Primary School : ‘যেতে নাহি দিব’, শিক্ষকের বদলি আটকাতে স্কুলে তালা – prayagpur primary school students and guardians lock the school gate to stop teacher transfer


এই সময়, দুর্গাপুর: স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বদলি মানতে চাইছেন না অভিভাবকরা। পড়ুয়ারাও চায় না তাদের প্রিয় শিক্ষক চলে যান অন্য স্কুলে। কিন্তু, বদলির নির্দেশ বহাল থাকছে জেনে স্কুল চত্বরে বিক্ষোভে নামে পড়ুয়ারা। স্কুলের গেটে তালা লাগিয়ে দেন অভিভাবকরা। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে কাঁকসার ত্রিলোকচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের প্রয়াগপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।বিক্ষোভের সময়ে স্কুল চত্বরে উপস্থিত ছিলেন টিচার ইন-চার্জ রাজেশ অধিকারী। ক্ষিপ্ত অভিভাবকদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জানান, জেলা শিক্ষা দপ্তর থেকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কাঁকসা ব্লকের সিলামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদে যোগ দিতে হবে তাঁকে। অভিভাবকরা পাল্টা জানান, বদলির নির্দেশ প্রত্যাহারের জন্য স্কুল পরিদর্শকের মাধ্যমে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে চিঠি দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তাঁদের ইচ্ছা গুরুত্ব পায়নি।

কিন্তু অভিভাবকরা টিচার ইন-চার্জকে ছাড়তে চান না কেন? বিক্ষোভকারী অভিভাবক রিনা খাতুন বলেন, ‘মাস্টারমশাই স্কুলে যোগ দেওয়ার পর থেকে পড়াশোনার মান অনেক ভালো হয়েছে। পড়াশোনার সঙ্গে প্রতিটি বাচ্চার খেয়াল রাখেন তিনি। কোনও বাচ্চা স্কুলে না এলে বাড়িতে খোঁজ নিতে চলে আসেন। কোনও বাচ্চা অসুস্থ হলে তাকে দেখতে আসেন। দায়িত্ব নিয়ে স্কুলে নিয়ে যান, ছুটির পর বাড়িতে পৌঁছে দেন।’ অভিভাবকরা জানাচ্ছেন, স্কুলে বই ও পোশাক এলে বাড়িতে এসে খবর দিয়ে যান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। তিনি চলে গেলে স্কুল ফের আগের অবস্থায় ফিরে যাবে। বাচ্চাদের উপর কোনও নজর থাকবে না।

২০১৬ সালে প্রয়াগপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দেন রাজেশ অধিকারী। সেই সময়ে স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল ৮৪ জন। কিন্তু স্কুলে আসত ৫০ জনের মতো। ধীরে ধীরে সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে শুরু করেন অভিভাবকরা। বর্তমানে স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ১৪২। রাজেশ অধিকারীর নাম প্রয়াগপুরের বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছিল। অভিভাবকদের বক্তব্য, নামী স্কুলে পড়ানোর আর্থিক সামর্থ্য তাঁদের অনেকেরই নেই। রাজেশ স্যার যে ভাবে ছেলেমেয়েদের পড়ান তাতে আলাদা করে টিউশনের প্রয়োজন পড়ে না।

যাঁকে নিয়ে এত শোরগোল সেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘বাচ্চারা ও অভিভাবকরা আমাকে ভালোবাসেন বলে আবেগে বদলির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু বদলি রোখা তো সম্ভব নয়। গত জানুয়ারি মাসে প্রধান শিক্ষক পদের জন্য আমার কাউন্সেলিং হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আমাকে সিলামপুর প্রাথমিক স্কুলে প্রধান শিক্ষক পদে যোগ দিতে হবে।’

বিক্ষোভ প্রসঙ্গে কাঁকসা ব্লকের স্কুল পরিদর্শক সুদীপ সরকার বলেন, ‘গ্রামের মানুষ আবেগের বশে বিক্ষোভ করেছেন। কিন্তু এটা সরকারি সিদ্ধান্ত। রাজেশ অধিকারীকে নিয়ে মোট ৩৭ জনের বদলি হচ্ছে। কোনও একজনের বদলি স্থগিত করে দিলে সবার বদলিই আটকে যাবে। সেটা সম্ভব নয়।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *