নতুন টাইম টেবল চালু হতেই প্রশ্নের মুখে পড়ল কেন্দ্রের মিশন রাফতার প্রকল্প। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের নতুন টাইম টেবিলে দেখা গিয়েছে, বহু এক্সপ্রেস ট্রেনেরই সফর-সময় বেড়েছে। দেখা যাচ্ছে, বহু এক্সপ্রেস এবং প্যাসেঞ্জার ট্রেনের যাত্রা শুরু এবং শেষের সময়ের মধ্যে ব্যবধান বেড়ে গিয়েছে আধ ঘণ্টা পর্যন্ত। স্বল্প দূরত্বের ট্রেনগুলোর ক্ষেত্রেও বেড়েছে সময়। যাত্রীদের প্রশ্ন, যে আধুনিকীকরণের কথা রেলের তরফে বলা হচ্ছে বাস্তবে তা দেখা যাচ্ছে কোথায়?
রেলের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নতুন টাইম টেবিলে দেখা যাচ্ছে, হাওড়া-পুরুলিয়া এক্সপ্রেসে সফর-সময় বেড়েছে আরও ১০ মিনিট। ট্রেনটি হাওড়া থেকে বিকেল ৪টে ৫০ মিনিটে ছেড়ে পুরুলিয়া পৌঁছত রাত সাড়ে ১০টায়। সেই ট্রেন এবার আসবে রাত ১০টা ৪০ মিনিটে। একই ভাবে ডাউন রূপসী বাংলা এক্সপ্রেসও বিকেল সাড়ে ৩টের বদলে ছাড়বে ৩টে ২৫ মিনিটে। এর আপ ট্রেনটিও ৭ মিনিট সময় বেশি নেবে বলে জানা গিয়েছে।
আদ্রা-হাওড়া শিরোমণি এক্সপ্রেস ১০টা ১০ মিনিটের বদলে এবার থেকে ১০টা ২০ মিনিটে হাওড়া ঢুকবে। টাটা-হাওড়া স্টিল এক্সপ্রেস ১০টা ২০ মিনিটের বদলে হাওড়া ঢুকবে ১০টা ৩৫ মিনিটে। চক্রধরপুর-হাওড়া এক্সপ্রেস ভোর ৪টে ৩৫ মিনিটের বদলে হাওড়া ঢুকবে ২৫ মিনিট পরে। ফিরতি পথেও এর সময় বেড়েছে। এই ভাবেই হাতিয়া-হাওড়া ক্রিয়াযোগ এক্সপ্রেস হাতিয়া থেকে ছাড়বে রাত ৯টা ৪৫ মিনিটের বদলে সাড়ে ৯টায়। ট্রেনটি হাওড়া পৌঁছবে সকাল ৬টা ৫০ মিনিটের বদলে ৭টায়। ফিরতি পথে সাড়ে ৯টার বদলে ট্রেনটি হাওড়া ছাড়বে ৯টা ১০ মিনিটে। হাতিয়া পৌঁছবে সকাল ৬টা ৫-এর বদলে ৬টা ২০ মিনিটে।
হঠাৎ করে সফর-সময় বেড়ে যাওয়ায় রেলযাত্রীদের বক্তব্য, বেশিরভাগ এক্সপ্রেস ট্রেনে এখন এলএইচবি কোচ। ব্যবহার করা হচ্ছে দ্রুতগামী ডব্লিউএপি ৫ অথবা ৭-এর মতো ইঞ্জিন। এতে ট্রেনের গতিবেগ সহজেই বাড়ানো সম্ভব। সেটা যদি না-ও হয় তাহলেও গতি কমছে কী করে? পুরুলিয়ার চকবাজারের ব্যবসায়ী সন্তু দত্ত বলেন, ‘আগে পুরুলিয়া এক্সপ্রেস রাত ১০টা ২০ মিনিটে পুরুলিয়ায় আসত। এবার ১০ মিনিট আরও সময় নেবে। আগামী দিনে হয়ত দেখব রাত ১১টায় করে দিল।’
রেলওয়ে ইউজার্স অর্গানাইজেশনের আদ্রা-খড়্গপুর শাখার যুগ্ম সম্পাদক দেবু চক্রবর্তী বলেন, ‘আসলে মালগাড়িকে সব থেকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে রেল। মালগাড়ি থেকে বিরাট আয় করছে আদ্রা সমেত রেলের অন্য ডিভিশনগুলো। সেখানে যাত্রীবাহী ট্রেন থেকে রোজগার কম। তাই এই ট্রেন নিয়ে আগ্রহ নেই দক্ষিণ-পূর্ব রেলের। রেলের উন্নয়ন প্রয়োজন ঠিকই তবে, পরিষেবা যেন এ ভাবে তলানিতে না ঠেকে যায়।’
রেলের বক্তব্য, যা করা হচ্ছে সব যাত্রীদের কথা মাথায় রেখেই। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ওপি চারণ বলেন, ‘এক একটি ট্রেনের সময় সারণি বদলে নির্দিষ্ট কারণ থাকে। রেলের পরিকাঠামো উন্নয়নে বিপুল পরিমাণে কাজ চলছে। এজন্য বেশ কিছু জায়গায় কশন অর্ডার দেওয়া থাকছে। এতে গতি কমতে পারে। যাত্রীদের কথা মাথায় রেখেই সব কিছু করা হয়। আগামী দিনে পরিকাঠামো উন্নয়নের সুফল পাবেন যাত্রীরা।’