Raiganj Assembly Constituency Bye Election,লোকসভার ফলে রায়গঞ্জ বিধানসভায় এগিয়ে বিজেপি, কৃষ্ণেই আস্থা রেখে যুদ্ধ জয়ের লক্ষ্য তৃণমূলের – raiganj assembly constituency bye election main fight between krishna kalyani manas kumar ghosh and mohit sengupta


লোকসভা নির্বাচন পর্ব মেটার পর এবার বিধানসভা উপনির্বাচনের দামামা বেজে গিয়েছে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ বিধানসভা এলাকায়। আগামী ১০ জুলাই হতে চলেছে ভোটগ্রহণ এবং ১৩ জুলাই হবে গণনা। উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে প্রার্থী করা হয়েছে কৃষ্ণ কল্যাণীকে। বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন মানসকুমার ঘোষ। পাশাপাশি কংগ্রেসের তরফে প্রার্থী করা হয়েছে মোহিত সেনগুপ্তকে। আর কংগ্রেস প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছে বামেরাও। ইতিমধ্যেই সমস্ত প্রার্থীরা নিজেদের মনোনয়ন পত্র জমা দিয়ে এবং প্রচারে নেমে পড়েছেন।সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে রায়গঞ্জ আসনে জয়ী হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী কার্তিকচন্দ্র পাল। তার মোট প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা ৫ লাখ ৬০ হাজার ৮৯৭। উলটো দিকে তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণীর প্রাপ্ত মোট ভোটের সংখ্যা ৪ লাখ ৯২ হাজার ৭০০। অন্যদিকে কংগ্রেস প্রার্থী আলি ইমরান রামজের (ভিক্টর) প্রাপ্ত ভোট ছিল ২ লাখ ৬৩ হাজার ২৭৩। অর্থাৎ রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণীর থেকে ৬৮ হাজার ১৯৭ ভোট বেশি পেয়েছেন বিজেপি প্রার্থী। লোকসভা ভোটের বিধানসভা ভিত্তিক ফলাফলের ভিত্তিতেও রায়গঞ্জে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। পরিসংখ্যান বলছে রায়গঞ্জ বিধানসভা এলাকায় কার্তিকচন্দ্র পাল পেয়েছেন ৯৩ হাজার ৪০২ ভোট। আর তৃণমূলের কৃষ্ণ কল্যাণীর প্রাপ্ত ভোট ৪৬ হাজার ৬৬৩। অপরদিকে ভিক্টরের প্রাপ্ত ভোট ছিল ১৪ হাজার ৪৭৭। সেক্ষেত্রে লোকসভা নির্বাচনে রায়গঞ্জ বিধানসভা এলাকায় তৃণমূলের থেকে ৪৬ হাজার ৭৩৯ ভোটে এগিয়ে রয়েছে গেরুয়া শিবির।

নয়া উদ্যমে ফের ময়দানে কৃষ্ণ কল্যাণী

আর সেই লোকসভা ভোটের রেশ কাটতে না কাটতেই দোরগোড়া বিধানসভা উপনির্বাচন। তৃণমূল ফের একবার কৃষ্ণ কল্যাণীর উপরেই ভরসা রেখেছে। আর প্রার্থী হয়ে আবারও নতুন উদ্যমে নির্বাচনী লড়াইতে নেমে পড়েছেন কৃষ্ণ। ইতিমধ্যেই দলীয় নেতৃত্ব এবং কর্মীদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠকও করেছেন। কৃষ্ণ কল্যাণীর দাবি, প্রতিটি নির্বাচনের আলাদা প্রেক্ষিত থাকে। লোকসভা নির্বাচন যেমন প্রধানমন্ত্রী কে হবেন সেই নিরিখে মানুষ ভোট দেয়, তেমনই বিধানসভা উপনির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে সাধারণ মানুষ ভোট দেবে। কৃষ্ণ কল্যাণীর আরও দাবি, বিগত দিনে ওই বিধানসভা এলাকায় তিনি যেভাবে উন্নয়নের কাজ করেছেন এবং মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যেভাবে উন্নয়ন করেছেন, তাতে উপনির্বাচনে মানুষ তাঁকেই জয়ী করবে। রায়গঞ্জে কেউ তাঁর প্রতিপক্ষ নেই বলেই মনে করেন কৃষ্ণ কল্যাণী। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, গত বিধানসভা নির্বাচনে তিনি বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন। পরে তিনি যোগ দেন তৃণমূলে।

জয় নিয়ে আশাবাদী বিজেপি প্রার্থী

এদিকে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন মানসকুমার ঘোষ। ২০২৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দেন মানস। পরবর্তীতে তাঁকে বিজেপির জেলা সহসভাপতি করা হয়। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোট এবং ২০২৪ এর লোকসভা ভোটে তিনি দলের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। রাজনৈতিক জীবনের প্রথমে অবশ্য তিনি কংগ্রেসে ছিলেন। প্রথম জীবনে যুব কংগ্রেসের বিভিন্ন সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করার পর ২০১৩ সালে কংগ্রেসের টিকিটে জিতে রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতিতে কৃষি কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন। ২০১৮ সালে কংগ্রেসে টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হয়েই ভোটে লড়েন এবং জয়ী হন। তারপর তৃণমূলে যোগ দিয়ে রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি হন। পেশায় শিক্ষক মানসকুমার ঘোষ এলাকায় সুবক্তা এবং দক্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বলেই পরিচিত। তিনি জানান, রায়গঞ্জের সাধারণ মানুষ লোকসভা নির্বাচনে কৃষ্ণ কল্যাণীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করেছে। রায়গঞ্জ বিধানসভা এলাকার মানুষও যোগ্য জবাব দিয়েছে। এতেই বোঝা যাচ্ছে সাধারণ মানুষের আস্থা একমাত্র বিজেপির উপরেই রয়েছে। তাই এই উপনির্বাচনেও রায়গঞ্জবাসী বিজেপিকেই জয়ী করাবে বলে আশাবাদী তিনি।

মানুষের আস্থা বাম-কংগ্রেসেই বলে দাবি মোহিতের

অন্যদিকে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে এবার লড়াইতে রয়েছেন জেলা কংগ্রেসের সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত। অনেকের কাছে তিনি ‘ঘরের ছেলে’। ২০১১-২০১৬ এবং ২০১৬-২০২১, দু’বারের বিধায়ক এবং দীর্ঘদিন কাউন্সিলর ছিলেন তিনি। তাঁর আবার দাবি, এই উপনির্বাচনে রায়গঞ্জের সাধারণ মানুষ বিজেপি ও তৃণমূলকে হারিয়ে বাম-কংগ্রেসের ওপরই আস্থা রাখবে।

ভোটের ইস্যু

রাজনৈতিকমহলের অনেকেই মনে করছেন, উপনির্বাচনে রায়গঞ্জের ভোটের প্রধান ইস্যুই হল রায়গঞ্জ-বারসই সড়ক যোগাযোগ, যানজট সমস্যা, বাড়ি বাড়ি পানীয় জল, শহরের নিকাশি ব্যবস্থার মাস্টারপ্ল্যান, রাস্তাঘাট এবং গ্রামাঞ্চলে একাধিক সেতুনির্মাণ। সেক্ষত্রে আগামীদিনে বিধানসভায় তাদের প্রতিনিধি হিসেবে রায়গঞ্জবাসী কাকে বেছে নেয়, এখন সেটাই দেখার।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *