিকায় না থাকলেও মন্ত্রী হতে চাওয়ার মনোবাসনার কথা চেপে রাখেননি বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। এমনকী মন্ত্রী না করলে তিনি ‘ভেবে দেখার’ বার্তাও ঘুরিয়ে দিয়ে রেখেছেন। বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও দিল্লিতে তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার জন্যই বিষ্ণুপুরের মানুষ আমাকে ভোট দিয়েছে। এখন দল স্থির করবে, তারা কী করবে। তারপর আমি ভাবব, আমি কী করব। এখনও এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি।’
তাঁর সংযোজন, ‘রাঢ় বাংলায় দলীয় বিধায়কদের আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ভালো ফল করতে হলে লড়াকু নেতাদের হাতে দায়িত্ব দিতে হবে। তা হলেই বিজেপির ভালো ফলের সম্ভাবনা আছে। তোষামোদী নেতাদের দিয়ে বিজেপি বাংলায় ভালো ফল করতে পারবে না।’
তবে তাঁর যে তৃণমূলে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই, সেটাও এদিন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন সৌমিত্র। রাজনৈতিক মহলের মতে, বাংলা থেকে মন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে পিছিয়ে আছেন বুঝেই কৌশলে দলীয় নেতৃত্বের উপর চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ।