নয়া উদ্যমে ফের ময়দানে কৃষ্ণ কল্যাণী
আর সেই লোকসভা ভোটের রেশ কাটতে না কাটতেই দোরগোড়া বিধানসভা উপনির্বাচন। তৃণমূল ফের একবার কৃষ্ণ কল্যাণীর উপরেই ভরসা রেখেছে। আর প্রার্থী হয়ে আবারও নতুন উদ্যমে নির্বাচনী লড়াইতে নেমে পড়েছেন কৃষ্ণ। ইতিমধ্যেই দলীয় নেতৃত্ব এবং কর্মীদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠকও করেছেন। কৃষ্ণ কল্যাণীর দাবি, প্রতিটি নির্বাচনের আলাদা প্রেক্ষিত থাকে। লোকসভা নির্বাচন যেমন প্রধানমন্ত্রী কে হবেন সেই নিরিখে মানুষ ভোট দেয়, তেমনই বিধানসভা উপনির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে সাধারণ মানুষ ভোট দেবে। কৃষ্ণ কল্যাণীর আরও দাবি, বিগত দিনে ওই বিধানসভা এলাকায় তিনি যেভাবে উন্নয়নের কাজ করেছেন এবং মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যেভাবে উন্নয়ন করেছেন, তাতে উপনির্বাচনে মানুষ তাঁকেই জয়ী করবে। রায়গঞ্জে কেউ তাঁর প্রতিপক্ষ নেই বলেই মনে করেন কৃষ্ণ কল্যাণী। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, গত বিধানসভা নির্বাচনে তিনি বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন। পরে তিনি যোগ দেন তৃণমূলে।
জয় নিয়ে আশাবাদী বিজেপি প্রার্থী
এদিকে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন মানসকুমার ঘোষ। ২০২৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দেন মানস। পরবর্তীতে তাঁকে বিজেপির জেলা সহসভাপতি করা হয়। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোট এবং ২০২৪ এর লোকসভা ভোটে তিনি দলের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। রাজনৈতিক জীবনের প্রথমে অবশ্য তিনি কংগ্রেসে ছিলেন। প্রথম জীবনে যুব কংগ্রেসের বিভিন্ন সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করার পর ২০১৩ সালে কংগ্রেসের টিকিটে জিতে রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতিতে কৃষি কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন। ২০১৮ সালে কংগ্রেসে টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হয়েই ভোটে লড়েন এবং জয়ী হন। তারপর তৃণমূলে যোগ দিয়ে রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি হন। পেশায় শিক্ষক মানসকুমার ঘোষ এলাকায় সুবক্তা এবং দক্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বলেই পরিচিত। তিনি জানান, রায়গঞ্জের সাধারণ মানুষ লোকসভা নির্বাচনে কৃষ্ণ কল্যাণীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করেছে। রায়গঞ্জ বিধানসভা এলাকার মানুষও যোগ্য জবাব দিয়েছে। এতেই বোঝা যাচ্ছে সাধারণ মানুষের আস্থা একমাত্র বিজেপির উপরেই রয়েছে। তাই এই উপনির্বাচনেও রায়গঞ্জবাসী বিজেপিকেই জয়ী করাবে বলে আশাবাদী তিনি।
মানুষের আস্থা বাম-কংগ্রেসেই বলে দাবি মোহিতের
অন্যদিকে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে এবার লড়াইতে রয়েছেন জেলা কংগ্রেসের সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত। অনেকের কাছে তিনি ‘ঘরের ছেলে’। ২০১১-২০১৬ এবং ২০১৬-২০২১, দু’বারের বিধায়ক এবং দীর্ঘদিন কাউন্সিলর ছিলেন তিনি। তাঁর আবার দাবি, এই উপনির্বাচনে রায়গঞ্জের সাধারণ মানুষ বিজেপি ও তৃণমূলকে হারিয়ে বাম-কংগ্রেসের ওপরই আস্থা রাখবে।
ভোটের ইস্যু
রাজনৈতিকমহলের অনেকেই মনে করছেন, উপনির্বাচনে রায়গঞ্জের ভোটের প্রধান ইস্যুই হল রায়গঞ্জ-বারসই সড়ক যোগাযোগ, যানজট সমস্যা, বাড়ি বাড়ি পানীয় জল, শহরের নিকাশি ব্যবস্থার মাস্টারপ্ল্যান, রাস্তাঘাট এবং গ্রামাঞ্চলে একাধিক সেতুনির্মাণ। সেক্ষত্রে আগামীদিনে বিধানসভায় তাদের প্রতিনিধি হিসেবে রায়গঞ্জবাসী কাকে বেছে নেয়, এখন সেটাই দেখার।
