Silicosis Patient,সিলিকোসিসে আক্রান্তের সঙ্গীরও লাগবে না বাসভাড়া, নির্দেশ হাইকোর্টের – calcata high court order silicosis patient and his partner will not need a bus ride


ফুসফুসের দুরারোগ্য ব্যাধি, বহু ক্ষেত্রেই পেশাগত কারণে শরীরে বাসা বাঁধা অসুখ সিলিকোসিসে আক্রান্তদের অনেকের শরীর এতটাই দুর্বল যে, তাঁরা একা চলাফেরা করতে পারেন না। অনেক সময়েই এই দুর্বলতা ও ক্লান্তির সমস্যা চিকিৎসকের কাছে বা হাসপাতালে যাওয়ার পথে তাঁদের অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। এ বার রাজ্যের যে কোনও জায়গায় যেতে সিলিকোসিস আক্রান্তরা যাতে বাসে বিনা ভাড়ায় এক জনকে সঙ্গে নিতে পারেন, রাজ্য সরকারকে সেটা দেখতে বলল কলকাতা হাইকোর্ট।সম্প্রতি প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। হাইকোর্টের এই রায়কে সিলিকোসিস রোগীদের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী বলে অভিহিত করছেন পরিবেশকর্মীদের একাংশ। হাইকোর্টের নির্দেশে পরশু, বুধবার এই ব্যাপারে স্বাস্থ্য ভবনে বৈঠক হবে। যেখানে স্বাস্থ্য অধিকর্তার সভাপতিত্ব করার কথা। থাকবেন পরিবহণ ও শ্রম দপ্তরের কর্তারাও।

সিলিকোসিস রোগীর সঙ্গীর কাছ থেকে বাসের ভাড়া না-নেওয়ার বিষয়টি কার্যকর করতে রাজ্য সরকার নতুন নীতি আনতে চলেছে। পরশুর বৈঠকে ওই ব্যাপারে আলোচনা হবে। সেই সঙ্গে আলোচনা হবে কোন কোন মাপকাঠিতে কাউকে সিলিকোসিসে আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হবে, তা নিয়ে। সিলিকোসিসে মৃতদের আইনি উত্তরাধিকারীদের ক্ষতিপূরণ এবং অসুস্থদের সাহায্য ও পুনর্বাসন দেওয়ার গোটা প্রক্রিয়াও সরকার নতুন ভাবে খতিয়ে দেখবে।

স্বাস্থ্য, শ্রম ও পরিবহণ দপ্তরের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ তৈরিরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। তবে প্রশাসন সূত্রের খবর, সমস্যা গোড়াতেই এবং সেটা সিলিকোসিসে আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে। ২০২৩-এর জানুয়ারিতে পরিমার্জিত ‘সিলিকোসিস রিলিফ, রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড ট্রিটমেন্ট পলিসি— ওয়েস্ট বেঙ্গল’ অনুযায়ী, সিলিকোসিসে আক্রান্ত প্রত্যেককে ‘সিলিকোসিস পেশেন্ট আইডেন্টিটি কার্ড’ দেওয়ার কথা স্বাস্থ্য দপ্তরের।

হাইকোর্টে রাজ্য সরকার জানিয়েছে, ওই পরিচয়পত্র এখনও পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে ৭৬ জনকে। তবে যাঁদের মামলায় গত ২ মে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ সিলিকোসিস নিয়ে রাজ্য সরকারকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদক্ষেপ করতে বলেছে, সেই মামলাকারীরা জানাচ্ছেন, আক্রান্তের সংখ্যা বাস্তবে অনেক বেশি, আবার সরকারি নথিতে সংখ্যাটা খুব কম এবং মৃতদের সবার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি।

সিলিকোসিসে আক্রান্তদের সমস্যার সুরাহা চেয়ে ২০১৪ সালে হাইকোর্টে মামলা করে চন্দননগরের ‘সবুজের অভিযান’। ওই সংস্থা জানাচ্ছে, ২০০৯-এর মে মাসে ঘূর্ণিঝড় আয়ালায় নিজেদের চাষের জমি ও কৃষিকাজ হারিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁর বহু মানুষ বীরভূম ও পশ্চিম বর্ধমানে চলে যান পাথর খাদানে কাজ নিয়ে এবং শরীরে সিলিকোসিস নিয়ে কয়েক বছর পর ফিরে আসেন।

নতুন বিধি না হলে বন্ধ করা যাবে না হুক্কা বার, কোর্টে হার রাজ্যের

পরিবেশ নিয়ে কাজ করা ওই সংস্থার তরফে বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, কেবল মিনাখাঁর ধুতুরদহ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেই সিলিকোসিসে আক্রান্ত প্রায় ৩০০ জন। সেখানে মৃতের সংখ্যা ৩০, তবে ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন শুধু ১৪ জনের বাড়ির লোকজন। বিশ্বজিৎবাবুর বক্তব্য, ‘কলকাতা হাইকোর্ট যুগান্তকারী রায় দিয়েছে। কিন্তু সিলিকোসিসে আক্রান্তের সঠিক সংখ্যাটা প্রকাশ করা দরকার। না-হলে অল্প কয়েক জন রোগাক্রান্তের সঙ্গীকে নিখরচায় বাসে যাতায়াতের সুযোগ গিয়ে খুব বেশি লাভ হবে না।’

বছর দুয়েক আগে রাজ্য সরকার সিলিকোসিসে ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনে ১০ কোটি টাকার একটি তহবিল গড়েছে। সরকারি নীতি অনুযায়ী, সিলিকোসিসে মৃতের পরিবারের ৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং অসুস্থদের প্রত্যেকের এককালীন ২ লক্ষ টাকা ও মাসে ৪ হাজার টাকা পেনশন পাওয়ার কথা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *