এই তরুণ নেতা পোস্টে লেখেন, ‘পরিশ্রমে নিজের ১০১% দিয়েছি। যা করতে পারি তার বেশি করেছি। আমার টিম, আই প্যাকের কয়েকজন এবং পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় উন্মাদের মত পরিশ্রম করেছে। সঙ্গে প্রাণপাত করেছেন বুথ স্তরের দলীয় কর্মীরা।’
পরিশ্রমের পরও কেন পরাজিত হতে হল তাঁকে? দেবাংশু লিখেছেন, ‘নিজেদের সবটা দেওয়ার পরেও বেইমানি এবং অর্থের কাছে হেরে গিয়েছি। এত কোটি কোটি টাকার বিরুদ্ধে আমাদের স্বল্প ক্ষমতার লড়াই ব্যর্থ হয়েছে। গোটা জেলায় নেতা-কর্মী নয়, ভোট করিয়েছে কেবল টাকা। সঙ্গে ছিল নন্দীগ্রাম ও ময়নার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বিস্তৃত সন্ত্রাস। নির্বাচনের দিন তিনেক আগে থেকে বিরুলিয়া, বয়াল, ভেকুটিয়া, হরিপুর, গোকুলনগরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট দিতে না বেরোনোর হুমকি তথা ফতোয়া এবং সোনাচূড়া অঞ্চল জুড়ে ভোটের দিন দেদার ছাপ্পা।’
বিরোধীদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে দেবাংশু দাবি, ‘ময়নার বাকচা অঞ্চল এতটাই মুক্তাঞ্চল, তৃণমূল নাম উচ্চারিত হলেও মারধর এমনকি প্রাণহানিও সেখানে নতুন নয়।’
তাঁর সংযোজন, ‘তার উপর নির্বাচনের দিন দুয়েক আগেই সেই খুন, যাকে কেন্দ্রে করে গোটা নন্দীগ্রাম হয়ে উঠেছিল দুর্বৃত্তদের অবাধ বিচরণক্ষেত্র। সেই পরিস্থিতে সবটা এতটা একপেশে হয়ে গিয়েছিল, এক সময়ে দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছিল এই নির্বাচন এখন লড়া, না লড়া সমান ব্যাপার। তবুও আমরা হাল ছাড়িনি!’
তিনি আক্রমণ ছুড়ে দিয়েছেন বিজেপি প্রার্থীর দিকে। অর্ধেক বেলা প্রচার না করেও তিনি জয়ী হয়েছেন বলে দাবি দেবাংশুর। দেবাংশুর উপলব্ধি, ‘আগামীদিনে এই রাজনৈতিক নদী পথ আমায় কোন মোহনায় নিয়ে গিয়ে ফেলবে জানিনা। শুধু এটুকু জানি, আমার নৌকো খোয়া গেছে, কেবল নিজেকে ভাসিয়ে, বাঁচিয়ে রেখেছি এই অগাধ জলরাশির পৃষ্ঠ দেশে।’
এই প্রসঙ্গে তমলুক সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক সোমনাথ ভ্যুঁইয়া জানান, এই বিষয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চান না। তিনি বলেন, ‘বেইমানি কে করেছে? দলের নেতারা না সাধারণ মানুষ? দলের নেতারা করলে তাদের ব্যাপার। সাধারণ মানুষ বেইমানি করেনি। সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিজেপিকে ভোট দিয়েছে।’
অন্যদিকে, তমলুক সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কী ভেবে দেবাংশু এই পোস্ট করেছে তা বলতে পারব না। তবে হ্যাঁ বিজেপি টাকার খেলা খেলেছে।’