Governor Cv Ananda Bose,মমতা বিমুখ, বোসও নেই সিএম-সাক্ষাতে! প্রসঙ্গ ভোট-পরবর্তী হিংসা – governor cv ananda bose says not meet cm mamata banerjee allegations post poll violence in west bengal


এই সময়: রাজভবনের এক কর্মী গভর্নরের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তোলায় রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা না-করার কড়া অবস্থান নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিতান্তই প্রশাসনিক বাধ্যবাধকতার কারণে রাজভবনের সামনের ফুটপাথে দাঁড়িয়ে বোসের সঙ্গে দেখা করলেও রাজভবনের ভিতরে ঢুকবেন না মমতা।এ বার লোকসভা নির্বাচন-পরবর্তী হিংসার অভিযোগকে হাতিয়ার করে রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে দেখা করবেন না বলে ঘোষণা করলেন রাজ্যপাল বোস-ও। আক্রান্তরা যতদিন রাজভবনে গিয়ে দেখা করবেন, ততদিন পুলিশমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি দেখা করবেন না বলে বোস রবিবার জানান।

রাজভবনের এই অবস্থানের তীব্র সমালোচনা করেছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। যাঁর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মতো গুরুতর অভিযোগ, তাঁর সঙ্গে কে দেখা করতে যাবে, সে প্রশ্ন তুলেছেন চন্দ্রিমা। একই সঙ্গে তাঁর কটাক্ষ – ভোটে বাংলায় প্রত্যাশিত সাফল্য পায়নি বিজেপি, সেই আক্ষেপ থেকেই রাজ্যপাল এমন বিবৃতি দিয়েছেন।

যদিও রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান এবং সাংবিধানিক প্রধান যদি পরস্পরের সঙ্গে দেখা না করেন, তা হলে দৈনন্দিন সরকারি কাজে সমস্যা হতে পারে বলে সংশয়ী প্রবীণ আমলারা। এর ফলে এক ধরনের ‘ডেড-লক’ পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা।

রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে একাধিক জেলা থেকে বিজেপির ১০৬ জন আক্রান্ত কর্মী-সমর্থক এ দিন রাজভবনে যান। তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যপাল। শুভেন্দু তাঁকে যে স্মারকলিপি দিয়েছেন, সেখানে দাবি করা হয়েছে, গত ৪ জুন ভোটের ফল প্রকাশের পর গেরুয়া ব্রিগেডের অন্তত ১০ হাজার কর্মী-সমর্থক ঘরছাড়া হয়েছেন। আড়াই হাজার লোক রাজ্যের বাইরে চলে গিয়েছেন।

বিভিন্ন জেলার সেফ হোমে ৩,২০০ জন বিজেপি কর্মী-সমর্থক আছেন। কর্মী-সমর্থকদের পাঁচ হাজার রেশন কার্ড ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ শুভেন্দুর। এই পরিস্থিতিতে তাঁর আর্জি – রাজ্য সরকারকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিন রাজ্যপাল। পাশাপাশি দুর্গাপুজো পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রাখতে উদ্যোগী হোন বোস।

শুভেন্দুর অভিযোগ শুনে সংক্ষিপ্ত বাংলা বিবৃতিতে রাজ্যপাল এ দিন বলেন – ‘হিংসার বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়াই করব। বাংলাকে হিংসা-মুক্ত করব। নেতাজি, রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দের নামে শপথ করে বলছি, শেষ পর্যন্ত এই লড়াই লড়ব। কোর্টের আদেশ আমি কার্যকর করব। আক্রান্তরা রাজভবনে এসে দেখা করবেন। ততদিন পুলিশমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী আমার সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না।’

এই বিবৃতিরই কড়া জবাব দিয়েছেন চন্দ্রিমা। তাঁর কথায়, ‘মুখ্যমন্ত্রী আগেই ঘোষণা করেছেন যে এমন চরিত্রহীন লোকের সঙ্গে তিনি দেখা করবেন না। উনি সম্পূর্ণ পক্ষপাতদুষ্ট বলেই এমন বিবৃতি দিয়েছেন। উনি (বোস) কেন্দ্রীয় সরকারের একজন মনোনীত ব্যক্তি। বিজেপির ফল ভালো না-হওয়ায় হতাশায় ভুগছেন।’

দিন কয়েক আগে বিজেপির আক্রান্ত কর্মী-সমর্থকরা শুভেন্দুর নেতৃত্বে রাজভবনে বোসের সঙ্গে দেখা করতে গেলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। লালবাজারের এই ভূমিকা নিয়েও রবিবার অসন্তোষ জানিয়েছেন বোস। তিনি বলেন, ‘রাজভবনের সব পুলিশকে বদলি করতে হবে। প্রত্যেকে যেন বুঝতে পারে, বিনাশকালে বিপরীত বুদ্ধি হয়েছিল।’

এই বদলির দাবি নিয়েও পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন চন্দ্রিমা। তাঁর প্রশ্ন, ‘রাজভবনে মোতায়েন থাকা পুলিশকে বদলির নির্দেশ দেওয়ার উনি কে? আগে উনি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে বেশি দেখা করতেন। এখন কি নিজের পদ বাঁচাতে শুভেন্দুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন?’ এ দিকে, এ দিন রাতেই বিপ্লব দেবের নেতৃত্বে চার সদস্যের গেরুয়া-টিম রাজ্যে এসেছে। কলকাতা-সহ রাজ্যের একাধিক জায়গায় আক্রান্ত বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে দেখা করবে এই দল।

ভোট পরবর্তী হিংসা দেখতে বাংলায় পদ্মের কেন্দ্রীয় টিম, কটাক্ষ তৃণমূলের

কলকাতা বিমানবন্দরে দলের সদস্য রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘সারা দেশে ভোট হয়, কিন্তু শুধু বাংলায় কেন ভোটের পরে হিংসা হয়? পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসা হয়, বিধানসভা ভোটে হিংসা হয়, এখনও হিংসা হচ্ছে! মমতা যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন, তা হলে তাঁকে জবাব দিতে হবে।’

ভোট-পরবর্তী হিংসাকে বিজেপি ইস্যু করতে চাইলেও তৃণমূল নেতৃত্ব শুরু থেকেই এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। বিপ্লবের নেতৃত্বাধীন বিজেপির কেন্দ্রীয় টিমের সফর প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম রবিবার বলেন, ‘তৃণমূল কোনও হিংসায় বিশ্বাস করে না। বিপ্লব দেব সন্ত্রাসের মাস্টার। ত্রিপুরায় বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দিতে দেয় না। এখানে বিপ্লবকে পাঠিয়ে বিজেপি নাটক করছে।’ রাতেই মাহেশ্বরী ভবনে গিয়ে ঘরছাড়া কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে দেখা করে এই টিম।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *