Tmc Leader Debasish Pramanik,এক দশকেই ফুলে ফেঁপে সাম্রাজ্য বিস্তার, সাত দিনের পুলিশ হেফাজত দেবাশিসের – jalpaiguri court orders 7 day police custody phulbari trinamool leader debasish pramanik


এই সময়, শিলিগুড়ি: পুলিশ হেফাজত হলো জমি কেলেঙ্কারিতে ধৃত ফুলবাড়ির তৃণমূল নেতা দেবাশিস প্রামাণিকের। বুধবার তৃণমূলের ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি সাংগঠনিক ব্লকের সভাপতি দেবাশিসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিমল রায় ও মহম্মদ কালাম গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃত তিনজনকে এ দিন জলপাইগুড়ি আদালতে তোলা হলে তাদের ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।এ দিন শিলিগুড়ি নিয়ে যাওয়ার পথে দেবাশিস বলেন, ‘সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন।’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জমি কেলেঙ্কারিতে ধৃত ফুলবাড়ির তৃণমূল নেতা দেবাশিস প্রামাণিক প্রথম জীবনে ছিলেন কেরোসিন তেলের ডিলার। ফুলবাড়ি মোড়ে একটি চার ফুট বাই সাত ফুটের ছোট্ট দোকানে তাঁর ব্যবসা ছিল। কলেজ জীবনে ছাত্র পরিষদের নেতা ছিলেন।

সেই সূত্রে এলাকায় পরিচিতি গড়ে ওঠে। গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যও হন। কেরোসিন তেলের ডিলারশিপের পাশাপাশি পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির ছোটখাটো ঠিকাদারিতে নামেন।

কী ভাবে ক্ষমতাবান হলেন দেবাশিস?
ফুলবাড়ির তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের সূত্রেই জানা গিয়েছে, দল ক্ষমতায় আসার পরেই দেবাশিস জমির ব্যবসায় নামেন। প্রথমে শিলিগুড়ি শহরের ব্যবসায়ীদের কাছে গ্রামের লোকেদের ধমকে চমকে জমি বিক্রির ব্যবস্থা করতেন। পরে এই ব্যবসাই ফুলেফেঁপে ওঠে। এখন তাঁর সাম্রাজ্য বিস্তৃত হয়েছে ফুলবাড়ি ছাড়াও ডাবগ্রাম ও পোড়াঝাড়ে। ঘালুপাড়ায় একটি জমি কেনাবেচা নিয়ে গোলমালের ঘটনায় তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন।

কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে আরও নানা অভিযোগ রয়েছে। কাওয়াখালিতে উপনগরী তৈরির সময়ে রাজ্য সরকার পোড়াঝাড় এলাকার বাসিন্দাদের ক্ষতিপূরণ দেয়। ক্ষতিপূরণ নিয়ে ওই এলাকা বাসিন্দারা কাওয়াখালির পিছনে নিউ জলপাইগুড়ি-আলুয়াবাড়ি ট্রেন রুটের পাশে মহানন্দার বিস্তৃত চর দখল শুরু করেন। সেখানেও দেবাশিস প্রামাণিক এবং তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গোরা জড়িত বলে অভিযোগ।

ফুলবাড়িতে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট চালু হওয়ার পরে দেবাশিস প্রামাণিক ওই এলাকার অবিসংবাদিত নেতা হয়ে যান। কবে, কোনও ট্রাক সীমান্ত পার হবে, কোথায় ট্রাক পার্কিং করা হবে, সবই ঠিক করেন দেবাশিসের অনুগতেরা। ট্রাক পিছু টাকা আদায়ের এক বিশাল ব্যবসা গড়ে উঠেছে সেখানে। তবে ক্ষমতাধর হয়ে ওঠার পাশাপাশি দলের মধ্যেই তাঁর বহু শত্রু তৈরি হয়ে যায়। এর অন্যতম কারণ, রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্খা।

সূত্রের খবর, ২০২৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনেও তিনি টিকিটের প্রত্যাশী ছিলেন। দ্বিতীয় কারণ, ফুলবাড়ির পাশে জটিয়াকালীতে সাহারা গ্রুপ প্রায় দু’শো একরের একটি প্লট ভূমি সংস্কার দপ্তর থেকে আদায় করে উপনগরী তৈরির জন্য। ওই জমির মধ্যে তিনটি গ্রাম রয়েছে। তবে সাহারার গণেশ উল্টেছে। কিন্তু তাতেও ওই এলাকার বাসিন্দাদের হাঁফ ছাড়ার উপায় নেই। প্রতি নির্বাচনের আগে দেবাশিস প্রামাণিকের লোকেরা জটিয়কালীতে গিয়ে বাসিন্দাদের সাহারার নাম করে এলাকা ছাড়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ।

প্রতারণা করে জমি দখল, ধৃত তৃণমূলের ব্লক সভাপতি

ফলে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়িতে জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়ার পরে সিআইডি যে তাঁকেই প্রথম বলির পাঁঠা করল তাতে অবাক নন এলাকার তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা। তবে এখন কেউই এ নিয়ে মুখ খুলতে চান না। সকলেই আরও কয়েকটা দিন অপেক্ষা করে কোথাকার জল কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় সেটা যাচাই করে নিতে চান।

ওই এলাকার তৃণমূল নেতা সুকান্ত কর বলেন, ‘দেবাশিস প্রামাণিকের বিরুদ্ধে পুলিশ কিছু অভিযোগ এনেছে। পুলিশই সেই অভিযোগ প্রমাণ করবে। এটা নিয়ে দল যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই আমরা মেনে নেব।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *