Heat Wave In West Bengal,গরমে পুকুরের জল তলানিতে, বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে মাছচাষিরা – pond is drying due to heat wave burdwan fisherman looking for rain


রূপক মজুমদার, বর্ধমান
এবার কি মাছেও কোপ বসাতে চলেছে গরম! অন্তত পূর্ব বর্ধমান জেলায় পুকুরে চাষ করা মাছচাষিরা এমন আশঙ্কার কথাই শোনাচ্ছেন। তাঁরা চেয়ে রয়েছেন বৃষ্টির দিকে।জেলায় অনেকেই ছোট-বড় পুকুরে মাছচাষ করেন। পুকুরের মাছ সরাসরি যায় স্থানীয় বাজারগুলোয়। কিন্তু গত প্রায় দু’মাসের অস্বাভাবিক গরমের জেরে পুকুরের জল অনেকটাই কমে গিয়েছে। টলটলে জলের পুকুরে এখন কোমর-জল, তাও মাঝখানে। বৃষ্টি না-হওয়ার কারণে মাছের চারা ছাড়তে পারেননি চাষিরা।

বড়শুলের মাছচাষি অসীম প্রামাণিক বলেন, ‘মে মাসের শেষ সপ্তাহ নাগাদ ধানি চারা (১২-১৫ দিন বয়সের মাছ) বা ১০ গ্রাম ওজনের চুনোমাছ পুকুরে ছাড়লে আশ্বিন-কার্তিক মাসে মাছগুলো ২৫০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের হয়ে যায়। আর খাবার, জলটান (মাছের বাড়বৃদ্ধির জন্য জলে জাল ফেলে টানা) ঠিকমতো দিলে মাঘ মাসে এই মাছেরই ওজন দাঁড়াবে দেড় থেকে দু’কেজি। কিন্ত এখন পুকুরে জল এতটাই কম যে, মাছের চারা ছাড়তে ভয় লাগছে। বৃষ্টি না-হলে মাছচাষে এবার সে ভাবে লাভ হবে না।’

এদিকে, বাজারে পুকুরের মাছের জোগান কম বলে জানালেন বর্ধমান শহরের তেঁতুলতলা বাজারের মাছের আড়তদার খোকন কোঁয়ার। তাঁর বক্তব্য, ‘দিন ১৫ ধরে লোকাল পুকুর থেকে আগের তুলনায় ৮-৯ কুইন্টাল করে মাছ কম আসছে। এই ওয়েদারের জন্যই এমনটা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মাছচাষিরা। ভেড়ির মাছ বা পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নার জমা জলের মাছের জোগানেই বাজার চলছে। তবে পুকুরের মাছের চহিদা খুচরো বিক্রেতাদের কাছে বেশি থাকে। তার স্বাদও হয় অন্যরকম।’

১৮টি পুকুর লিজ় নিয়ে মাছচাষ করছেন বর্ধমান-১ ব্লকের পালিতপুরের বাসিন্দা আনন্দ সাহা। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে মাছের ব্যবসা করছি। এবার পুকুরের জল যেমন কমে গিয়েছে তা আগে দেখিনি। একটি পুকুর আছে ১৬ বিঘের। অত বড় পুকুরের একেবারে মাঝে এখন কোমর পর্যন্ত জল। পুকুরে যা মাছ রয়েছে সেগুলো তুলে বিক্রি করে দিচ্ছি। লিজ়ের টাকা কী ভাবে দেবো সেটাই এখন চিন্তার বিষয়।’

কী বলছে মৎস্য দপ্তর? জেলা ফিশারি আধিকারিক আয়ুব আলি মণ্ডল বলেন, ‘প্রাকৃতিক কারণেই পুকুরে জলের গভীরতা কমছে। বড় পুকুর থেকে ছোট পুকুরে এর প্রভাব অনেকটাই বেশি। এতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে মাছচাষিদের। বাজারে জোগান কমছে। সাধারণত মাছচাষের ক্ষেত্রে আদর্শ তাপমাত্রা হচ্ছে ৩০ ডিগ্রি। বড় মাছচাষের ক্ষেত্রে জলের গভীরতা থাকতে হয় সাড়ে ৬ থেকে ৭ ফুট। এই সব প্যারামিটারের কিছুই এখন নেই। ফলে মাছের উৎপাদন তো কমে যাবেই। বর্ষায় জলের গভীরতাও বাড়ে, সঙ্গে তাপমাত্রা কমে। তাই বর্ষায় চারামাছ ছাড়া হলে লাভ বেশি হয় মাছচাষিদের।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *