সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক প্রশ্নে তিনি পাশে বসা জেলা সভাপতি অভিজিৎ তায়ের দিকে আঙুল দেখিয়ে বলেন, ‘এ সব বিষয়ে যা বলার জেলা সভাপতি বলবেন, আমি কোনও কথা বলব না।’ আক্রান্তদের সঙ্গে দেখা করবেন জানালেও দিলীপ ঘোষের শরীরী ভাষায় হতাশ দলের কর্মীরা। এদিন তাঁর আসার খবরে আক্রান্তদের অনেকেই ভেবেছিলেন, যাঁর জন্য লড়াই করতে গিয়ে তাঁদের এই অবস্থা, তিনি কিছু করতে না পারুন অন্তত একবারের জন্য হলেও পাশে এসে দাঁড়াবেন।
বর্ধমান উত্তর বিধানসভার হাটগোবিন্দপুরের বিজেপি কর্মী সাধন দত্ত বলেন, ‘মারের বদলা মার। পাঁচ বছর থাকতে এসেছি। হেরে গেলেও কর্মীদের পাশে থাকব। এসব কথা বলে দিলীপদা আমাদের ব্যবহার করেছেন। আর আজ উনি নিজেই হারের পর পালিয়ে গিয়ে মাছ ধরায় মন দিয়েছেন। ১২ দিন পরে এলেন। একবারও আমাদের কাছে আসার প্রয়োজন বোধ করলেন না। এদের জন্য আমরা দল করেছি ভাবলেও খারাপ লাগছে।’
ফলপ্রকাশের পরেই মিঠাপুকরের বাসিন্দা বিশ্বনাথ মোদকের দোকানে লুটপাট চালায় দুষ্কৃতীরা। আক্রান্ত হন তাঁর স্ত্রী। সেই বিশ্বনাথ এদিন বলেন, ‘দিলীপদার এই আচরণে সত্যিই ভাষা হারিয়েছি। ওঁর কথায় উজ্জীবিত হয়ে দলের হয়ে কাজ করেছি। আজ যদি দুর্গাপুর যাওয়ার পথে দোকানে এক মিনিটের জন্য দাঁড়িয়েও খোঁজ নিতেন, তাহলে দোকানে লুটপাট, ভাঙচুর, স্ত্রীকে মারধরের যন্ত্রণায় একটু হলেও প্রলেপ পড়ত। জেলা অফিসের কার্যকর্তারা পাশে থাকলেও উনি এলে মনোবল বাড়ত। আমাদেরও মানুষ চিনতে সুবিধা হলো।’
অস্বস্তিতে পড়ে জেলা বিজেপি সভাপতি অভিজিৎ তা বলেন, ‘উনি পার্টি অফিসে থাকা ঘরছাড়াদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের আগামী দিনে কী করতে হবে সবই বলেছেন। অন্যদেরও খবর নিয়েছেন। এখন উনি কেন সব আক্রান্তদের কাছে যাননি তা নিয়ে আমি আর কী বলব।’
প্রচারের সময়ে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ কীর্তি আজাদের সঙ্গে নিরন্তর কথার টক্কর চালিয়েছিলেন দিলীপ। এদিন দিলীপ ঘোষের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দিলীপ ঘোষের ভোকাল টনিক শেষ হয়ে গিয়েছে। বিজেপি কর্মীরাও সেটা বুঝে গিয়েছেন। ওঁর অবস্থা এখন না ঘরকা না ঘাটকা। আমি দিল্লি থেকে আজই দুর্গাপুরে ফিরছি। আমার সাংসদ এলাকায় কোনও অশান্তি নেই। কারও সমস্যা থাকলে আমাকে জানান। ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা শান্তি চাই। একসঙ্গে থাকতেও চাই।’