যাতে আগামী দিনে তৈরি এমন শূন্যপদে তাঁর নিয়োগ সম্ভব হয়। হাইকোর্টের এই নির্দেশের ফলে তামিলনাড়ুর পর পশ্চিমবঙ্গেই সুপ্রিম কোর্টের নালসা রায় মেনে তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিকরা সংরক্ষণের সুযোগ পেতে চলেছেন। এক দশক আগে সেই ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিকদের অধিকারের পক্ষে নালসা রায়ে চাকরিতে সংরক্ষণের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু কোনও রাজ্যই প্রায় তা বাস্তবায়িত করেনি।
মেদিনীপুরের ছেলেটি এক সময়ে নিজেকে মেয়ে ভাবতে শুরু করেন। পরিবার ও প্রতিবেশীদের থেকে অসম্মান আর লাঞ্ছনা পেতে পেতে এক সময়ে ঘর ছাড়েন। তার মধ্যেই স্নাতক হন। ডিএলএডও উত্তীর্ণ হন। বেলঘরিয়ায় থাকতে শুরু করেন। কিন্তু আর্থিক সঙ্কট চরমে পৌঁছয়। এক সময়ে শহরের রাস্তায় ট্র্যাফিক সিগন্যালে কার্যত ভিক্ষাবৃত্তিও করতে হয়েছে তাঁকে।
এরই মধ্যে ২০১৪ ও ২০২২ সালে প্রাথমিকের দু’টি টেটেই উত্তীর্ণ হন তিনি। হাইকোর্টে মামলায় তাঁর আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় বলেন, টেট পাশ করার পরে ইন্টারভিউতেও ডাকা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিবারই তাঁকে দেখার পর তাঁর শারীরিক গঠন, আচার-আচরণ নিয়ে খোঁচা দিয়ে চলেছে হাসিঠাট্টা। চাকরি আর হয়নি। তার ফলেই মামলা করতে হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট নালসা রায়ে তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিকদের জন্যে চাকরিতে সংরক্ষণের প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে কত শতাংশ, সে ব্যাপারে কিছু বলেনি। কেন্দ্রীয় সরকার এই রায় কিছুটা পরিমার্জন করে আইন তৈরির সময়ে চাকরিতে সংরক্ষণের বিষয়টিই এড়িয়ে যায়। ফলে তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিকরা অন্য অনেক বিষয়ের সঙ্গে চাকরির ক্ষেত্রে বঞ্চিতই থেকে যান।
তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিকদের আইনি সহায়তা দেওয়া কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী কৌশিক গুপ্ত বলেন, ‘এতদিনে একটি সাংবিধানিক আদালত নির্দিষ্ট ভাবে কোটা উল্লেখ করে সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়ায় বিষয়টি অন্য মাত্রা পেল। এ বার এই নির্দেশ কার্যকরী হলে এ রাজ্যের বহু তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিকের বঞ্চনা দূর হতে পারে।’