ভাঙড়ের সিপিএম নেতা তুষার ঘোষের বক্তব্য, ‘চৌবাগা থেকে বাসন্তী রাজ্য সড়কের উত্তরপাড় বরাবর কুলটি পর্যন্ত পাশাপাশি তিনটি খাল রয়েছে। কলকাতার নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক রাখতে এই খাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ স্থানীয়রা বলছেন, সেই খালগুলির দু’পাড় জবরদখল করে বামনঘাটা, কাঁটাতলা, কড়াইডাঙা, ভোজেরহাট, পাগলাহাট, বড়ালি, নলমুড়ি, ঘটকপুকুর, চণ্ডীপুরে একাধিক অবৈধ দোকান, বাড়িঘর তৈরি হচ্ছে। শাসক দলের স্থানীয় নেতা ও প্রশাসনের একাংশের সঙ্গে যোগসাজশেই তা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
ভাঙড় ২ ব্লকের শানপুকুর পঞ্চায়েতের চিনেপুকুরে বাগজোলা খালপাড়ে একশো পরিবার সরকারি জমি জবরদখল করে পাকা বাড়ি বানিয়েছেন বলে অভিযোগ। চিনাপুকুর থেকে খাল বরাবর নিউ টাউনের দিকে গেলে কাটজালা, সাতুলিয়া, গাবতলা সর্বত্র একই ছবি ধরা পড়ছে। ভাঙড়ের বাসিন্দা মালেক মোল্লার দাবি, ‘বাম আমল থেকেই এই জবরদখল শুরু হয়েছে। তৃণমূলের জমানায় তা আরও গতি পেয়েছে।’
স্থানীয়দের অভিযোগ, সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা পোলেরহাট থানা এলাকার গাবতলা, হাতিশালায়। সেখানে খালের উপর হিউম পাইপ ফেলে মাটি দিয়ে খাল বুজিয়ে রাস্তা বানিয়েছে জমির কারবারিরা। তার উপর দিব্যি কিছু হোটেল ও দোকান হয়েছে। হোটেলের সমস্ত আনাজ ও খাবারের বর্জ্য খালের জলে প্রতিদিন ফেলে ফেলে খাল একপ্রকার মজে গিয়েছে।
আইএসএফের জেলা পরিষদ রাইনূর হকের অভিযোগ, ‘ভাঙড়ে যে ভাবে খাল দখল হচ্ছে তাতে ভবিষ্যতে খাল সংস্কারই করা যাবে না। ভাঙড়ের খাল সংস্কার করা না গেলে ভবিষ্যতে কলকাতার নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।’ ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি বলেন, ‘শাসক দলের অনেক নেতা সরকারি জমি নিজের নামে রেকর্ড করিয়ে নিচ্ছেন। জলাভূমি ভরাট করে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে।’ নওশাদের অভিযোগ উড়িয়ে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক শওকত মোল্লা বলেন, ‘আমরা বিরোধীদের কথায় গুরুত্ব দিতে নারাজ। তবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ কার্যকর করতে আমার বদ্ধপরিকর।’