দীর্ঘ প্রতীক্ষার শেষে আগামী ৮ জুলাই খুলতে চলেছে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্নভাণ্ডার। ওই রত্নভাণ্ডার ঘিরে ভক্তদের যে অসীম কৌতূহল ছিল, তার নিরসন হবে বলে মনে করা হচ্ছে। একই ভাবে এ বার কলকাতার কালীঘাট মন্দিরের কত সোনাদানা, ধনসম্পদ রয়েছে–তা জনসমক্ষে আনার দাবি তুললেন মন্দির কমিটির সদস্যরা।ফি-বছর কালীঘাট মন্দিরে প্রণামীর নগদ টাকা ছাড়াও বিপুল পরিমাণ সোনা-রুপো, হিরের অলঙ্কার জমা পড়ে। বছরের পর বছর সে-সব রাখা হতো কালীঘাটে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ভল্টে। কিন্তু আইনি জটে বহু বছর ধরে সেটি খোলা যায়নি। ফলে সেখানে কত ধনসম্পত্তি রয়েছে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। বর্তমানে যাঁরা মন্দির পরিচালন কমিটিতে রয়েছেন, তাঁরাও অন্ধকারে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কালীঘাট মন্দির দেখভালে ১১ সদস্যের পরিচালন কমিটি রয়েছে। জেলা জজ কমিটির চেয়ারপার্সন। সদস্যদের মধ্যে পাঁচজন মন্দিরের সেবাইত৷ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা পুরসভা, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ এবং সংস্কৃত কলেজের একজন করে প্রতিনিধিও রয়েছেন। কমিটির কোষাধ্যক্ষ কল্যাণ হালদার জানান, যে ভল্টটি খোলা যাচ্ছে না, সেখানে কয়েকশো ভরি সোনা-রুপো রয়েছে।
কিছু অলঙ্কার বিগ্রহে পরানোর জন্য মন্দিরে রাখা থাকে। তার থেকে অনেক বেশি অলঙ্কার আছে ভল্টে। সেটা খুলতে জেলা জজের অনুমোদন লাগে। তা নিয়ে অনেক মামলাও হয়েছে। কিন্তু ভল্ট খোলা হয়নি। তাঁর কথায়, ‘২০-২৫ বছর ধরে মন্দির প্রশাসনে যুক্ত। অথচ আমি নিজেই জানি না মায়ের কত সোনাদানা রয়েছে। আমার তো মাঝেমধ্যে সন্দেহ হয়, আদৌ সে-সব ঠিকঠাক আছে তো? অনেক সময়ে ব্যাঙ্কের ভল্ট থেকেও জিনিসপত্র উধাও হয়ে যায় বলে শুনেছি। তাই এক বার চেক করা জরুরি।’
মন্দির কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট বাবলু হালদার বলেন, ‘ভল্ট কেন খোলা হচ্ছে না, সেটা জেলা জজই বলতে পারবেন।’ কলকাতা পুরসভার এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে কমিটির মিটিং হচ্ছে না। আগে যত বার মিটিং হয়েছে এই বিষয়টি কেউ তোলেননি। তবে দেশের সব বড় মন্দিরে অডিট হয়। এখানেও হওয়া উচিত।’ যদিও এখন যে সব প্রণামী আসে, তা আলাদা ভল্টে রাখা হচ্ছে।