পেশায় কুলায় পদিমা নিম্ন বুনিয়াদী প্রাথমিক বিদ্যালয়-এর সহকারী শিক্ষক তিনি। ২৫ বছর ধরে গাছ লাগাচ্ছেন নিয়মিত। তাঁর উদ্দেশ্য ৫০০০ বট বৃক্ষ লাগানো। ইতিমধ্যেই ১০৭৬ টি বটগাছ লাগিয়েছেন। ভারতবর্ষর বাদেও ইতিমধ্যেও নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ প্রভৃতি জায়গায় তিনি বটগাছের চারা লাগিয়েছেন। একসময় তাঁর সহকর্মী থেকে অন্যান্যরা তাঁকে ‘পাগল মাস্টার’ বলেই জানতেন।
হ্যাঁ তিনি নিজেই স্বীকার করে নিয়েছেন পাগল বলে কিন্তু তিনি হলেন ‘গাছ পাগল’। একটি একটি করে ১০৭৬টি গাছ ইতিমধ্যে লাগিয়েছেন। পশ্চিমবাংলায় ইতিমধ্যে আঠরটি জেলাতেও বিভিন্ন জায়গায় তিনি বটবৃক্ষ স্থাপন করেছেন। তাঁর কথায়, প্রতিটি দিন হোক পরিবেশ দিবস। এই কাজের সুবাদেই তিনি প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় কির্ণাহারে গিয়েও বটবৃক্ষ রোপণ করে এসেছেন। মাতঙ্গিনী হাজরার হোগলা গ্রাম, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি দেউলটিতেও তার বটবৃক্ষের ছায়া দানের স্মৃতি রেখেছেন।
এখানেই শেষ নয়, বাংলাদেশের জয়পুর নেপালের পানিটেক, সেই সঙ্গে ভুটানের জায়গাতেও তার এই কাজের নিদর্শন রেখেছেন। শ্যামল জানা পরবর্তী লক্ষ্য শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার। মঙ্গলবার কাঁথি রেল স্টেশনে ১০৭৬ টি বটগাছ লাগানোর কর্মসূচি পালন করলেন। ইতিমধ্যেই বহু মানুষ তার ফ্যান হয়ে উঠেছেন। শ্যামল জানান, বহু মানুষ তাঁকে বিভিন্নভাবে সামাজিক কাজেও ডেকে পাঠান।
প্রথম থেকেই তাঁর লক্ষ্য মৃত্যুর পরেও কিছু স্মৃতি রেখে দেওয়া। তব বটগাছ কেন? তাঁর বক্তব্য, এই গাছ সাধারণত জ্বালানির কাজে কিংবা আসবাবপত্র কাজে ব্যবহৃত হয় না। বরং উল্টে এই গাছটিকে অনেকে সংরক্ষণ করে রাখেন এবং এই গাছ দীর্ঘমেয়াদী এবং ছায়া দান করে থাকে। শ্যামল জানার কথায়, ‘নির্দিষ্ট কোনওদিন বৃক্ষরোপণের দিন না হয়ে প্রতিটা দিনই যেন বৃক্ষরোপণের দিন হয়ে ওঠে। তিনি বলেন, ‘একদিন এই পৃথিবী থেকে ডাইনোসরের মতো প্রাণীর বিলুপ্ত হয়েছে। একদিন এই গাছ না থাকলে মানুষও ধ্বংস হয়ে যাবে। জলসঙ্কট, পরিবেশ দূষণ রুখতে আমাদের গাছ লাগিয়ে যেতেই হবে।’