দু’হাত চেন দিয়ে বাঁধা, ক্রমাগত বিড়বিড় করে কী যেন বলছে, হাতের কড় গুণছে, আবার কখনও হটাৎ চিৎকারও করে উঠছে। দশম শ্রেণির ছাত্রের এহেন অবস্থা দেখে অনেকেরই প্রশ্ন, ‘ভূতে ধরল নাকি?’ যদিও কোনও কথারই কোনও উত্তর দিচ্ছে না সে। প্রায় ৮ দিন ধরে চলা এই ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে হুগলির কেওটার হেমন্ত বসু কলোনীতে।এই বিষয়ে ওই ছাত্র বাবা কার্তিক মালাকার বলেন, ‘ছেলে পড়তে গিয়েছিল। আমি দেখে জিজ্ঞাসা করলাম, এখানে দাঁড়িয়ে গল্প করছিস কেন? বলল তুমি যাও আমি আসছি। তারপর আমি চলে আসি। একটু পর ও সাইকেল নিয়ে ঢুকল। তারপর আমি কাজে বেরিয়ে যাই। পরে শুনলাম, খুব চেঁচামেচি করেছে, যেন ভূতে ধরেছে। আমায় ডেকে পাঠাল। আমি বাড়ি ফিরে ওকে ধরে রাখতে পারছিলাম না। ১০-১২ জন মিলেও ধরে রাখতে পারছিলাম না। তারপর চেন তালা দিয়ে বাঁধলাম।’ ইতিমধ্যেই ছেলেকে নিয়ে একাধিক ওঝার বাড়িতে গিয়েছেন কার্তিক। টাকাও খরচ হয়েছে। কিন্তু তাতেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। অবশেষে তাঁরা চিকিৎসকের দ্বারস্থ হন।
অন্যদিকে ওই ছাত্রের দিদি টিনা মণ্ডল জানান, যবে থেকে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে তবে থেকে খাওয়াদাওয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে সে। শৌচালয়েও যাচ্ছে না। ইতিমধ্যেই হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয়েছে ওই ছাত্রকে। সেখানে কিছু ইঞ্জেকশন দেওয়া হয় তাকে। তারপর থেকে কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রিত তার আচরণ। যদিও ওই ছাত্রকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার বিরুদ্ধে অনেকেই সরবও হয়েছেন। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে মানুষ এখনও কী ভাবে ‘ভূতে ধরা’র মতো বিষয়ে বিশ্বাস করতে পারে, সেই প্রশ্নও তুলতে শুরু করেছে অনেকে।
অন্যদিকে ওই ছাত্রের দিদি টিনা মণ্ডল জানান, যবে থেকে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে তবে থেকে খাওয়াদাওয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে সে। শৌচালয়েও যাচ্ছে না। ইতিমধ্যেই হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয়েছে ওই ছাত্রকে। সেখানে কিছু ইঞ্জেকশন দেওয়া হয় তাকে। তারপর থেকে কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রিত তার আচরণ। যদিও ওই ছাত্রকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার বিরুদ্ধে অনেকেই সরবও হয়েছেন। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে মানুষ এখনও কী ভাবে ‘ভূতে ধরা’র মতো বিষয়ে বিশ্বাস করতে পারে, সেই প্রশ্নও তুলতে শুরু করেছে অনেকে।
এই বিষয়ে খবর গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের কাছে। খবর পেয়ে তারাও ওই জায়গায় যায়। এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য দিব্যজ্যোতি দাস বলেন, ‘এখনও শহরাঞ্চলের মানুষ যে কুসংস্কারে বিশ্বাস করে, তা এই ঘটনা দেখে বোঝা যায়। আমরা কিশোরের পরিবারকে বলেছি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে। আমরা চিকিৎসা বিজ্ঞানের উপরেই আাপাতত আস্থা রাখছি। এভাবে বেঁধে রাখা ঠিক নয়। কুসংস্কার দূর করতে এই এলাকায় আমরা সচেতনতা শিবির করব।’ একইসঙ্গে এই ধরনের ঘটনায় প্রশাসন যাতে কড়া পদক্ষেপ করে, সেই আবেদনও জানান হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের পক্ষ থেকে।