Burdwan News,গুলতিতে ছোড়া হচ্ছে সিড বল, লক্ষ্যে জঙ্গল – wildlife researcher ganesh chowdhury planting trees with seed ball on bhagirathi island


অভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, কাটোয়া
নজরদারির অভাবে ভাগীরথীর বুকে জেগে ওঠা দ্বীপগুলো থেকে গাছ কেটে বিক্রি করে দিচ্ছে অসাধু কিছু মানুষ। এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়ছে দ্বীপগুলো। ধ্বংস হচ্ছে ভাগীরথীর এই চরগুলোর বাস্তুতন্ত্র। এবার এই চরগুলোকে রক্ষা করতে বিশেষ উদ্যোগ নিল প্রশাসন। নয়াচরের বাসিন্দা, বন্যপ্রাণ গবেষক গণেশ চৌধুরীর সাহায্য নিয়ে গজিয়ে ওঠা দ্বীপগুলোর চারদিকে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সিড বল। জল-মাটি-হাওয়ার সংস্পর্শে এসে ওই বলগুলো থেকেই বার হবে গাছের চারা। গাছ যত বড় হবে ততই সবুজ-শ্যামল হয়ে উঠবে চরগুলো। এই কাজের অন্যতম উদ্যোক্তা নদিয়ার কালীগঞ্জ ব্লকের বিডিও অঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা চাই দ্বীপগুলোর স্বাভাবিক বাস্তুতন্ত্র যাতে কোনও ভাবে নষ্ট না হয়। কিছু মানুষ এই দ্বীপগুলো থেকে গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এতে গাছের সংখ্যা কমছে। আমরা তাই এই পন্থায় দ্বীপগুলোয় প্রচুর পরিমাণে বৃক্ষরোপণ করতে চাইছি।’সময়ের সঙ্গে ভাগীরথীতে তৈরি হয়েছে একাধিক চর বা দ্বীপ। ভৌগোলিক ভাবে এই দ্বীপগুলো নদিয়া জেলার অংশ। তবে সব ক’টি দ্বীপই কাটোয়া সংলগ্ন। সাধারণ ভাবে মূল ভূখণ্ড থেকে দ্বীপগুলোয় যাতায়াত কঠিন হলেও, মানুষ ঠিকই পৌঁছে যায়। বলার বা বাধা দেওয়ার কেউ না থাকায় অর্থকরী দিক থেকে গুরুত্ব রয়েছে এমন গাছ বেছে বেছে কেটে ফেলা হচ্ছে। এবার এই দ্বীপগুলোতেই ছড়ানো হচ্ছে সিড বল।

এই সিড বল আসলে কী? এই কাজের প্রধান কারিগর গণেশ চৌধুরী বলেন, ‘মাটির ছোট ছোট বল তৈরি করে তার মধ্যে ভরে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন গাছের বীজ। বিশেষ ভাবে তৈরি করা হয়েছে কাচের গুলির মতো ওই বলের মাটি। গাছের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির উপকরণ রয়েছে ওই মাটিতে। এই বীজ-বল গুলতি দিয়ে ছুড়ে দেওয়া হচ্ছে দ্বীপের ভিতরে। যেখানে বলগুলো পড়বে সেখানেই গাছ জন্মাবে।’

সব মিলিয়ে তৈরি করা হয়েছে প্রায় দেড় লাখ সিড বল। তাতে রয়েছে হিজল, বাবলার মতো গাছের বীজ। গণেশ বলেন, ‘গঙ্গা তীরবর্তী এলাকায় যে সব গাছ ভালো হয় সেই বীজই ছড়ানো হচ্ছে।’ বীজগুলো তৈরি করতে সময় লেগেছে প্রায় ২ মাস। এতে যুক্ত করা হয়েছিল নয়াচরের স্কুলপড়ুয়া শিশুদের। গরমের ছুটিতে এই কাজ করেছে তারা। বিডিও বলেন, ‘আমরা এমন বীজ ছড়াচ্ছি যে গাছগুলোর তেমন আর্থিক গুরুত্ব নেই। ফলে কেটে ফেললেও লাভ হবে না কিছু। ফলে কেউ গাছ কাটায় উৎসাহ পাবে না। আর গাছ কাটা না পড়লে পরিবেশও ঠিক থাকবে।’ বিডিও জানান, দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫০ হাজার তালগাছ বসানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *