Post Poll Violence,নির্বাচন পরবর্তী হিংসা ইস্যু যুযুধান দুই ফুলের – bjp and trinamool accused each other of post poll violence in west bengal


মণিপুস্পক সেনগুপ্ত, এই সময়
ভোট-পরবর্তী সন্ত্রাস ইস্যুকে সামনে রেখে শুভেন্দু অধিকারী যখন কলকাতায় শোরগোল ফেলতে চাইছেন, ঠিক তখনই বিজেপির বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলে শুভেন্দুর খাস-তালুকেই প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।ভোট-পরবর্তী হিংসার অভিযোগ আর বিরোধী শিবিরের এক তরফা হাতিয়ার নয়। শাসক দলও এ বার একই অভিযোগ তুলতে শুরু করেছে। লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন থেকে বিভিন্ন জেলায় বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা আক্রান্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগ করছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির স্নায়ুচাপ বাড়িয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসও একই অভিযোগে পাল্টা সোচ্চার হয়েছে পদ্ম শিবিরের বিরুদ্ধে।

পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে বিজেপির হাতে তৃণমূল কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানতে পেরেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশে আজ, শুক্রবার তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে খেজুরিতে পাঠানো হচ্ছে। এদিকে, ভোট-পরবর্তী সন্ত্রাস নিয়ে শাসক-বিরোধীর দড়ি টানাটানির মধ্যেই বৃহস্পতিবার দলের ‘আক্রান্ত’ কর্মীদের নিয়ে রাজভবন যাওয়ার পথে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

১৪৪ ধারা জারি থাকার কারণ দেখিয়ে আটকে দেওয়া হয় তাঁকে। যা নিয়ে এদিন রাজভবনের বাইরে রীতিমতো নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়। পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকতে শুক্রবারই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। পদ্ম শিবিরের অভিযোগ, লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকে জেলায় জেলায় তাদের দলের কর্মীদের উপর অত্যাচার শুরু হয়েছে।

কলকাতার একটি ধর্মশালায় বিভিন্ন জেলা থেকে ‘আক্রান্ত’ কর্মীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই ইস্যুতে তৃণমূলের উপর চাপ বাড়াতে প্রায় শ’দুয়েক ঘরছাড়া দলীয় কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা করেন শুভেন্দু। বৃহস্পতিবার বিকেল চারটের সময় রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল শুভেন্দুদের। সেই মতো নির্দিষ্ট সময়ে রাজভবনের দিকে রওনা দেন বিরোধী দলনেতা। সঙ্গে কয়েকটি বাসে ছিলেন ভোট-পরবর্তী হিংসার ‘আক্রান্ত’রা।

তাঁরা মূলত এসেছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা থেকে। শুভেন্দুর দাবি, রাজভবনের উত্তর গেটের অনেকটা আগেই তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। এরপর গাড়িতে বসেই তিনি ফোনে কথা বলেন রাজ্যপালের দপ্তরের সঙ্গে। সেখান থেকে বলা হয়, রাজভবনের বাইরের চত্বর কলকাতা পুলিশের অধীনে। তাই এ বিষয়ে রাজ্যপালের দপ্তরের কিছু করার নেই।

শুভেন্দুর অভিযোগ, এক ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরেও তাঁদের রাজভবনের ভিতর ঢুকতে দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে, পুলিশের বক্তব্য, রাজভবন চত্বরে ১৪৪ ধারা জারি থাকে। তাই নিরাপত্তাজনিত কারণেই দু’শো জনকে একসঙ্গে রাজভবনে ঢুকতে দেওয়া সম্ভব নয়। ভিতরে প্রবেশের অনুমতি না পেয়ে চলে যাওয়ার আগে শুভেন্দু সংবাদমাধ্যমের সামনে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, ‘আমি পুলিশের নির্দেশ অমান্য করে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করিনি। তবে জরুরি অবস্থার সময়েও এরকম পরিস্থিতি দেশের কোথাও হয়নি। আমরা এর বিরুদ্ধে উচ্চ-আদালতে যাচ্ছি।’

তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ এনিয়ে পাল্টা কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। তিনি বলেন, ‘বিজেপির সব থেকে বড় ঘরছাড়া তো দিলীপ ঘোষ। তাঁকে কেন এদিন দেখা গেল না!’ শুভেন্দুর দাবি, এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রসচিব, মুখ্যসচিবদের রিপোর্ট তলব করেছে রাজভবন।

শুক্রবার বিজেপির লিগ্যাল সেল যখন বিহিত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবে, তখন তৃণমূলের প্রতিনিধি দলও ‘আক্রান্ত’ কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে খেজুরি পৌঁছে যাবে। সূত্রের খবর, অতীতে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের দায়িত্বে থাকা কুণাল ঘোষ থাকবেন এই প্রতিনিধি দলে। এ ছাড়াও থাকবেন পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরের বিধায়ক শিউলি সাহা এবং মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা।

BJP West Bengal : আক্রান্ত পদ্ম-কর্মীদের পাশে নেতারা কোথায়, প্রশ্ন দলেই

পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি লোকসভার অর্ন্তগত খেজুরি। লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী সৌমেন্দু অধিকারীর কাছে পরাজিত হয়েছেন তৃণমূলের উত্তম বারিক। তার পর থেকেই তৃণমূলের কর্মীদের উপর বিজেপি হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। শুক্রবার তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই খেজুরি যাচ্ছেন কুণালরা।

সূত্রের খবর, সেখানে গিয়ে দলের ‘আক্রান্ত’ কর্মীদের সঙ্গে কথা বলবেন কুণাল, বীরবাহারা। শুক্রবার খেজুরিতে বিজেপির অত্যাচারের বিরুদ্ধে সভাও করার কথা আছে কুণালদের। সেখানে উত্তমকেও হাজির থাকতে বলা হয়েছে।





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *