তিস্তার ত্রাস কমতেই রাজনীতি শুরু পাহাড়ে, ওড়েনি হেলিকপ্টার – political crisis started in sikkim floods disaster


এই সময়, শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি: তিস্তার জলস্ফীতি একটু নিয়ন্ত্রণে আসতেই সিকিম ও এ রাজ্যের কালিম্পংয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়ে রাজনীতি শুরু হয়েছে। শনিবার সকালে সিকিমের মাজুয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন সিং গোলে। ক্ষতিগ্রস্তদের পুর্বাসন-সহ নানা আশ্বাস দেন তিনি। কিছু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের হাতে সাময়িক ক্ষতিপূরণ হিসাবে চেক তুলে দেন। তবে উত্তর সিকিমে আটকে পড়া পর্যটকদের নিয়ে একটি কথাও বলেননি তিনি।অন্যদিকে, এদিন দুপুরে তিস্তাবাজার এলাকা পরিদর্শন করেন দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্ত। তিনিও ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলার পরে অভিযোগ করেন, জিটিএ এই ঘটনাকে ‘বিপর্যয়’ বলে ঘোষণা না-করাতেই যথাযথা কেন্দ্রীয় সহায়তা পাচ্ছেন না ক্ষতিগ্রস্তরা। তাঁর দাবি, ‘গত অক্টোবরে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরেই মেল্লি, রোপে ও তিস্তাবাজার এলাকার ক্ষয়ক্ষতিকে ‘বিপর্যয়’ বলে ঘোষণা করা উচিত ছিল। তাহলেই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে তখনই ১২০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ হিসাবে পেতে পারত।’

দার্জিলিংয়ের সাংসদের এই যুক্তিকে ‘স্রেফ রাজনীতি’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে জিটিএ। দলের অন্যতম মুখপাত্র এস পি সিনহা বলেন, ‘সিকিমে এত বড় বিপর্যয়ের পরে কেন্দ্রীয় সরকার ৪৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। তাহলে জিটিএ কী করে ১২০ কোটি টাকা পাবে? উনি রাজনীতি করার জন্য এসব বলছেন। গত অক্টোবরে ক্ষতিগ্রস্তদের ইতিমধ্যেই মাথা পিছু ৭০ হাজার টাকা দিয়েছে জিটিএ। কয়েকজনকে ঘরও তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। পুনবার্সনের জন্য জমি সংগ্রহ করা হয়েছে। বন দপ্তর অনুমতি দিলেই সেই সমস্ত কাজ হয়ে যাবে।’

শুক্রবার রাতে ভারী বৃষ্টি না-হলেও কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুসারে বিপদ কিন্তু এখনও কাটেনি। আগামী ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সিকিমে কমলা সতর্কতা জারি রয়েছে। সিকিম রাজ্য প্রশাসন উত্তর সিকিমের লাচুং ও চুঙথাঙে আটকে পড়া পর্যটকদের হেলিকপ্টারে উদ্ধারের জন্য সেনাদের সাহায্য চাইলেও মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে আবহাওয়া।

ঘন কুয়াশায় দৃশ্যমানতা এতটাই কম যে হেলিকপ্টার ওড়া সম্ভব নয়। ফলে সেনারা সড়ক পথে পর্যটকদের উদ্ধারের দিকে বাড়তি নজর দিয়েছে। ডিকচু-সাঙ্কালন-টুং সড়কে যান চলাচলের ব্যবস্থা করতে দিনরাত কাজ চলছে। গ্যাংটক-চুঙথাঙ সড়কেও যান চলাচলের ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী হয়েছেন তাঁরা। মঙ্গন জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, রবিবার হেলিকপ্টারে সম্ভব না হলে সড়ক পথেই পর্যটকদের গ্যাংটকে ফেরানো হবে।

Sikkim Flood Update: আটকে শয়ে শয়ে পর্যটক, সিকিমে উপগ্রহের মাধ্যমে চলছে নজরদারি
ডুয়ার্সে প্রবল বৃষ্টির জেরে জলঢাকা, ডুডুয়া, গিলান্ডি নদীতে জল বাড়ছে। মালবাজারের নেওড়া নদীর খাত ক্রমশ সরে যাচ্ছে। নদী খাতের দিক পরিবর্তন ঠেকাতে বাঁধ দেওয়া শুরু হয়েছে ওই এলাকায়। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ি জেলায় লাল সঙ্কেত জারি রেখেছে। প্রশাসনকেও এই ব্যাপারে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।

শনিবার রাজ্যের অনগ্রসর কল্যাণ মন্ত্রী বুলু চিকবরাইক ক্রান্তি, টটগাঁও, নাগরাকাটা ব্লকের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। কথা বলেন বন্যা দুর্গতদের সঙ্গে। এদিন মন্ত্রীকে সামনে পেয়ে বাঁধ নির্মাণের দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্তরা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *