দিনে দুপুরে রানিগঞ্জের প্রাণকেন্দ্র তারবাংলা এলাকায় একটি স্বর্ণ বিপণিতে ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে নাগরিক থেকে ব্যবসায়ী মহলে। রানিগঞ্জ চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি রোহিত খৈতান বলেন, ‘ভাবতেই পারছি না। অতীতে এমন ঘটনা রানিগঞ্জে কখনও ঘটেনি। গোটা রাজ্যেও ঘটেছে কিনা জানা নেই। আমাদের প্রস্তাব, জুয়েলারি দোকানগুলো নিয়ে সরকারের এলাকাভিত্তিক টাস্ক ফোর্স তৈরি করা উচিত। ওই ফোর্সের সদস্যরা সোনার দোকানগুলোর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। প্রয়োজনে পুলিশের সঙ্গে বণিকসভা এবং জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদেরও রাখা উচিত। কেননা বারবার সোনার দোকানগুলোতেই লুট হচ্ছে। এর আগে আসানসোল, পুরুলিয়াতেও একাধিক ঘটনা ঘটেছে।’রবিবারের পুরো ঘটনার কথা উল্লেখ করে পুলিশ কমিশনার ও রানিগঞ্জের আইসির সঙ্গে দেখা করে লিখিত ভাবে নিরাপত্তার দাবি তুলবেন বলে জানিয়েছেন বণিকসভার কর্তারা। রানিগঞ্জ এমনিতেই কলকাতার বড়বাজারের পরে রাজ্যের দ্বিতীয় বড় ব্যবসাকেন্দ্র। এদিনের ঘটনা দেখে এখানকার ব্যবসায়ী মহল আতঙ্কিত। একইসঙ্গে পুলিশের ভূমিকারও প্রশংসা করা হয়েছে।
রোহিত খৈতান বলেন, ‘শ্রীপুর পুলিশ ফাঁড়ির ওসি নিজের জীবন বাজি রেখে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। তার জন্য আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে তাঁকে ধন্যবাদ জানাই। দুষ্কৃতীরা ডাকাতির জন্য রবিবার বেছে নিয়েছে কেননা এই সোনার দোকানের কাছেই রয়েছে ব্যাঙ্ক। সপ্তাহের কাজের দিনগুলোয় ব্যাঙ্কের সামনে পুলিশের মোবাইল ভ্যান থাকে। এদিন ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই ওখানে মোবাইল ভ্যান ছিল না।
রানিগঞ্জে ১০০টিরও বেশি সোনার দোকান রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পুরোনো বেশ কয়েকটি বড় দোকান। এই সোনার দোকানগুলোর সংগঠন রানিগঞ্জ জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বলরাম রায় বলেন, ‘আমরা স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনের উপরে এখনও ভরসা রাখছি। সিসিটিভির ফুটেজ থেকে তারা নিশ্চয়ই দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করতে পারবেন। এই বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আমরাও লিখিত ভাবে পুলিশ-প্রশাসনের কাছে আরও নিরাপত্তার দাবি জানাব। তা না হলে ব্যবসা চালাতে সত্যিই অসুবিধা তৈরি হবে। মনে রাখতে হবে যে দোকানে ডাকাতি হয়েছে সেখানে কিন্তু অস্ত্রধারী নিরাপত্তারক্ষী ছিল। তাঁকে মারধর করে বন্দুক কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’
ঘটনাস্থলের কাছেই একটি হার্ডওয়ার দোকানের মালিক দীপক জালান বলেন, ‘ভাবতেই পারছি না দিনের বেলা একটা দোকানে এভাবে লুট হয়ে গেল। সত্যিই এটা ভয়ের বিষয়।’ রানিগঞ্জের সিটিজেন্স ফোরাম বৃহত্তম নাগরিক সংগঠনের সভাপতি গৌতম ঘটক জানিয়েছেন, ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই বহু নাগরিক তাঁকে ফোন করেছেন।
বলেন, ‘এর পরে তো দিনের বেলায় দুষ্কৃতীরা বাড়িতেও ঢুকে পড়বে। নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ-প্রশাসনকে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। যে রাস্তার উপরে এই ডাকাতি হলো সেটি ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে যুক্ত। অত্যন্ত জমজমাট এলাকা। তাহলে অন্য জায়গায় কী ঘটতে পারে? আমরাও নাগরিক সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে নিরাপত্তার দাবি নিয়ে লিখিত ভাবে আবেদন জানাব।’
—শ্রীপুর পুলিশ ফাঁড়ির ওসি নিজের জীবন বাজি রেখে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। তার জন্য আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে তাঁকে ধন্যবাদ জানাই— রোহিত খৈতান, ব্যবসায়ী